কলকাতার রাস্তায় 'ভূত'! তাঁকে দেখেই ভয়ে শিরদাঁড়ায় বইতে থাকছে ঠান্ডা স্রোত। সে নাকি, নিয়ম মেনে রাতে উপদ্রব শুরু করেছে উত্তর কলকাতায়। আলো আঁধারিতে ভূতের ঘোমটা দেওয়া সেই মুখ দেখেই আত্মারাম খাঁচা ছাড়া হওয়ার দশা পথ চলতি মানুষের। ঠ্যাঙ ছড়িয়ে, সটান পাঁচিলের উপর চড়ে বসেন তিনি ও তাঁর স্বামী। নিরুত্তর দৃষ্টিতে গতিবিধি লক্ষ্য করেন মানুষের। এই আজব ভূতের কাণ্ড নিয়েই সাড়া পড়েছে পাড়ায়। ঘটনাটি টালা বারোয়ারি পার্ক সংলগ্ন এলাকায়।
পাড়ার বাসিন্দা শুভ্রজিৎ পাল জানান, শীতের রাতে এক ব্যক্তি মত্ত অবস্থায় রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলেন, তিনি এতটাই মদ্যপান করেছিলেন যে সঠিক ভাবে পা ফেলতে পারছিলেন না। এরপরই হঠাৎ ভূতের ডেরায় পৌঁছে যান তিনি। দেখেন, পাঁচিলের উপর লুঙ্গি আর সাদা গেঞ্জি পরে এক বৃদ্ধ বসে রয়েছেন। তাঁর সঙ্গে অনেক কথা বলারও চেষ্টা করেন ওই মাঝবয়সি মত্ত ব্যক্তি। কিন্তু উল্টো দিক থেকে কোনো উত্তর আসে না। বিরক্ত হয়ে চিৎকার করে সে প্রশ্ন করেন, "মদ খেয়ে আমার গা গরম, তুই কেন এত ঠান্ডায় পাঁচিলে উঠে বসে আছিস?" এরপর সে মনে করে ইনি ভূত, তারপর দৌড়ে পালিয়ে যান সে জায়গা থেকে।
নিরুত্তর দৃষ্টিতে গতিবিধি লক্ষ্য করেন মানুষের।
শুভ্রজিৎ বাবু বলেন, আমার বাড়ির পাঁচিলে ওই বৃদ্ধ ভূতের বাস। কুকুরও সেখানে এসে ঘেউ ঘেউ করছে। বনমালী চ্যাটার্জি স্ট্রিটে এখন সবচেয়ে আলোচিত বিষয় এই দুই ভূত। বাচ্চারাও ওদিক পানে তাকাচ্ছে না। রাতবিরেতে পথ চলতি মানুষদেরও তাঁদের নিয়ে বিভ্রাট কম হচ্ছে না। উল্লেখ্য, এই দুই ভূত কিন্তু কারও ক্ষতি করেনি। তাহলে "তেনারা কারা"? সেই প্রশ্নেই মিশ্র প্রতিক্রিয়া মিলল এলাকায়।
তিনি একা নন, আছে আরেক জনও
ওরা শুধুই দুটো মুর্তি। এতটাই নিঁখুত তাদের অবএব, যে রাতের অন্ধকারে হঠাৎ দেখলে তাঁতকে উঠছে মানুষ। টালা বারোয়ারি ক্লাবের দুর্গা পুজোর মন্ডপের জন্য শিল্পী বিমুল কুণ্ডুর হাতে তৈরি করা হয় এই দুই মূর্তি। পুজো কেটে গেলেও, এই দুই মুর্তি প্রাণে ধরে ফেলতে পারছেন না ক্লাবের কর্মকর্তারা। তাই তাদের ঠাঁই হয়েছে পাঁচিলের ও বৈদ্যুতিক বাক্সের উপর। যা দেখে মাঝে মধ্যেই ভ্যাবাচাকা খেয়ে যাচ্ছেন পাড়ার বাসিন্দারা।
এলাকায় নিত্য যাতায়তাত অশীন্ত দাসের। তিনি জানাচ্ছেন, প্রথমে পথ চলার সময় খুবই চমকে উঠতাম। এখন অনেকটা অভ্যস্ত হয়ে গেছি। কিন্তু অন্যমনস্ক থাকলে এখনও মাঝে মধ্যে চমকে উঠি।