সাপের মাথায় মণি! এমনটা শুনলেই আমাদের কল্পনায় ভেসে ওঠে রূপকথার গল্প, দৈত্য-দানো, পক্ষীরাজ ঘোড়া সবকিছু। শৈশবে সকলেই পড়েছি, সাপের মাথায় নাকি থাকে ঝলমলে রত্ন বিশেষ। দুর্মূল্য এই রত্ন। সেখান থেকে নাকি আলো পর্যন্ত ঠিকরে বেরোয়।
তবে কল্পনার জগৎ ছেড়ে বাইরে বেরোলে কিন্তু এই ঘটনা আর চাক্ষুস করা হয়ে ওঠে না আমাদের কাছে। বয়স বাড়লে শৈশবের স্মৃতি হয়েই থেকে যায় পুরো বিষয়টা। আমাদের চারপাশে ঝোপে ঝাড়ে, চিড়িয়াখানায় এত সাপ দেখি, কোথাও তো মণি দেখতে পাওয়া যায়না। নিজে না হলেও অন্য কারোর মুখেও তো এমন অভিজ্ঞতার কথা শোনা যায় না।
আরও পড়ুন
লাখ লাখ টাকা ওয়াশিং মেশিনে, করোনাকে জব্দ করতে গিয়ে নিজেই বিপাকে যুবক
ঘটনা কি তাহলে পুরোটাই একটা কল্পনার মিথ? আসলে তা নয়। আসলে এই মণি হল সাপের বিষের কঠিন রূপ। সাপের বিষ তৈরি হয় একটি গ্রন্থিতে। সেখান থেকে বিষ নির্গত হয়ে সাপের দাঁতে এসে জমা হয়। কখনও কখনও বিষ নির্গত না হতে পারলে সেই বিষ জমে কঠিন স্ফটিকাকার হয়ে যায়। সেটাই লোকের কাছে সাপের মণি!
এই জমাট বাঁধা বিষ কিন্তু খুব একটা কঠিন নয়, বরং তলতলে প্রকৃতির। এর রং কুচকুচে কালো। কোনোভাবেই এই জমাট বাঁধা বিষ থেকে আলোর দ্যুতির ছটা ছড়ায় না। পুরোটাই একটা মিথ। মানুষের কল্পনা মাত্র।
অনেক সময় ভণ্ড লোকেরা সাপের খোলসের মধ্যে অন্য রং বেরংয়ের পাথর রেখে দেয় বা সাপের মাথার কাছে নিয়ে এসে। মানুষকে বোঝানোর চেষ্টা করে তা আসলে সাপের মণি হিসেবে। একদম ই নয়।
মানুষের সেই আদিম কল্পনাকে ভিত্তি করেই আজও এমন লোক ঠকানো কারবার চলে। ভুয়ো পাথর এনে নাগমণির রত্ন বলে চালানোর চেষ্টা করা হয়। সাপের মত সরীসৃপকে ঘিরে প্রাচীনকাল থেকে যে রহস্যময়তা তৈরি হয়েছে, সেই প্রভাব থেকে আজও মানুষ বেরিয়ে আসতে পারেনি।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন