ঘুরতে যাওয়ার ইচ্ছে কার না থাকে? আর যদি ছোটবেলা থেকেই সেই ঘুরে বেড়ানোর ইচ্ছে একদিন সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে আরও বেশি করে প্রকাশ পায় তাহলে তো ক্যা বাত। ছোট থেকে ঘুরে বেড়ানোর অদম্য ইচ্ছে আর তার সঙ্গেই অজানাকে জানার চেষ্টা - বাহিরমুখো করে তুলেছিল ব্লগার নীলাঞ্জন দাসকে। নিজের অজানা গল্পই তিনি জানালেন ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলায়।
কেমন আছ নীলাঞ্জন?
ভাল, খুবই ভাল। আমি তো উৎসাহের চোটে একটা ব্লগ করতে করতেই এসেছি। ( হাসি )
নীলাঞ্জন নাকি নীল, এই যে তোমার চ্যানেলের নাম Nil Vs Nil - এটা কেন?
এটা সত্যি কথা বলতে গেলে নীল আমার ডাক নাম। কিন্তু এই যে চ্যানেলের নামটার কথা জিজ্ঞেস করছ, সেটা আমার জীবনের গল্প। বলতে পারো, এটা আমার সঙ্গে আমার প্রতিদিনের লড়াই। সেটাই আমি তুলে ধরার চেষ্টা করি, তাই এই নাম।
যখন প্রথম এটা শুরু করেছিলে, তখন আশেপাশের মানুষের প্রতিক্রিয়া কিরকম ছিল?
সেটা খুব অস্বস্তির ছিল প্রথম দিকে। রাস্তা দিয়ে একটা ক্যামেরা নিয়ে কথা বলতে বলতে যেতাম, লোকজন অনেক কিছুই ভাবত। কেউ কেউ তো বাবা মা কে এসে জিজ্ঞেস করেছিল যে ছেলে কী কাজ করে? ও এরকম এদিক ওদিক ঘুরে বেড়ায়...
আর তারপর তোমার বাবা মায়ের উত্তর ঠিক কেমন ছিল?
সত্যি কথা বলছি, আমার বাবা মা এবং ভাই - এই তিনজন সত্যি আমার সাপোর্টে। ওরা না থাকলে কোনওদিন, আমার বাইরে বেরোনো হত না। আমাকে বাড়ি থেকে ধাক্কা দিয়ে দিয়ে বের করিয়েছে ওরা। ভাই বলত, যা তো বাইরে তাহলেই দেখবি হবে।
এদিক ওদিক অনেক জায়গায় ঘুরে বেড়াও, আজ পর্যন্ত কোন জায়গা সবথেকে বেশি ভাল লেগেছে?
গ্রামের দিক আমার খুব ভাল লাগে। যেকোনও গ্রামে যেতে আমি খুব ভালবাসি। আর যদি নির্দিষ্ট জায়গা বলতে চাও তাহলে সুন্দরবন খুব ভাল লেগেছে। তারপর ধর, হুগলি জেলার অনেক জায়গায় গিয়েছি সেখানকার মানুষ খুব ভাল। আমার আজ পর্যন্ত খারাপ অভিজ্ঞতা নেই।
একজন ব্লগার হিসেবে তোমার ড্রিম ডেস্টিনেশন কী?
( হেসে ) শুনতে অবাক লাগলেও, দার্জিলিং। আমার খুব যাওয়ার ইচ্ছে! মাঝে মধ্যেই যখন ভিডিও দেখি তখন খুব ভাল লাগে। আর ভাবি কবে যাব।
তোমার ব্লগে কী এমন আকর্ষণীয় থাকে যে লোকজনের এত পছন্দ হয় সেই ভিডিও?
এটা বলতে পারো যে আমি আমার ভিডিওতে বেশি কিছু এডিট করি না। একদম রও সবকিছু দেখাই। মানে, যদি আমি রাস্তায় পরেও যাই তাহলেও সবাই দেখে। সেটার সঙ্গে বোধহয় সকলে কানেক্ট করতে পারে। আমি সবকিছু পরিষ্কার রাখতে চাই ব্লগে, ব্যাস! এটাই।
এই যে তোমার চ্যানেলে পুজো নিয়ে এত ব্লগ, এই আগ্রহ টা কোথা থেকে?
আমি গতবার থেকেই পুজো নিয়ে এত ব্লগ শুরু করেছি। হ্যাঁ, দুর্গা পুজো আমার জীবনে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িয়ে আছে। সেটা নিয়ে কোনও প্রশ্নই নেই। আগের বার আমি নিজে থেকেই সেইসব প্যান্ডেলে গেছিলাম। এবার প্রায় ২০০ টার বেশি পুজো প্যান্ডেল থেকে আমাকে ডেকে পাঠিয়েছে। তো এটা একটা পাওয়া বলতে পারো।
নিজেকে বিখ্যাত মনে হয় এখন?
একেবারেই না! আমি এখনও কিছুই না। যেটুকু লোকজন চিনতে পারে অনেকেই এসে আমার সঙ্গে কথা বলে। আবার কেউ কেউ ব্লগে আসতেও চায়। আমি তাদের সাদরে আমন্ত্রণ জানাই। বলি, চলে আসো কোনও সমস্যা নেই।
ব্লগার হিসেবে কিছু টিপস?
দেখো, সত্যি বলতে গেলে পকেট খালি রেখে ব্লগিং শুরু করা যায় না। আগে থেকে ব্যাক আপ রাখতে হয়। সেটা না রাখলে একেবারেই এটা শুরু করা উচিত নয়। আর শুধু পেশা হিসেবে নিতে শুরু করলে খুব মুশকিল। এই রাস্তায় সফলতা সহজে আসে না। তাই হাল ছাড়লে, ভেঙে পড়লে চলবে না। নেশা বানিয়ে নিতে হবে, তাহলেই ভাল।
ইউটিউবার না হলে আর কী হতে?
স্বপ্ন দেখা তো খারাপ নয়। আমার ইচ্ছে ছিল WBCS হব। কিন্তু সেটা আর হয়ে ওঠে নি। তবে হ্যাঁ মানুষের জন্য কাজ করার ইচ্ছে আছে। সেটা একেবারেই কোনও রাজনৈতিক রঙের ওপর ভড় করে নয়। বরং নিজের চেষ্টায় এটা করতে চাই।