ক্রিয়েটিভ থেকে মজাদার মিম, দুই ভাইয়ের কীর্তিকলাপ দেখে হেসে কুটোকুটি সোশ্যাল মিডিয়া। পেজের নাম বাঁকুড়া মিমস শর্টস। যদিও উন্মেষ গঙ্গোপাধ্যায় জনপ্রিয়তা পেয়েছেন অনেক পরে। ২০১৯ সাল থেকে নিত্যনতুন সব সেগমেন্ট। তথাকথিত স্কেচের মাধ্যমে মন ছুঁয়েছেন দর্শকদের। জার্নির পথে কতটা কি ফেস করেছেন উন্মেষ, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলার কাছে জানালেন সেটাই।
All sort উন্মেষ?
একদম! ওই আরকি ছোটখাটো সমস্যা তো লেগেই থাকে। সবমিলিয়ে চলছে।
বাঁকুড়া থেকে কলকাতা, জার্নিটা কেমন ছিল?
সত্যি বলব? আমি না এখনও বাঁকুড়া থেকেই কাজ করি। আমার সেটআপ ওখানে। কলকাতায় এসেই যে কাজ করতে হবে এখন তো এমনটা নয়, ডিজিটাল ভার্সন যেহেতু সব জায়গায় বসেই কাজ করা যায়। হ্যাঁ! মাঝেমধ্যে আসতে হয় কলকাতায়। আর মানুষের মনে বিস্তারের কথা যদি বল, তাহলে সেটা তো তাঁদের ভালবাসা।
অন্যান্য ইউটিউবারদের থেকে উন্মেষ কেন আলাদা?
স্ক্রিপ্ট, অবশ্যই! আমি এর ওপর অনেক নজর দি। এমনভাবে স্ক্রিপ্ট তৈরি করি যেন সেটা এন্টারটেনমেন্ট দেয়। মানুষ বারবার ফিরে আসেন। একটা কনটেন্ট একবার দেখেই যেন কেউ ফিরে না যায়। অনেকবার দেখে। আর সেই কারণেই আমি কিন্তু গর্বের সঙ্গে বলতে পারি, আমার সাবসক্রাইবার বেস থেকে ভিউজ অনেক আলাদা।
স্ক্রিপ্ট এর আইডিয়াটা কার থাকে?
আমার দাদার! ও একজন অসাধারণ লেখক। আমি জাস্ট একটা ড্রাফট বানাই। তারপর ওর সঙ্গে বসি। কিছু পাঞ্চ লাইন ঢোকাই। ওই সাহায্য ও চিরকাল করে এসেছে।
স্কেচ অনেকেই করছে, কম্পিটিশন কতটা রয়েছে মনে হয়?
কম্পিটিশন কতটা? এখনও সত্যি বলতে গেলে কম্পিটিশন কেউ নেই। আমি শুধু নিজেকে আপডেট করি। যাতে আমার থেকে ভুল ত্রুটি কম হয়। তাই এরকম কেউ নেই। হ্যাঁ, আমার হাসি পেতে হবে। একটা স্ক্রিপ্ট পরে বা অভিনয় করে যেন আমার হাসি পায়।
BMS শুরুতে একদম ভিন্ন কনটেন্ট বানাত, এখন এতটা বদল, কেন?
বদল কারণ, শুরুতে মিম তারপর বিভিন্ন সিরিজ বানাতাম। পলিটিকাল কিছু ভিউজ দিয়ে একটা সেগমেন্ট ছিল। তো সেটা একটা নির্দিষ্ট সংখ্যক লোক বুঝতে পারত। বেশি মানুষকে টাচ করত না। তখন ভাবলাম, যে এটা তো শুধু আমার জনার নয়। অন্য কিছুও করতে পারি। সেই থেকে শুরু। তারপর দেখ, ২০১৯ গেছে, ২০২১ গেছে। তখন পলিটিকাল পার্টিরা আমাদের কনটেন্ট নিয়ে একটা বিতর্কিত ভাব আরকি! ( হেসে )
লকডাউন কি নতুন ক্রিয়েটর তৈরি করেছে?
ওটা তো আমাদের কাছে একটা বিরাট সময়। যদিও আমার শুরুটা অনেক আগে। তবে হ্যাঁ, বাড়িতে বসে যখন কিছু করতে পারছি না তখন লোকজন ভিডিও বানিয়েছেন। সেটা ক্লিক করে গেছে। সেই থেকে অনেকেই ইউটিউব শুরু করেছেন। তবে হ্যাঁ, ব্লগার অনেক বেড়ে গেছে।
ক্রিটিক হতে ইচ্ছে হয় নি?
