তাদের দু’জনেরই পৃথক হৃদয়, পেট, মেরুদণ্ড, ফুসফুস আছে। তবুও এক শরীররই তাদের অবলম্বন। এক শরীর হলেও দুই মাথা নিয়ে জন্মায় ভাই-বোন। সব সময় একসাথে থাকতে তাদের! প্রেমের সময় দেখা দেয় সমস্যা। ভাই-বোনের এই কাহিনী সোশ্যাল মিডিয়ায় তুমুল ভাইরাল। লরি এবং জর্জ শ্যাপেল, পেনসিলভানিয়ার বাসিন্দা, তাদের দু’জনেরই পৃথক হৃদয়, পেট, মেরুদণ্ড, ফুসফুস রয়েছে। কিন্তু শরীর দুটো আলাদা হলেও মাথা একটাই। তারা যমজ ভাইবোন।
যমজ হওয়া কতটা ‘চ্যালেঞ্জিং’ হতে পারে তা কেবল তারাই অনুভব করতে পারেনযাদের যমজ ভাই বা বোন আছে। আজকাল আমেরিকার এক যমজ ভাই-বোন (কনজোইনড টুইনস ভিডিও) তুমুল আলোচনায়, যিনি তার জীবনের সঙ্গে সম্পর্কিত একাধিক বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন। তবে মেয়েটির সবচেয়ে বড় যে সমস্যাটির কথা তুলে ধরেছেন তা হল তার প্রেমিকার সঙ্গে সময় কাটানোর সময় তার ভাইয়ের উপস্থিতি। দ্য সান ওয়েবসাইটের প্রতিবেদন অনুসারে, লরি এবং জর্জ শ্যাপেল, পেনসিলভানিয়ার এক কনজোইনড টুইনস। তবে, উভয়ই এখনও আশা করেন যে চিকিৎসা বিজ্ঞান একদিন তাদের আলাদা করবেই।
জন্মের সময় থেকেই সকলেই তাদের মেয়ে হিসাবেই চিনত। জন্মের সময় একজনের নাম লরি এবং অন্যজনের নাম ডরি। কিন্তু ২০০৭ সালে, ডরি বুঝতে পেরেছিলেন যে তিনি ভিতর থেকে একজন পুরুষ। আগামী দিনে পুরুষ পরিচয় বাঁচতে চেয়েছিলেন তিনি। এখন তিনি জর্জ নামে পরিচিত। লরি কিন্তু নিজেকে মেয়ে হিসাবেই দেখেন। তিনি তার জীবন নিয়ে এগিয়ে যেতে চান, বিয়ে করতে চান এবং সন্তানের মাও হতে চান তিনি। ২৩ বছর বয়সে, তিনি প্রথম প্রেমে পড়েন। তার পর বিয়ে। কিন্তু দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় স্বামীর। ফের একবার প্রেমে পড়েছেন লরি। তিনি তার প্রেমিককে বিয়ে করে জীবনে সুখী হতে চান।
কিন্তু বয়ফ্রেন্ডের সাথে ডেটিং এবং সময় কাটানোর সময় লরিকে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। তিনি সংবাদ মাধ্যমের সামনে জানিয়েছেন, যে ভাইয়ের সামনে ডেট করা বা রোম্যান্স করা কঠিন, তবে জর্জ তাকে এই বিষয়ে খুবই সমর্থন করে। তাদের উভয়ের মাথা একে অপরের থেকে ভিন্ন দিকে রয়েছে, তাই যখন সে তার প্রেমিককে চুম্বন করে, জর্জ কিছুই দেখতে পায় না। এছাড়াও, ব্যক্তিগত মুহুর্তগুলিতে, জর্জ তার সঙ্গে একটি বই নিয়ে আসে এবং বই পড়েই সময় কাটাতে হয় তাকে।
দুজনেরই বয়স এখন প্রায় ৫০ বছর। লরি জর্জের চেয়ে সুস্থ। কিন্তু জর্জ হাঁটতে পারেন না, তিনি হুইলচেয়ারের মতো চেয়ারে বসেন। লরির উচ্চতা ৫ ফুট ১ ইঞ্চি এবং জর্জের উচ্চতা ৪ ফুট ৪ ইঞ্চি। এই ভাইবোনের জীবন সংগ্রামের কাহিনী এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় তুমুল ভাইরাল।