একজন মা তার সন্তানের সুখ ও সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য কত কিছুই করে থাকেন। একই সঙ্গে জীবনের তাগিদ ও সংসার চালানোর দায়িত্ব মেটাতে আজকাল মহিলারাও পুরুষদের সঙ্গে সমান তালে তাল মিলিয়ে চলছেন। জীবন ও জীবিকার সন্ধানে ঘরের বাইরে পা রাখতে হচ্ছে মহিলাদেরও।
সম্প্রতি ভাইরাল হওয়া একটি ছবি হৃদয় ছুঁয়ে গিয়েছে নেটিজেনদের। অ্যাপ ক্যাব চালাচ্ছেন মা, পাশের সিটে ঘুমাচ্ছে মেয়ে। আর এই ছবি নিমেষেই ভাইরাল হয়ে গিয়েছে নেটদুনিয়ায়। পেশাগত দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি মহিলা উবার ক্যাব চালককে মায়ের দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেছে। এই ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেন এক যাত্রী। মুহূর্তেই তা নেটপাড়ার মন ছুঁয়ে যায়। মেয়েকে নিয়েই জীবন যুদ্ধে নেমে পড়েছেন 'মা'। সেই লড়াইয়ের কাহিনী এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড়ের বেগে ভাইরাল হয়েছে।
এই ছবিটি সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম লিঙ্কডইন-এ ক্লাউডসেকের সিইও রাহুল শশী শেয়ার করেছেন। তিনি তার পোস্টে উল্লেখ করেছেন, ‘তিনি যখন ক্যাব বুক করেছিলেন তখন তিনি জানতেন না যে একজন ‘মা’ ড্রাইভার হিসাবে তাকে নিতে আসবেন'।
রাহুল তার পোস্টে আরও বলেছেন যে, ‘তিনি বেঙ্গালুরুতে একটি উবার ক্যাব বুক করেছিলেন, কিন্তু কে তাকে নিতে আসছে তার কোনও ধারণা ছিল না। রাহুল বলেছেন যে, ক্যাবটি এসে যখন সামনে থামল, তখন সেখানে একজন মহিলা চালকের আসনে বসেছিলেন, পাশের সিটে একটি সুন্দর বাচ্চা মেয়েকে ঘুমোতে দেখে অবাক হয়েছিলেন'।
আরও পড়ুন : < প্রত্যন্ত অঞ্চলে ই-রিকশা চালিয়েই আদায় করেছেন সকলের ভালবাসা, সীমার কাহিনীতে গর্ব হবে >
রাহুল সেই মহিলা ক্যাব চালকের কাছে জানতে চান মেয়েটি কে? তখন ক্যাব চালক তাকে জানান মেয়েটি তার নিজের সন্তান। তিনি আরও জানান, 'তাঁর নাম নন্দিনী এবং তিনি নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে উপার্জন করতে চান। করোনার আগে একটি খাবারের ব্যবসা শুরু করেছিলেন তিনি। কিন্তু অতিমারী সব কিছুকেই কেড়ে নিয়েছে। জমানো পুজিও প্রায় শেষ। সম্বল বলতে এই গাড়ি। তাই তিনি উবারের সঙ্গে যুক্ত করেন কিছু বাড়তি উপার্জনের আশায়'।
কথোপকথনে নন্দিনী জানান, 'এই কাজে তিনি ১২ ঘণ্টা সময় দেন। নন্দিনীর মতে, কোনও কাজই ছোট বা বড় নয়। নন্দিনী তার স্বপ্নের জাহাজ আবারও ফিরে পেতে চান। যার জন্য তিনি কঠোর পরিশ্রম করতেও রাজি'। নন্দিনীর কথায় এতটাই ক্যাব যাত্রী রাহুল এতটাই অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন যে, তিনি তার সঙ্গে একটি ছবি তোলার অনুরোধ করেন।
পরে ঘটনার বিবরণ সহ সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট করেন তিনি। মুহূর্তেই তা ভাইরাল হয়ে যায়। উবার ইণ্ডিয়ার সিইও প্রভজিত সিং নিজেও ওই মহিলাকে সাহায্য করার জন্য যোগাযোগ করেন এবং মহিলার পরিশ্রম আর জেদের ভূয়সী প্রশংসা করেন।