তালিবানরা আফগানিস্তান দখলের পর থেকে তালিবানি অত্যাচার থেকে প্রাণ বাঁচাতে কাতারে কাতারে মানুষ কাবুল বিমানবন্দরে জড়ো হতে থাকেন দেশ ছাড়ার হিড়িকে। আমরা সোশ্যাল মিডিয়ার সৌজন্যে দেখেছি কীভাবে আফগানরা জীবনের ঝুঁকি নিয়েও চলন্ত বিমানে উঠতে, আমরা দেখেছি আফগান মায়েরা তাদের সন্তানদের বাঁচাতে কীভাবে মার্কিন এবং ব্রিটিশ সেনাদের দিকে কাঁটাতারের বেড়া পেরিয়ে ছুঁড়ে দিচ্ছেন, কত নিষ্পাপ জীবনকে মাত্র কয়েকদিনের মধ্যে আমরা শেষ হয়ে যেতে দেখেছি। এর মাঝেই একটি হৃদয়স্পর্শী ছবি ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। যা অন্ধকারে একবিন্দু আলোর সন্ধান দেয়।
একটি ছোট্ট মেয়ে আফগানিস্তান ছেড়ে বেলজিয়ামে মা-বাবার সঙ্গে আসার পর মনের আনন্দে লাফিয়ে লাফিয়ে পিচ রাস্তা ধরে এগিয়ে চলে। বেলজিয়াম তার জন্য কতটা নিরাপদ তার অভিব্যক্তিতেই তা ফুটে উঠেছে। এই ছবি নেটদুনিয়ায় ভাইরাল হতেই অজস্র মানুষ এই ছবিতে কমেন্ট করেছেন। অনেকে লিখেছেন, “দীর্ঘ লড়াই শেষে একরাশ শান্তি”।
সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের এক চিত্র সাংবাদিক জোহানা গেরনের তোলা এই ছবি এখন উঠে এসেছে সংবাদ শিরোনামে। ছবিতে দেখা যাচ্ছে কাধে ব্যাগ, চোখে মুখে উদ্বেগের ছাপ নিয়ে বেলজিয়ামে এসে পৌঁছেছেন এক আফগান দম্পতি। তাঁদের অনুসরণ করেই বাচ্চা মেয়েটি মনের আনন্দে লাফাতে লাফাতে তাঁদের দেখানো পথ ধরে এগিয়ে আসছে। এই ছবিটি হাজার হাজার মানুষকে অনুপ্রাণিত করেছে।
বেলজিয়ামের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী গাই ভারহফস্ট্যাড টুইটারে ছবিটি শেয়ার করে লেখেন, “এমনটাই ঘটে যখন আপনি শরণার্থীদের রক্ষা করেন”। তিনি সেই ছোট্ট মেয়েটির উদ্দেশ্যে লেখেন, “বেলজিয়ামে তোমাকে স্বাগত”। ছবিটি বিশ্বব্যাপী হাজার হাজার মানুষের সঙ্গে একাত্ম হয়ে উঠেছে। তাঁরা আশীর্বাদ করেছিলেন এই ছোট্ট মেয়েটিকে এবং আশাও রাখেন যে সে বেলজিয়ামে একটি ভাল এবং আরও শান্তিপূর্ণ জীবন পাবে।
এদিকে বেলজিয়ামের প্রধানমন্ত্রী আলেকজান্ডার ডি ক্রু এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, গতকালের ভয়াবহ বিস্ফোরণের পর পাকিস্তানের সঙ্গে আকাশপথে সবরকম যোগাযোগ বন্ধ রেখেছে। তবে তিনি এও বলেন, আফগান শরণার্থীদের উদ্ধারের কাজ অব্যাহত থাকবে। এক আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদন অনুসারে, বেলজিয়াম কাবুল থেকে প্রায় ১৪০০ জনকে সরিয়ে নিয়ে এসেছে। যদিও সকলকে সরিয়ে নিয়ে আসা সম্ভব হয়নি।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার কাবুলের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছে দুটি আত্মঘাতী বিস্ফোরণে মার্কিন সেনা-সহ ১০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ১৫ শিশু এবং মহিলাও আছেন। ইসলামিক স্টেট-খোরাসান এই হামলার দায় স্বীকার করেছে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন