সদ্যোজাতকে হারিয়ে অন্য শিশুদের স্তন্যদুগ্ধ দান করলেন মা

পাম্প করে স্তন্যদুগ্ধ বের করে আনা শারিরীক ভাবে যথেষ্ট কষ্টকর। পাশাপাশি সন্তান হারানোর দুঃখ তো রয়েছেই। তবু ছেলের জন্মের নির্দিষ্ট যে তারিখ ছিল, সেদিনই ৫০০ আউন্স দুধ সদ্যোজাতদের জন্য 'মিল্ক ব্যাঙ্কে' দান করেন সিয়েরা।

পাম্প করে স্তন্যদুগ্ধ বের করে আনা শারিরীক ভাবে যথেষ্ট কষ্টকর। পাশাপাশি সন্তান হারানোর দুঃখ তো রয়েছেই। তবু ছেলের জন্মের নির্দিষ্ট যে তারিখ ছিল, সেদিনই ৫০০ আউন্স দুধ সদ্যোজাতদের জন্য 'মিল্ক ব্যাঙ্কে' দান করেন সিয়েরা।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

এক নয়, দুই নয়, একেবারে ৬৩ দিন ধরে পাম্প করে স্তন্য দান করায় অনলাইনে ‘পরী’ (এঞ্জেল) বলে অভিহিত হয়েছেন এক মার্কিন মহিলা। নিজের সদ্যোজাত সন্তানের মৃত্যুতে শোকে পাথর হয়ে ছিলেন ওই মহিলা। নিজেই জানান, জন্মের কয়েক ঘন্টা পরেই মারা যায় তাঁর ছেলে।

Advertisment

নীলসভিলের বাসিন্দা সিয়েরা স্ট্র্যাংফেল্ড এবং তাঁর স্বামী লি যখন জানতে পারেন তাঁদের দ্বিতীয় সন্তান আসতে চলেছে, তখন তাঁরা সিদ্ধান্ত নেন, ছেলের নাম রাখবেন স্যামুয়েল। কিন্তু গর্ভাবস্থা চলাকালীনই তাঁরা জানতে পারেন তাঁদের ছেলের ট্রিসোমি ১৮ বা এডওয়ার্ডস সিনড্রোম আছে, যা একটি বিরল জিনগত রোগ। অতিরিক্ত ক্রোমোজোম নিয়ে শিশুটি জন্মগ্রহণ করে। এই রোগের এখনও কোনও চিকিৎসা নেই পৃথিবীতে।

Advertisment

বাবা-মা সন্তানকে জীবিত দেখতে চান। তাই নির্ধারিত তারিখের আগেই জরুরি অস্ত্রোপচার করে বের করে আনা হয় স্যামুয়েলকে। জন্মানোর কয়েক ঘণ্টা পরই মারা যায় শিশুটি।

মর্মান্তিক বেদনা চেপে রেখে অন্য নবজাতকদের সিয়েরার মাতৃদুগ্ধ দান করার সিদ্ধান্ত নেন দম্পতি। তিনি নিজের ফেসবুক পোস্টে জানিয়েছেন, তাঁর মেয়ে পোর্টারের জন্মের সময় একই অনুদানের উপর নির্ভর করেছিলেন বলে এবার স্তন্যদানের সিদ্ধান্ত নেন তিনি।

তাঁর এই পোস্ট সম্প্রতি ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। পাম্প করে স্তন্যদুগ্ধ বের করে আনা শারিরীক ভাবে যথেষ্ট কষ্টকর। পাশাপাশি সন্তান হারানোর দুঃখ তো রয়েছেই। তবু ছেলের জন্মের নির্দিষ্ট যে তারিখ ছিল, সেদিনই ৫০০ আউন্স দুধ সদ্যোজাতদের জন্য 'মিল্ক ব্যাঙ্কে' দান করেন এই মার্কিন নাগরিক। যদিও তিনি লিখেছেন যে এমন অনেক দিন গেছে যখন তিনি তাঁর নিজের সিদ্ধান্তের বিষয়ে সন্দিহান হয়েছেন, কিন্তু ছেলের কথা ভেবে পিছিয়ে যান নি। "দুর্বলচিত্ত কারোর পক্ষে দুধ পাম্প করে বের করা সম্ভব নয়। এবং সন্তান হারালে তা আরোই কষ্টকর," লিখেছেন তিনি।

ফেসবুকে তিনি আরও লেখেন, "সেদিন হাসপাতালের প্যাসেজ দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময়ও মনে হচ্ছিল, আমি যেন সেরে উঠছি। এবং আমি জানি (কারণ আমি টের পেয়েছিলাম) যে স্যামুয়েল আমার সঙ্গেই ছিল।"

তাঁর পোস্টের প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে অসংখ্য বাবা-মা সিয়েরাকে ধন্যবাদ জানিয়ে মানুষের 'মিল্ক ব্যাঙ্ক'-এর প্রয়োজনীয়তার দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।

viral breast milk সিয়েরার পোস্টের প্রতিক্রিয়ার একাংশ

স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমকে সিয়েরা জানান, "আমি গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারি, স্যামুয়েল আসার আগে আমার আশেপাশের কেউই জানত না ট্রিসোমি ১৮ কী। এর ফলে যদি এক-দু'জনও শিক্ষা লাভ করে থাকেন, তাহলে আমার কাজ আমি করেছি বলে মনে করব।"

'পিপল' ম্যাগাজিনকে সিয়েরা বলেন, "আমরা স্যামুয়েলকে কথা দিয়েছিলাম যে ওর কথা সবাইকে বলব, কিন্তু তা যে সারা দেশে এভাবে ছড়িয়ে যাবে, তা ভাবিনি। আমাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে ওর নামে একটি সংস্থা স্থাপন করা, নাম হবে 'স্মাইলিং ফর স্যামুয়েল'। আমাদের স্বপ্ন, ওর গল্পটাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া।"

Read the full story in English

viral