শূন্য হল! মঞ্চে পড়ে রয়েছে ২০ টি গানের লিস্টের কাগজ, ফুলের তোড়া ৷ এদিক ওদিক ছড়িয়ে রয়েছে সেদিন সন্ধ্যায় শো'র শেষ কিছু স্মৃতি চিহ্ন। কেকে-র শেষ শোয়ের সাক্ষী নজরুল মঞ্চ খাঁ খাঁ করছে ৷ নেই কেকে, কিন্তু তাঁর শেষ গান 'পল, ইয়াদ আয়েঙ্গে ইয়ে পল' । শো'য়ের এই টুকরো ছবি ঘুরছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। আর এই ছবি চোখের কোণে জল এনেছে লক্ষ লক্ষ অনুরাগীর।
নেই কেকে! মানতেই পারছেন না আসমুদ্র-হিমাচল। একটা মৃত্যু শেষ করল একটা যুগের। মৃত্যুর কারণ নিয়েও উঠেছে একাধিক বেনিয়মের অভিযোগ। কিন্তু সব কিছুকেও ছাড়িয়ে 'নক্ষত্রের দেশে' কেকে! আর তার মৃত্যুর পর ভাইরাল নজরুল মঞ্চের কনসার্টের ভিডিও। চরম অব্যবস্থার ভিডিও।
আরও পড়ুন: কলকাতার কনসার্ট নিয়ে উচ্ছ্বসিত ছিলেন কেকে নিজেও! ইন্সটাগ্রামে দিয়েছিলেন সেই বার্তা
বিখ্যাত হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ কুনাল সরকার, গতকাল সন্ধ্যেয় কেকে'র মৃত্যুর পর এক ফেসবুক পোস্টে তুলে ধরেছেন মৃত্যুর পিছনে কতগুলি সম্ভাব্য কারণ। তিনি লিখেছেন, এই মৃত্যু "যতটা দুঃখ, ঠিক ততটাই লজ্জার"! ছবি পোস্ট করে লিখেছেন, 'এক বেদনাদায়ক সন্ধ্যা' একই সাথে লিখেছেন, যতটা দুঃখ, ততটাই লজ্জার।' পাশেই রেখেছেন কেকের মৃত্যুর কারণ।
যার মধ্যে সবার প্রথমে উঠে এসেছে এদিন নজরুল মঞ্চে উপস্থিত দর্শকদের ভীড়। তারপরেই বলেছেন AC বেহাল- ভীষণ গরম। কারণ এদিন ক্যামেরায় ধরা পড়েছে AC না চলায় দরদরিয়ে ঘামছিলেন গায়ক। তুলে ধরেছেন মুখের উপর Fire Ext. স্প্রে করার ঘটনা। এছাড়াও চিকিত্সক কেকের মৃত্যুর জন্য দায়ী করেছেন নজরুল মঞ্চের চরম অব্যাবস্থাকে। আর এসবের জন্য শিল্পীর কাছে ক্ষমাও চেয়ে নিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি সেলেব থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ সকলকেই ৪০ পেরোনোর পরেই হেলথ চেকআপের পরামর্শও দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: এমন ‘দরাজ’ কন্ঠ আর শোনা হবে না, ‘কান্নায়’ ভেঙে পড়ল টুইটার!
বুধবার সকাল থেকেই ভাইরাল হয়েছে কেকে'র সেই গানের লিস্টের তালিকা। মঙ্গলবার রাতে মঞ্চ থেকে নামার আগেও গেয়েছেন স্টেজ কাঁপানো কেকে'র সেরা গান। শেষ গান ছিল ‘হাম রহে ইয়া না রহে ইয়াদ আয়েঙ্গে ও পল’। গান গেয়ে যখন মঞ্চ ছাড়ছিলেন, সেই সময়ের ভাইরাল ভিডিও'তে চোখে মুখে ক্লান্তির ছাপ স্পষ্ট নজরে এসেছে।
অনুষ্ঠানের মাঝে মঞ্চে থাকা স্পটলাইট বারবার বন্ধ করতে বলেছিলেন কেকে। তাঁর শরীরে যে একটা অস্বস্তি হচ্ছিল, সেটা অনেকেরই চোখে পড়ে। কেকের অনুষ্ঠানের পরিচালনার দায়িত্বে থাকা কেউ কেউ বলছিলেন, ‘এদিন মঞ্চে প্রচণ্ড ঘামছিলেন গায়ক। কিছুটা অস্বস্তিও বোধ করছিলেন’। তারপরই শো’ শেষে হোটেলে ফেরার পথেই গাড়িতে শীত শীত ও অনুভব করেন কেকে।
সেই অবস্থাতেই তিনি গাড়িতে উঠে চলে যান মধ্য কলকাতার অভিজাত পাঁচতারা রেস্তোরাঁয়। পথে যেতেই গাড়িতেই অস্বস্তি বোধ করায়,ac বন্ধ করার কথাও বলেন তিনি। রাত তখন ৯টা বেজে ১০ মিনিট। হোটেলের লিফটেই অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। হোটেলের রুমে গিয়ে সোফায় বসতে গিয়েই পড়ে যান, কপালে, মাথায় চোটও পান কেকে। অ্যাম্বুলেন্স না থাকায় হোটেলের গাড়ি করেই একবালপুরের কাছে এক বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গিয়েও শেষ রক্ষা হল না। চলে গেলেন কেকে। কাঁদিয়ে গেলেন আপামোর দেশবাসীকে।