IAS হওয়াটা সকলের কাছেই একটা স্বপ্ন। আজ এমন একজনের কাহিনী সোশ্যাল মিডিয়ায় সামনে এসেছে যা শুনে গায়ে কাঁটা দেবে। ছেলেবেলা থেকে অদম্য ইচ্ছাশক্তি আর মনের জেদকে সম্বল করেই বড় হয়ে উঠে হিমাংশু গুপ্তার। চা বিক্রি করে চালিয়েছে পেট। তারপর তিনবার ব্যর্থ হয়েও অবশেষে লক্ষ্যে সফল। UPSC-তে পাশ করে IAS হয়ে সকলকে চমকে দিয়েছেন উত্তরপ্রদেশের হিমাংশু গুপ্ত। চরম দারিদ্র্যতাও তাঁর প্রস্তুতিকে ছাপিয়ে যেতে দেননি। বরং আইএএস অফিসার স্বপ্ন রোজ তাড়া করে বেড়াত তাঁকে।
ইউপিএসসি সিভিল সার্ভিস পরীক্ষা দেশের মধ্যে অন্যতম কঠিন একটি পরীক্ষা। শুধু দেশে বললে বোধহয় ভুল বলা হবে। বিশ্বের সবচেয়ে কঠিন পরীক্ষাগুলোর একটি UPSC। স্রেফ মনের জেদ আর অদম্য ইচ্ছাশক্তিকে কাছে লাগিয়ে এই কঠিন পরীক্ষার সফল হয়ে গোটা সমাজের কাছে দৃষ্টান্ত গড়েন আইএএস হিমাংশু গুপ্তা।
হিমাংশু গুপ্তের জন্ম উত্তরাখণ্ডে। তার বাবার ছিল একটি চায়ের স্টল। যেখানে হিমাংশুও বাবাকে সাহায্য করতেন। বাবার সামান্য আয় সংসার চালানোর জন্য যথেষ্ট ছিল না। ছোটবেলা থেকেই বাবাকে চায়ের দোকানে সাহায্য করতেন হিমাংশু। সেই সময় মনে মনে জীবনে বদল আনার প্রতিজ্ঞা করেন তিনি।
সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে হিমাংশু জানিয়েছেন, পড়াশোনার জন্য ৩৫কিলোমিটার পথ তাকে যেতে হয়। স্কুলে থেকে ফিরে আসার পর বাবার সঙ্গে চায়ের দোকানে কাজ করতেন। এই চা স্টলটি হিমাংশুর জীবনে বদল আনতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কারণ তার শৈশব কেটেছে দারিদ্রের মধ্যে এবং তার বাবা প্রথমে দিনমজুরের কাজ করতেন এবং পরে চায়ের দোকান শুরু করেন। এই সময় হিমাংশু শিক্ষার গুরুত্ব বুঝতে পেরেছিলেন এবং সিদ্ধান্ত নেন যে তিনি কেবল শিক্ষার মাধ্যমেই তিনি তার জীবন পরিবর্তন করবেন। হিমাংশু গুপ্ত ২০১৮ সালে প্রথমবার UPSC পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। এই সময়ে তিনি ভারতীয় রেলওয়ে ট্রাফিক সার্ভিসের (IRTS) জন্য নির্বাচিত হন। এর পরে, ২০১৯ সালে, তিনি দ্বিতীয়বার ইউপিএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন যেখানে তিনি আইপিএস-এর জন্য নির্বাচিত হন। তৃতীয়বার, তিনি ২০২০ সালে সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন, অবশেষে আইএএস হয়ে নজির গড়েন তিনি।
হিমাংশু তার সাক্ষাৎকারে বলেছেন, আমি ইংরেজি ভালভাবে জানতাম না, তাই ইংরেজি শেখার জন্য ইংরেজি ছবির ডিভিডি কিনেছিলাম। তিনি বলেন, আমি বোর্ড পরীক্ষায় ভালো নম্বর পেয়ে হিন্দু কলেজে ভর্তি হয়েছিলাম। কোচিংয়ের জন্যও পর্যাপ্ত অর্থ না থাকার কারণে তিনি কোচিংও নেননি। তিনি টিউশন পড়িয়ে নিজের পড়ার খরচ জুগিয়েছেন ব্লগ লিখেছেন। আজ আইএএস হয়ে সকলকে অনুপ্রেরণা জোগাচ্ছেন তিনি।