২০ বলে ৬৭ রানের সেই ঝলসানো ইনিংস এখন অতীত। সংসার চালাতে এখন ভরসা একটি টোটো। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত টোটো চালিয়ে যা আয় হয় তা দিয়েই চারজনের পরিবার কোন রকমে চলছে। জাতীয় স্তরে খেলা বিশেষভাবে সক্ষম এক ক্রিকেটারের জীবন এখন চরম দরিদ্রতায় কাটছে। যা এখন ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।
জাতীয় স্তরে খেলা বিশেষভাবে সক্ষম এই ক্রিকেটারের নাম রাজা বাবু। ২০১৭ সালে দিল্লির বিরুদ্ধে তার দারুণ ব্যাটিং পারফরমেন্স নজর কাড়ে সকলের। উত্তরপ্রদেশের হয়ে ২০ বলে ৬৭ রানের এক অনবদ্য ইনিংস খেলেন তিনি। ভাগ্যের করুণ পরিণতিতে তিনিই এখন তিনি এখন গাজিয়াবাদে একটি ই-রিকশা চালাচ্ছেন। সেই সঙ্গে বাড়ি বাড়ি দুধ বিক্রি করছেন। প্রতিদিনের আয় বলতে ২৫০- থেকে ৩০০ টাকা।
স্ত্রী ছাড়াও পরিবারে রয়েছে কৃষ্ণা (৭) এবং শানভি (৪)। একটা পা নেই, হুইল চেয়ার ছাড়া হাঁটার ক্ষমতা নেই। তবুও হেলিকপ্টার শটে সিদ্ধহস্ত রাজাবাবু। করোনা মহামারী সব কিছুকে শেষ করে দিয়েছে, সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার সময় আক্ষেপে চোখের কোনে জল এই প্রতিভাবান ক্রিকেটারের। পেশাদারি ভাবে ক্রিকেট না খেলতে পারার জন্য সংসার চালানোও দুরহ হয়ে পড়েছে। অগত্যা ভরসা মানুষের ভালবাসায় পাওয়া একটি টোটো।
আরও পড়ুন: <কেতাদুরস্থ রোদচশমায় এই ব্যক্তি কে? উত্তর খুঁজতে মরিয়া নেটদুনিয়া!>
তাই বাঁচিয়ে রেখেছে প্রতিভাবান ক্রিকেটারের সংসার। উত্তরপ্রদেশে প্রতিবন্ধী ক্রিকেটারদের জন্য দাতব্য সংস্থাটি উঠে যায় করোনার কারণে হওয়া লকডাউনে। তারপর থেকেই সমস্যায় পড়েছেন রাজা।
আক্ষেপের সুরে রাজা বলেন, “আমি বহরমপুর এবং বিজয় নগরের মধ্যে দিনে প্রায় ১০ ঘণ্টা ই-রিকশা চালাই যাতে আমি ২৫০-৩০০ টাকা আয় করতে পারি৷ সংসারের খরচ মেটাতে গিয়ে বাচ্চাদের লেখাপড়ার জন্য কিছুই হাতে রাখতে পারছিনা। আমাদের মত বিশেষভাবে সক্ষম ক্রিকেটাদের কর্মসংস্থানের সুযোগ খুবই কম”।
একটি দুর্ঘটনায় একটি পা হারিয়েছিলেন রাজা। তবে ভাগ্যের চাকা যে ঘুরবে সে ব্যপারে আশাবাদী তিনি। তার ব্যাটিং জাদুর মত কবে ভাগ্যের চাকা ঘোরে এখন সেদিকেই নজর তারকা ক্রিকেটারের।
আরও পড়ুন: <পিৎজা’র ময়দার ওপর ‘টয়লেট ব্রাশ’! মুখ পুড়তেই বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলে দায় সারল Domino’s>
উত্তর প্রদেশ ক্রিকেট অ্যাকাডেমির চেয়ারপার্সন অতুল শ্রীবাস্তব বলেন, “রাজার মত বিশেষ ভাবে সক্ষম ক্রিকেটারদের দিকে বোর্ডের কিছু পদক্ষেপ নেওয়া উচিৎ। বিসিসিআইকে এই বিষয়টি নিশ্চিত করা দরকার যাতে রাজার মত প্রতিভাবান ক্রিকেটাররা অর্থ এবং চাকরির চিন্তা না করে খেলার দিকেই ফোকাস করতে পারেন”।