<এই খবরটির সত্যতা যাচাই করেছে boomlive.in, যা অনলাইনে ভুল তথ্য এবং ডিপফেক ভিডিও শনাক্তকরণে Shakti collective-এর অংশ>
সাম্প্রতিক লোকসভা নির্বাচনের বিষয়ে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (Rashtriya Swayamsevak Sangh) করা এক সমীক্ষায় তমলুকের বিজেপি প্রার্থী তথা কলকাতা হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Abhijit Gangopadhyay) পরাজিত হতে চলেছেন দাবি করে বর্তমানে এক চিঠি ভাইরাল হয়েছে সমাজমাধ্যমে।
বুমকে আরএসএসের তাম্রলিপ্ত বিভাগের সংঘ চালক গৌরহরি সামন্ত জানান চিঠিটি ভুয়ো, 'জলন্ধর মাহাতো' নামের কোনও সদস্য তাদের সংগঠনে নেই।
ভাইরাল সেই চিঠিতে বাংলার প্রদেশ প্রচারক 'জলন্ধর মাহাতো'র নাম করে জনৈক 'নবারুণে'র উদ্দেশ্যে লেখা হয়, "প্রিয় নবারুণ,আশা করি তুমি, তোমার পরিবার এবং সঙ্ঘের সম্পূর্ণ পরিবার ভালো আছে এবং এখনো তুমি আমাদের লড়াকু মনোভাবটা বজায় রেখেছো। তোমার চিঠির প্রত্যুত্তরে তোমায় জানাই আমাদের সমীক্ষায় তমলুক লোকসভা কেন্দ্র বিজেপি আর জিততে পারবে না।"
ওই চিঠিতে তমলুকে বিজেপির পরাজয়ের কথা উল্লেখ করে বলা হয়, "এর মূলত দুটি কারণ, একটি যেটি তুমি আমায় আগেই জানিয়েছ অর্থাৎ আমাদের প্রার্থী, যার সম্প্রতি কয়েকটা বক্তব্য এবং তাঁর 'বাবুয়ানা' আমাদের এই লোকসভাটি হেরে যাওয়া নিশ্চিত করেছে। আমি ব্যক্তিগত ভাবে অমিতবাবুকে আগেই বলেছিলাম যে, এই রকম একটি ডেপো লোক আমাদের সংগঠনটি নষ্ট করবে, কিন্তু শুভেন্দুর পৃষ্ঠপোষকতায় এই আসনটিতে অভিজিৎ বিরাজমান হয়। এর আদবকায়দা এবং কথার ধরনে আমরা বীতশ্রদ্ধ। শুভেন্দু একাই নিজেকে ভেবে নিয়েছে ওই জয়ের কাণ্ডারি। তাই সময় হয়েছে ওকে আদি সনাতনী শক্তি দেখানোর।"
এছাড়াও উক্ত চিঠিতে 'প্রিয় নবারুণে'র উদ্দেশ্যে 'সনাতনী সত্তাতে বিশ্বাস' রাখার পাশাপাশি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এবং বিজেপিকে বহিষ্কার করার বার্তা 'পুঙ্খানুপুঙ্খ রূপে পালন' করার অনুরোধ করা হয়।
পোস্টটি দেখতে ক্লিক করুন এখানে ও তার আর্কাইভ দেখতে এখানে।
পোস্টটি দেখতে ক্লিক করুন এখানে ও তার আর্কাইভ দেখতে এখানে।
বুম ভাইরাল সেই চিঠির বিষয়ে জানতে পূর্ব মেদিনীপুরে আরএসএসের তাম্রলিপ্ত বিভাগের সংঘ চালক গৌরহরি সামন্তের সাথে যোগাযোগ করে। গৌরহরি এবিষয়ে আমাদের নিশ্চিত করে বলেন চিঠিটি ভুয়ো, অপপ্রচারের উদ্দেশ্যে এমন চিঠি ছড়ান হয়েছে সংঘের বিষয়ে।
গৌরহরি বুমকে বলেন, "এটা ভুয়ো খবর। কোনও রাজনৈতিক দলের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করা সংঘের কাজ নয়। জলন্ধর মাহাতো বলে আমাদের কেউ নেই। কোথা থেকে নাম পেয়েছে কে জানে!"
এছাড়াও তিনি এবিষয়ে আরএসএসের তাম্রলিপ্ত বিভাগের তরফে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি আমাদের পাঠান। নীচে তা দেখতে পাওয়া যাবে।
সংঘের তাম্রলিপ্ত বিভাগের সেই বিজ্ঞপ্তিতে লেখা হয়, "বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যাচ্ছে যে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের ভুয়ো 'লেটার হেড' তৈরী করে সঙ্ঘের মাননীয় সহক্ষেত্র প্রচারকের নাম ভুলভাবে ব্যবহার করে বাংলায় টাইপ করা একটি চিঠি তমলুক লোকসভা এলাকার বিভিন্ন স্থানে রাতের অন্ধকারে বিলি করা হচ্ছে। এই বিবৃতিতে আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে ভারতীয় জনতা পার্টির প্রার্থী অভিজিৎ গাঙ্গুলীর উদ্দেশ্যে একটি কাল্পনিক 'চিঠি' লেখা হয়েছে এবং সেই চিঠির প্রেরক হিসাবে জনৈক ’জলন্ধর মাহাত'র নাম ব্যবহার করা হয়েছে।"
"সঙ্ঘের পক্ষ থেকে স্পষ্টভাবে জানানো হচ্ছে সঙ্ঘ একটি সামাজিক সংগঠন এবং সঙ্ঘ কোনো রাজনৈতিক দলের আভ্যন্তরীণ বিষয়ে কখনো হস্তক্ষেপ করে না। ’জলন্ধর মাহাত' নামে সঙ্ঘের কোনো কার্যকর্তা এরাজ্যে বা অন্য রাজ্যে নেই। এটি একটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভুয়ো চিঠি। সঙ্ঘ এধরণের অপপ্রচার বন্ধ করতে শীঘ্র আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।"
আমরা ভাইরাল চিঠির সাথে আরএসএসের তাম্রলিপ্ত বিভাগের লেটারহেডের কোনও বৈশিষ্ট্যগত সাদৃশ্য খুঁজে পাইনি। নীচে সেই তুলনা দেওয়া হল।
<এই খবরটির সত্যতা যাচাই করেছে boomlive.in, যা অনলাইনে ভুল তথ্য এবং ডিপফেক ভিডিও শনাক্তকরণে Shakti collective-এর অংশ>