ডিজিটাল প্লাটফর্মে মারাত্মক জনপ্রিয়তা। নিজের অভিনয় দক্ষতা এবং সাবলীল সংলাপে রাহুল মন কেড়েছেন দর্শকদের। যদিও বা অভিনয়ের শখ ছিল অনেকদিনই - কিন্তু মঞ্চ ছেড়ে ইউটিউবের পর্দায় কতটা কাঠখড় পুড়িয়েছেন, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে সেই গল্পই শোনালেন সকলের পছন্দের রাহুল দে।
কেমন আছ রাহুল?
ভাল, অবশ্যই! ভাল থাকতেই হবে।
ইউটিউবার হওয়ার ইচ্ছে কখন থেকে অথবা কী ভেবে?
সত্যি কথা বলতে গেলে, আমার ইউটিউবের প্ল্যানিং কোনোদিনও ছিলই না। তবে কালের পরিবর্তনে, যখন নেট দুনিয়া উন্নত হল তখন আমি ভাবলাম সবার এত ট্যালেন্ট দেখতে পাচ্ছি, আমি আমার প্রতিভা কেন দেখাব না। তাই ড্যান্স চ্যানেল দিয়ে শুরু করেছিলাম, পরে দেখলাম এটা দিয়ে বেশি গ্রোথ হচ্ছে না তাই কমেডি চ্যানেল শুরু করলাম।
অভিনয় দক্ষতা নিয়ে তো কোনও প্রশ্নই নেই, এর গোপন রহস্য কী?
( হেসে ) আসলে অভিনয়ের শখ আমার চিরকালই আছে। থিয়েটার করেছি, নাটক করেছি অনেক। সেখান থেকেই শুরু। তাই অভিনয় ভাল কিনা জানি না, তবে এর সঙ্গে যোগাযোগ অনেকদিনের।
থিয়েটারের অভিনয় এবং ইউটিউবের অভিনয় - পার্থক্য কীভাবে বোঝাবে?
দুটো আলাদা। থিয়েটারের অভিনয় ভীষণ কঠিন। টেক হয় না, শট কাটার জায়গা নেই। সেখানে ইউটিউব অনেকটা সোজা। সেখানে নিজের মত করে অভিনয় করা যায়। মাঝে মধ্যে ওভার অ্যাক্টিংও করা যায় ( হাসি )।
তুমি নিজেই ভিন্ন চরিত্রে অভিনয় কর, নারী পুরুষ দুটোই - কিরকম প্রতিক্রিয়া পাও?
সত্যি কথা বলতে গেলে, প্রতিক্রিয়া হরেকরকম আসে। কিন্তু ভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করার বিষয়টা অনেকেই দারুণ ভাবে নিয়েছেন। তারা এমনও বলেন, যে কোনও মেয়েকে দিয়ে অভিনয় করিও না। তোমাদেরটাই ন্যাচারাল লাগছে। আর বাদ বাকি নেতিবাচক মন্তব্য তো থাকবেই। এখনও এই সমাজে একজন মেয়ে ছেলে সাজলে তাকে সবাই বাহবা দেয়। কিন্তু একজন ছেলে যদি মেয়ে সাজে কিংবা টিপ পরে, তাকে অনেক কথাই শুনতে হয়।
তোমার কাছে ক্রিঞ্জ কনটেন্ট কোনটা?
দেখো, সবার পছন্দ কিন্তু আলাদা। তোমার আমার মধ্যে ভিন্নতা রয়েছেই। তবে হ্যাঁ, জোর করে হাসানো এটা আমার একদম ভাল লাগে না। কেউ কেউ ভীষণ সীমা অতিক্রম করে যায় তো এটা না করলেই ভাল।
বাবা - কে উদ্দেশ্য করে অনেক ভিডিও বানিয়েছ, তোমার বাবা কী প্রতিক্রিয়া দেন সেই ভিডিও দেখে?
( হেসে ) এহ! আমার বাবা একদম এরকম নয়। বাবা ভীষণ বন্ধুর মত। আর সত্যি বলতে বাবা একেবারেই আমার ভিডিও আমার সামনে দেখে না, আড়ালে দেখে। তখন যদি কিছু খারাপ লাগে, সেটা পরে জানায় যে এরকম না করলেও হত।
নিজের ভিডিও নিজে দেখো?
সেরকম ভাবে দেখা হয় না। কারণ এডিটের সময় এতবার দেখা হয় যে পরে আর ইচ্ছে হয় না। আবার অনেক সময় এমন ভুল চোখে পরে, যে হাপিত্যেশ করতে হয়। যে এটা কি করে ফেললাম।
সিনেবাপ বনাম কিরণ দত্ত - সেই সময় তোমায় দারুণ সক্রিয় দেখা গেছে , কী বলবে?
আমার কাছে যেটা ভুল সেটা ভুল। একটা ভুল বার্তা চারিদিকে পৌঁছচ্ছে সেটা থামানো খুব দরকার। আমিও সেটাই করেছি। আমার অডিয়েন্স জানে যে আমি যেটা বলছি সেটা ঠিক, উল্টোদিকের ক্ষেত্রেও তাই। সেই ভুল ভাঙ্গা দরকার ছিল। কারণ ইউটিউবে ছেলেমেয়েরা ১৩/১৪ থেকে ২৮ বছর এর মধ্যেই বেশি। তারা ভুল কিছু শিখবে। এটা ঠিক নয়।
ইউটিউবার না হলে কী হতে?
আমার ইউটিউবার হওয়ার ইচ্ছেই ছিল না। সবসময় ব্যবসার ইচ্ছে ছিল। সেটা এখনও আছে। ইউটিউব হঠাৎ করে চলে এসেছে। বাই প্রফেশন এটাকে আরও আমায় বাড়াতে হবে। প্রোডাকশন লাগবে তার জন্য, তবে হ্যাঁ ব্যবসা অবশ্যই করব।
অনেকেই বলে, রাহুল কথা বলতে গিয়ে বড্ড উত্তেজিত হয়ে পরে - কতটা সত্যি?
( হাসি ) সেটা একটু হয় বইকি! আসলে এমন কিছু টপিক নিয়ে কথা বলতে শুরু করলে তখন আমার উত্তেজনাটা একটু বেড়ে যায়। ওই আর কি, একটু ঝাপাঝাপি করে ফেলি তখন।
বোকাচন্দ্র নামটা বদলে রাহুল দে হল কেন?
আসলে আমার ঐ নামটা পছন্দই ছিল না। অল্পবয়স ছিল তাই তাড়াহুড়ো, ওই উচ্ছাসের বশে দিয়ে ফেলেছিলাম। আর ইনস্টাগ্রাম, সোশ্যাল মিডিয়ায় রাহুল দে এই নামই ছিল - তাই সব জায়গাতে বদলে ফেলেছি।