মাত্র ১৬ বছরেই বিয়ে-সংসার, নিজের পড়াশুনা চালিয়ে যেতে পারেন নি তিনি, সাধ ছিল পড়াশুনা চালিয়ে যাওয়ার, কিন্তু স্বামী সেনাবাহিনীতে কর্মরত থাকার দরুণ তাই বেশির ভাগ সময় তাকে বাইরে থাকতে হত। সন্তান মানুষ থেকে সংসার সামলানো, সবটাই একার হাতে সামলে গেছেন তিনি। হঠাৎ করেই একটা সুযোগ সামনে আসে, তখন মহিলার বয়স ৮৯। এই বয়সেও হাল না ছেড়ে একবার চেষ্টা করে দেখতে চেয়েছিলেন তিনি। আর তাতেই কেল্লাফলে। ৮৯ বছর বয়সে ক্যানসারের মতো মারণ রোগের সঙ্গে লড়াই করার পাশাপাশি তিনি তাঁর স্বপ্নপূরণ করেন।
ফ্লোরিডার জন ডোনোভানের এই কাহিনী একেবারেই চমকে ওঠার মতই। জন ডোনোভান সম্প্রতি সাউদার্ন নিউ হ্যাম্পশায়ার ইউনিভার্সিটি থেকে অনলাইনে ইংরেজি এবং ক্রিয়েটিভ রাইটিংয়ে ওপর তিনি ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি বলেন, ‘আমি যখন হাইস্কুল থেকে স্নাতক স্তরে পড়তে চেয়েছিলাম, তখন আমাকে কলেজে পড়াশুনা করানোর টাকা পরিবারের ছিল না। আমার ছয় সন্তান বড় হওয়ার পর এবং আমার স্বামীর মৃত্যুর পর, আমি আমার পড়াশোনা আবার শুরু করার সিদ্ধান্ত নিই। তখনই জানতে পারলাম আমার ক্যান্সার হয়েছে। সেই দিকে না তাকিয়ে নিজের লক্ষ্যে অবিচল থেকে ডিগ্রি অর্জনের চেষ্টা করি এবং অবশেষে সফল হই’।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তাঁর হাতে বেশি সময় নেই। তখন বয়স প্রায় ৮০ বছর। কিন্তু তিনি তাতেও হাল ছাড়েননি। তিনি চিকিৎসককে জানালেন, এটা আমার স্বপ্ন, আমি স্নাতক হতে চাই। মহিলা আবার তাঁর পড়াশুনা শুরু করলেন। ৮৪ বছর বয়সে, তিনি তার ৪ বছরের স্নাতক ডিগ্রি সম্পন্ন করেন।
ডোনোভানের হাঁটতে সমস্যা হচ্ছিল, তাই কলেজ তাকে ‘স্নাতক ডিগ্রি’ প্রদানের জন্য দেওয়ার জন্য তার বাড়িতেই একজন প্রতিনিধি পাঠায়। ক্যাপ ও গাউন পরে ডিগ্রি নিয়ে উচ্ছ্বসিত তিনি। কলেজ তার ইনস্টাগ্রাম পেজে মহিলার জীবন যুদ্ধের কাহিনী ছবি সহ পোস্ট করেছে। ছবিটি এখন ভাইরাল। সকলেই ডোনোভানের প্রশংসায় পঞ্চমুখ।
ডোনোভান সেই দিনগুলোর কথা মনে করে একটি বইও লিখছেন, তিনি মানুষকে বলতে চেয়েছেন, প্রতিদিন নতুন কিছু শিখুন। স্বপ্নকে সফল করুন। আপনি ব্যর্থ হলেও হাল ছাড়বেন না, আঁধারের পর আলো আসতে বাধ্য।