এক সময় দুবেলা খাবারও পেতেন না, রাস্তায় খবরের কাগজ বিক্রি করতেন তিনি। এখন কোটি টাকার মালিক এই নাপিতের রয়েছে ৪০০-এর বেশি গাড়ি। এই কাহিনীতে চমকে উঠেছেন নেটপাড়ার মানুষজন। কীভাবে স্রেফ নিজের চেষ্টায় অসম্ভবকে সম্ভব করে এক সামান্য নাপিত থেকে হয়ে উঠলেন কোটিপতি?
কোটিপতি নাপিত রমেশ বাবুর শৈশব কেটেছে চরম দারিদ্রের মধ্যে। বাবার মৃত্যুর পর, মাকে লোকের বাড়িতে কাজ করতে হয়েছিল সংসার চালাতে। সেই সঙ্গে নিজেও সংবাদপত্র বিক্রি করতে রমেশ বাবু।
বেঙ্গালুরুর বাসিন্দা রমেশ বাবু ভারতের সবচেয়ে ধনী নাপিত। তার ৪০০টি গাড়ি রয়েছে যার মূল্য কয়েকশ কোটি টাকা। কিন্তু, তিনি এখনও চুল কাটা বন্ধ করেননি এবং এখনও তার সেলুনে তিনি কাজ করেন। রমেশবাবু হয়তো আজ বিলাসবহুল জীবনযাপন করেন, কিন্তু তাঁর শৈশব কেটেছে চরম দারিদ্রের মধ্যে। বেঙ্গালুরুতে একটি দরিদ্র পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন রমেশ বাবু। শৈশবেই বাবাকে হারিয়েছিলেন তিনি । মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে । তার বাবা একটি সেলুন চালাতেন।
রমেশবাবুর মা সংসার চালাতে লোকের বাড়ি কাজও করতেন একটা সময়। মাত্র ১৩ বছর বয়সে, রমেশ বাবু রাস্তায় খবরের কাগজ বিক্রি শুরু করেন। পড়াশোনাও চালিয়ে যান। ১৮ বছর বয়সে, রমেশ বাবু সংসার চালাতে বাবার সেলুনটি ফের চালু করেন।
রমেশবাবুর সেলুন ভালোই চলছিল। কিছু টাকা জমিয়ে ১৯৯৩ সালে তিনি কিস্তিতে একটি মারুতি ওমনি গাড়ি কিনেছিলেন। কিন্তু কিছুদিন পর আর্থিক অনটনের কারণে কিস্তি পরিশোধ করতে পারেননি। রমেশের মা যে বাড়িতে কাজ করতেন সেই বাড়ির মালিক রমেশকে ভাড়ায় গাড়ি চালানোর পরামর্শ দেন। এই উপদেশ রমেশের জন্য আশীর্বাদ হয়ে ওঠে। তিনি যখন ভাড়ায় গাড়ি চালানো শুরু করেন, তখন তিনি বুঝতে পারেন যে বেঙ্গালুরুতে ভাড়া গাড়ির ব্যবসায় অপার সম্ভাবনা রয়েছে।
কিছুদিন নিজে গাড়ি চালানোর পর রমেশবাবু বড় কিছু করার কথা ভাবলেন। তিনি সম্পূর্ণভাবে গাড়ির ব্যবসায় প্রবেশ করতে চেয়েছিলেন। তিনি জানতেন যে বেঙ্গালুরুতে এই ব্যবসার অপার সম্ভাবনা রয়েছে, তবে তাকে আলাদা কিছু করতে হবে। তিনি ধীরে ধীরে তার গাড়ির সংখ্যা বাড়াতে শুরু করেন। ব্যবসা ভালো করতে শুরু করলে বিলাসবহুল গাড়ি কেনা শুরু করেন। এখন তার ৪০০টি গাড়ি রয়েছে যার মধ্যে ১২০টি বিলাসবহুল গাড়ি।
আজ রমেশ বাবুর কাছে রোলস রয়েস, মার্সিডিজ বেঞ্জ, বিএমডব্লিউ, অডি, জাগুয়ারের মতো বিলাসবহুল গাড়ি রয়েছে । সেগুলি তিনি ভাড়া দেন। কোটি টাকার ব্যবসা করার পরও রমেশবাবু তার সেলুনে চুল কাটা বন্ধ করেননি।