আমি তো ক্রিটিক ছিলাম! আমার তো সেগমেন্ট ছিলই সিনেমাংসের ঝোল। তারপর একটা সময় কী হল, বেশ কিছু সিনিয়র মানুষজন হয়তো তাঁরা পরিচালক কিংবা প্রযোজক তাঁরা গায়ে মাখতে শুরু করল। তারা বলতে শুরু করলেন, আমাদের কি এটাই প্রাপ্য ছিল। আমিও দেখলাম থাক, তাঁরা খারাপ মনে করছেন।
পরিচালক হিসেবে উন্মেষ তৈরি?
পরিচালক হিসেবে একেবারেই নয়। ওবাবা! সহজ কাজ নাকি... একদম না। আমায় আরও শর্টফিল্ম বানাতে হবে। আরও অনেক শিখতে হবে।
এতগুলো চরিত্রে নিজেকে মানিয়ে নাও কিভাবে?
ওটা সেট হয়ে গেছে জানো তো। আমি এখন এতো বার এই চরিত্রগুলোকে দেখেছি যে বাবা কীভাবে কথা বলেন বা মা, কিংবা টুকাই এগুলো এখন সেট হয়ে গেছে। আমি চটজলদি বদলে যেতে পারি! ( হাসি )
উন্মেষ কতটা প্রেমিক? প্রেমিকের চরিত্রে অভিনয় করতে হলে কাকে ফলো করবে?
প্রেম! ওরে বাবা! আমি প্রেমিক তো মানে ( হাসি ) অনস্ক্রিন প্রেম করতে বললে কার কথা বলব? শাহরুখ খান খুব কমন উত্তর। অজয় দেবগন ঠিক হবে। উনি একদম আইডিয়াল। সেই আকুতুকু বিষয়টা নেই। ভালবাসছি কিন্তু একটা ভাব নিয়ে সেটা দারুণ।
বাবা মায়ের রিয়াকশন কি ছিল?
আমি ছোট থেকেই খুব জাজড হয়েছি জানো। ,( হাসি ) বাবাকে যখন বলেছিলাম সাংবাদিকতা নিয়ে পড়ব তখনও ওই আর কি। আর ইউটিউব যখন শুরু করলাম। বাবা সোজা বলল, কী করছিস তুই এসব, কেন? কার বিরুদ্ধে কী বলছিস। তোকে জেলে নিয়ে চলে যাবে।
আর মায়ের বিষয়ে কি বলি, আমার মা খুব ইনোসেন্ট। আমার প্রতিটা ভিডিও শেয়ার করেন। লোকজনকে পাঠান। তাদের বলে দেখো এটা। আমি রেগে যাই কিন্তু মা তো মাই।
Cringe content কোনটা তোমার কাছে?
যেটা দেখলে আমি শিউরে উঠব সেটাই! কিন্তু আমি দেখব কেন বলো?? সারাদিনের শেষে একটা মানুষ একটু ইউটিউব দেখছে তার মধ্যে এসব। আমি দেখবো না।
তোমার ভিডিওতে পাবলিক রিয়াকশন দেখে কি বুঝছ?
যেটা বুঝছি সেটা হল, আনপপুলার অপিনিয়ন কমাতে হবে। মাথাগরম কিংবা হুটহাট কিছু বলে দিলাম এটা এখন খুব সমস্যার। আমায় শান্ত থাকতেই হবে। নইলে, ভাল কাজ এখন মানুষ মনে রাখে না। চর্চা আর আলোচনা বেশি হয়।
এখন যদি বলি প্রফেশন বদলাতে, কি হওয়ার ইচ্ছে রয়েছে?
কঠিন প্রশ্ন! হ্যাঁ! ফুড ক্রিটিক। বিরাট বিরাট খাব আর জাজ করব ( হাসি )। আমি খেতে খুব ভালোবাসি। এখনও বিকেলে কাটলেট না খেলে পাঞ্চ লাইন আসে না।
সোশ্যাল মিডিয়ায় কী বদলাতে চাও?
ইনস্টাগ্রাম রিলস আর YT শর্ট বন্ধ করে দিতে চাই। এটা আমার ইচ্ছে। আমি না, কেন জানি না ওই লম্বা ফ্রেমিং আমার পোষায় না। লাইটিং ফ্রেমিং কিছুই নেই। যদিও অনেকে করে। আমি চিরকাল চওড়া ভাবেই থেকে এসেছি, হঠাৎ লম্বা কিছু! কেন? আর তাছাড়াও টাইম সিকোয়েন্স। একটা ইউটিউব ভিডিওতে তাও ৩০ সেকেন্ড থাকে মানুষ, আর এই রিলস আর শর্ট?? দু সেকেন্ড, ভাল লাগছে না উঠিয়ে দাও! আমি চাই না আমায় কেউ এভাবে উঠিয়ে দিক।