লাগাতার ক্ষেপণাস্ত্র হামলা থেকে প্রাণে বাঁচতে ঘর বারি ছেড়ে পাড়ি দিয়েছিলেন নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে। সঙ্গে ছিলেন স্ত্রী-মেয়ে। গাড়ি চালাচ্ছিলেন নিজে। গাড়ির ওপর চলল গুলি। একটি গুলি লাগল ছোট্ট মেয়ের হাতে। কয়েক দিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর ছোট্ট মেয়েটির হাতটাই কেটে বাদ দিতে হয়েছে। মারা গিয়েছে বাবা-ও। যদিও তার স্থির বিশ্বাস, ইচ্ছে করে তাকে আঘাত করেনি রুশ সেনা। তার সঙ্গে কী-ই বা শত্রুতা তাদের!
সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর, আহত মেয়েটির নাম সাশা। বয়স মাত্র নয়। বাবা-মায়ের সঙ্গে গাড়ি করে কিয়েভ ছাড়ার সময় রুশ সেনার গুলির সামনে পড়ে তারা। গাড়ি থেকে নেমে দৌড়তে দৌড়তে নিরাপদ জায়গা খুঁজছিল সাশার পরিবার। সে সময় রুশ সেনার গুলিতে নিহত হন সাশার বাবা। বোন আর মা কোনওক্রমে আশ্রয়ে পালাতে পারলেও গুলিতে জখম হয় সাশা। তাকে দ্রুত আহত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু চেষ্টা করেও মেয়েটির হাত রক্ষা করা সম্ভব হয়নি।
তাকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয় একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যরা। চাদরে মুড়ে ছোট্ট সাশাকে নিয়ে যায় হস্টোমেলের একটি হাসপাতালে। টানা দু’দিন সংজ্ঞাহীন ছিল সে। হুঁশ যখন ফিরল, ছোট্ট মেয়েটি দেখল তার একটি হাত নেই। যদিও সে মনে করে তার উপর পুতিন-সেনার ব্যক্তিগত শত্রুতা নেই!
সাশার কথায়, ‘‘আমি জানি না, কেন রুশ সেনা আমায় গুলি করল। আমার নিজের মনে হয় এটা নিছকই দুর্ঘটনা। ওরা নিশ্চয়ই আমায় ইচ্ছে করে আঘাত করেনি।’’ মেয়েটি আরও যোগ করে, ‘‘আমার হাতে একটি গুলি লাগে। বোনের উপর পড়ে গিয়েছিলাম। আমার মা-ও পড়ে যান। আমার তখন মনে হল মা মারা গিয়েছেন। কিন্তু না, মা আমাদের নিয়ে লুকিয়ে পড়েন। তার পর আর কিছু আমার মনে নেই।’’ উল্লেখ্য, রাষ্ট্রসঙ্ঘের রিপোর্ট বলছে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে এপর্যন্ত ৮৫টি শিশুর মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছে ১০০ জনের বেশি।