হামলা, পাল্টা আক্রমণ! এর মাঝেই বিপন্ন শৈশব। রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ দেখতে দেখতে এক মাসের বেশি সময় কেটে গিয়েছে। রুশ আগ্রাসনের নিন্দায় মুখ খুলেছে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি। রাশিয়ার সৈন্যদের উদ্দেশ্যে আনা হয়েছে একাধিক অভিযোগ। জেলেনস্কির অভিযোগ রুশ সেনা নির্বিচারে সাধারণ মানুষের ওপর হত্যালীলা জারি রেখেছে। মহিলাদের ধর্ষণ করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে বাদ যাচ্ছে না শিশুরাও।
Advertisment
ইতিমধ্যেই কিয়েভ দাবি করেছে রাশিয়া তাদের দেশের প্রায় ২৫০০ এর বেশি শিশুকে অপহরণ করেছে। সেই সঙ্গে যুদ্ধের বলি হয়েছে শতাধিক শিশু। যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে গত এক মাসে দলে দলে ইউক্রেনীয় দেশ ছেড়েছেন। শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নিয়েছেন পড়শি দেশগুলিতে। এর মধ্যে ৯০ শতাংশই নারী এবং শিশু। ইতিমধ্যেই সেই সব ছবি ভাইরাল হয়েছে নেটমাধ্যমে।
তবে এখন যে ছবি ভাইরাল হয়েছে তা দেখে রুশ আগ্রাসনে বর্বরতার ছবি উপলব্ধ করে চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি নেটিজেনরা। এক মা তাঁর ছোট্ট শিশুর পিঠে লিখে রেখেছে, তার নাম পরিচয়, জন্ম সাল সহ নিকট আত্মীয়ের ঠিকানাও। আর এই ছবিই এখন ঘুরে বেড়াচ্ছে নেটদুনিয়ায়। কেন এমন করলেন তিনি? শিশুটির মা জানাচ্ছেন, রুশ আগ্রাসনে মৃত্যু হলেও তাদের সন্তান যেন নিরাপদে থাকতে পারে। তার যাতে কোন ক্ষতি না নয়। সে যেন উদ্বাস্তু তকমা না পায় তার জন্যই তিনি সন্তানের পিঠে লিখে রেখেছেন যাবতীয় খুঁটিনাটি। এর আগে ইউক্রেনের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র ওলেগ নিকোলেনো রাশিয়ার বিরুদ্ধে এই মারাত্মক অভিযোগ তুলেছেন। তাঁর দাবি, শুধুমাত্র ১৯ মার্চই জোরপূর্বক পূর্ব দোনেৎস্ক থেকে ২ হাজার ৩৮৯ শিশুকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।
এই ঘটনা ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। জানা গিয়েছে শিশুটির নাম ভেরা মাকোভি। তার মা সাশা মাকোভি, ইউক্রেনের একজন শিল্পী। তিনি লিখেছেন, রুশ আগ্রাসনের মুখে যদি প্রাণ হারাতে হয়, যদি আমার সন্তান ভেরা বেঁচে থাকে, তাহলে তাকে যেন নিরাপদে তার কোন নিকট আত্মীয়ের কাছে পাঠানো হয়। তাকে যেন কখনওই উদ্বাস্তু তকমা না দেওয়া হয়।
মাকোভি ভেরার পিঠের একটি ছবি শেয়ার করেছেন যাতে ফোন নম্বর, ভেরার পুরো নাম এবং জন্ম তারিখ লেখা ছিল। একটি হাতে লেখা যোগাযোগের ঠিকানা। এদিকে এই ছবি ভাইরাল হতেই অনেকেই মাকোভির পন্থা অনুসরণ করে তাদের সন্তানদের পিঠে লিখে রেখেছেন যোগাযোগের বিস্তারিত তথ্য। অনলাইনে এই ছবি শেয়ার হতেই তাতে প্রায় কয়েক হাজারের কাছাকাছি ভিউ হয়েছে। অনেকেই এই পোস্টে মন্তব্য করেছেন যুদ্ধের ভয় শিশুদের সারাজীবন তাড়া করে যাবে।