এম.এ পাশ টুকটুকির সব স্বপ্ন এখন ‘এমএ ইংলিশ চায়েওয়ালি’ দোকান ঘিরে। টুকটুকির স্বপ্ন ছিল নিজে কিছু করার। শুধুই চাকরির কথা ভাবে আজকালকার মধ্যবিত্ত পরিবার। কিন্তু সেসবের ঊর্ধ্বে গিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে চেয়েছিল টুকটুকি। সরকারি বা বেসরকারি চাকরির বাইরেও আরও বড় কিছু লক্ষ্য হতে পারে তা সফল করতে নেমেছেন এই তরুণী। টুকটুকি এখন চালাচ্ছেন একটি চায়ের দোকান। চায়ের দোকানের নাম ‘এমএ ইংলিশ চায়েওয়ালি’(MA English Chaiwali)।
Advertisment
তাঁর দোকানের এই নাম এখন সমাজকে প্রশ্ন চিহ্নের মুখে দাঁড় করিয়েছে। উত্তর ২৪ পরগনার হাবড়ার কৈপুকুরের বাসিন্দা টুকটুকি দাস। হাবড়া শ্রীচৈতন্য কলেজ থেকে ইংরেজিতে স্নাতক পাশ করে টুকটুকি। রবীন্দ্রভারতী মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে স্নাতকোত্তর হয়েছেন। এমএ পাশ করলেও অনেক চেষ্টার পরেও মেলেনি মনের মতো ভাল চাকরি। লড়াই তবে থামাননি টুকটুকি, শুরু হয় তাঁর ইউটিউব ঘাঁটা। ইউটিউব থেকেই চা বিক্রির মাথায় আসে টুকটুকির।
ইউটিউবেই এক দিন খোঁজ পান মুম্বইয়ের এক চায়ের দোকানের। সেটিও তৈরি করেছেন উচ্চশিক্ষিত এক যুবক। ইংরেজিতে এমএ পাশ টুকটুকি চায়ের দোকান খোলার সিদ্ধান্ত নেয়। একসময় মত না দিলেও এখন মা-বাবাও আছেন তাঁর পাশে। ৫ থেকে ৩৫ টাকার চা মিলবে ‘এমএ ইংলিশ চায়েওয়ালি’ দোকানে। চায়ের সঙ্গে সন্ধ্যের দিকে মিলবে সিঙ্গারাও। ভবিষ্যতে এই ব্যবসাকেই এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখছেন টুকটুকি।
তাঁর কথায়, আর পাঁচটা মেয়ের মতো সমাজের নানা ঘেরাটোপের মধ্যে বেড়ে ওঠা, চায়ের দোকান করাতে পরিবারের সেভাবে সায় ছিল না, কিন্তু নিজে কিছু করতেই হবে দাঁড়াতেই হবে নিজের পায়ে এই চিন্তা থেকেই তাঁর এই চায়ের দোকান। ইচ্ছাশক্তির কাছে যে কোনও বাধাই পিছু হটতে বাধ্য হয়। টুকটুকির ক্ষেত্রেও তাই। তাই হাসি মুখে দোকান চালাচ্ছেন এম.এ পাশ টুকটুকি।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ইতিমধ্যেই তাঁর চায়ের খ্যাতি দূরদূরান্তে ছড়িয়ে পড়েছে। তাঁর কথায়, দোকান থেকে যা রোজকার হয়, তাতে তার দিন চলে যায় ভালভাবেই। তিনি আরও বলেন, সমাজের প্রতিটি মেয়েকেই নিজের পায়ে দাঁড়ানো উচিত। বছর ২৬-এর টুকটুকি আজ সমাজের অন্য মেয়েদের কাছেও এক দৃষ্টান্ত। অদম্য জেদে ভর করে স্বপ্নপুরণেরর আশায় বিভোর এই ‘চায়েওয়ালি’।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন