বিষাক্ত সাপ নাকি জলের উপরিভাগ দিয়ে সাঁতার কেটে এগিয়ে যায়। আর বিষহীন সাপ জলের নিচ দিয়ে যায়। এমনই এক পোস্ট সোশ্যাল মিডিয়ায় কিছুদিন আগেই ভাইরাল হয়েছিল। বিষধর আর বিষহীন এই দুই ধরণের সাপ চেনার জন্য সাঁতার কাটার কৌশলকেই চিহ্নিত করা হয়েছিল সেই পোস্টে। ঘটনাচক্রে সেই পোস্ট ভুল এবং সঠিক দুই ধরণের তথ্যই দেওয়া হয়েছিল।
কিন্তু সাপের সাঁতার কাটার কৌশল দেখে কী সত্যি চিহ্নিত করে ফেলা যায় বিষধর আর বিষহীন! সেই ঘটনারই ফ্যাক্টচেক করে দেখে রয়টার্স।
রয়টার্সের পক্ষ থেকেই বেশ কিছু সর্পবিদ, সরীসৃপবিদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। জর্জিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জন মায়েরজ জানান, সব সাপই সাঁতার কাটতে পারে। এর মধ্যে অধিকাংশই জলের তলা দিয়ে অথবা আংশিক ডুবে থেকে। তিনি জানাচ্ছিলেন, "শিকারীর হাত থেকে বাঁচার জন্য অথবা শিকার করার সময় অনেক সাপই দ্রুত গতিতে সাঁতার কাটে। গোখরোর মত স্থলচর সাপ আবার জলচর সাপের মতোই মাছ, ব্যাঙ ধরে খায়।"
এই সেই ফেসবুক পোস্ট
ফ্লোরিডার সেন্ট পিটার্সবার্গের প্রাণিবিদ্যা বিষয়ে গবেষণারত ডেভিড স্টিন নিজের বই 'সিক্রেট অফ স্নেকস'-এ জানিয়েছেন, সাঁতার কাটার ধরণে সাপকে বিষাক্ত কিংবা বিষহীন এই বিষয়ে শনাক্ত করা যথেষ্ট ভ্রান্তিমূলক। এই প্রসঙ্গে তিনি রাটেলস্নেক এবং গোখরোর কথা উল্লেখ করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, রাটেলস্নেক এবং গোখরো দুই ধরনের সাপই ভীষন বিষাক্ত। তবে শিকার ধরার সময় রাটেলস্নেক যেমন জলের উপরের ভাগ দিয়ে সাঁতার কেটে শরীর শুকনো রাখার চেষ্টা করে তেমন আবার গোখরো জলের তলা দিয়ে যায়।
কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ হ্যারি গ্রিন রয়টার্সকে জানিয়েছেন, ৩৫০০ প্রজাতির মধ্যে আলাদা করে এমন বৈশিষ্ট্য ধরে বিষাক্ত কিংবা বিষহীন শনাক্ত করা সম্ভব নয়। তিনি আরো ব্যাখ্যা করে জানান, জলচর বিষহীন সাপ সাধারণত, মাথা-ঘাড় জলের উপরে রেখে সাঁতার কেটে চলে। আর জলের নীচে শরীর কৌণিক ভাবে থাকে। যদিও সমস্ত ধরনের সাপের ক্ষেত্রে এটা প্রযোজ্য নয়।
এর অর্থ, সাঁতার কাটার ভিত্তিতে সাপের প্রকারভেদ করা সম্ভব হলেও, ব্যতিক্রমী দৃষ্টান্ত রয়েছে অনেক।