শিক্ষাগত যোগ্যতায় তিনি স্নাতকোত্তর পাশ। সম্পূর্ণ করেছেন ডিপ্লোমা ইন এলিমেন্টরি এডুকেশন কোর্স। টেট উত্তীর্ণ হয়েছেন। কিন্তু মেলেনি চাকরি। অবশেষে আর্থিক সুরাহার জন্য বেছে নিলেন চপ বিক্রি। মুখ্যমন্ত্রীর কথা অনুযায়ী, ঠেলা দোকানের নাম 'চপ শিল্প'। পুরুলিয়ার বিশ্বজিৎ কর মোদকের এমন জীবন সংগ্রামের কাহিনী হার মানাবে চিত্রনাট্যকে। প্রতিদিন সকাল থেকে রাত অক্লান্ত পরিশ্রম করেন তিনি। সকালে ঘুগনি, মুড়ি, ডিমভাজা, ডিম সেদ্ধ দিয়ে দোকান শুরু করেন তিনি। চলে রাত পর্যন্ত। রাতের মেনু লিস্টে থাকে হরেক রকমের চপের আইটেম। ইতিমধ্যেই এলাকায় যথেষ্ট সুনাম অর্জনও করেছে তার দোকানের চপের স্বাদ।
Advertisment
পুরুলিয়ার বান্দোয়ানের বাসিন্দা বিশ্বজিৎ কর মোদক। মানভূম মহাবিদ্যালয় থেকে বাংলায় স্নাতকোত্তর। ডি এড করেছেন, টেট উত্তীর্ণ হয়েছেন কিন্তু চাকরি পাননি। গৃহশিক্ষকের কাজ করেছেন বেশ কিছুদিন। এরপর ভিলেজ রিসোর্স পার্সন পদে চুক্তিভিত্তিক কর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেন। কিন্তু যৎসামান্য আয়ে সংসার চালানো দায় হয়ে দাঁড়ায়। এরপরও বিকল্প উপার্জনের পথ খুঁজে পাওয়ার চেষ্টা করতে থাকেন তিনি। মাথায় আসে মুখ্যমন্ত্রীর চপশিল্পের নিদান। যেমন ভাবনা তেমন কাজ। খুলে বসলেন চপ শিল্প। দোকানের নামও রাখলেন চপ শিল্প। প্রথমে অনেকে তাকে কটাক্ষ করলেও তার অদম্য জেদ এবং ইচ্ছাশক্তির কাছে হার মানতে বাধ্য হয় সকল বাঁধা। ‘চপ শিল্প’ নামে ঠেলা গাড়িতে চপের দোকান খোলার পর থেকেই তার দোকানের চপের স্বাদে মজে যান সেখানকার বাসিন্দারা। এখন অনেক দূর দূরান্ত থেকেও মানুষজন আসেন তার দোকানে চপ খেতে।
দোকান নিয়ে কী বলছেন বিশ্বজিৎ? তাঁর কথায়, শুরুতে লড়াই করতে হয়েছিল কিন্তু কখনই হাল ছাড়ার মানুষ তিনি ছিলেন না। প্রথম দিকে সেভাবে বিক্রি বাট্টা না হলেও এখন দিনে প্রায় ২৫০০ থেকে ৩০০০ টাকার কেনাবেচা হয়। লাভ থেকে প্রায় ৫০০ থেকে ৭০০ টাকার কাছাকাছি আর তাতেই নতুন করে নিজের হারিয়ে যাওয়া স্বপ্ন বুনতে শুরু করেন তিনি। তাঁর এই জীবন সংগ্রামের কাহিনী ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। ইউটিউবে তাঁর জীবন সংগ্রামের একাধিক ভিডিও আপলোড করা হয়েছে। তাতে কয়েক হাজার ভিউ হয়েছে। সকলেই তাঁর অদম্য জেদ এবং ইচ্ছা শক্তিকে কুর্নিশ জানিয়েছেন।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন