scorecardresearch

চালক ঘাটতিতে ধুঁকছে ট্রাম, সমস্যা মেটাতে কী উদ্যোগ কর্তৃপক্ষের?

ট্রামের রুট বাড়ানোর ভাবনায় সরকার। তাই চলছে চালক তৈরির কাজ।

Tramways starts training session for staff to plug driver shortage , চালক ঘাটতিতে ধুঁকছে ট্রাম, সমস্যা মেটাতে কী উদ্যোগ কর্তৃপক্ষের?
কলকাতার ট্রাম

সদ্য সার্ধশত বছর পেরলেও ভাল নেই কলকাতার গর্ব ট্রাম। কমতে কমতে তিলোত্তমায় মাত্র তিনটি রুটে চলছে দূষণনিয়ন্ত্রণ এই যানটি। কিন্তু, অদূর ভবিষ্যতে সে চলাও থমকে যেতে পারে। চালকের অভাবে ধুঁকছে ঐতিহ্যের ট্রাম। সমস্যা মেটাতে তাই উদ্যোগী পশ্চিমবঙ্গ পরিবহণ নিগম। ট্রামের গতি বজায় রাখতে সংস্থার অভিজ্ঞ কর্মীদের চালক হওয়ার প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু হয়েছে। এসপ্ল্যানেড ট্রাম ডিপোতে গত বুধবার থেকে সিনিয়র ট্রাম চালকরা এই প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন।

আপাতত দিনে দু’টি ব্যাচে চলছে প্রশিক্ষণপর্ব। সকাল বিকেল পাঁচঘন্টা করে দুটি ব্যাচে ট্রাম চালানো শিখছেন সংস্থার কর্মীরা। একটি নির্দিষ্ট জায়গা থেকে ট্রাম চালানো শুরু করে তা থামানো সহ নানা খুঁটিনাটি শেখানো হচ্ছে এই শিবিরে। আগামী বছর অবসর নেবেন ট্রামচালাক বাল্মিকী প্রসাদ। তিনিই শিক্ষকের ভূমিকায় রয়েছেন। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বাল্মিকী বলেছেন, ‘প্রতিদিন দুটি পাঁচ ঘণ্টার প্রশিক্ষণ শিবিরের আয়োজন করা হয়েছে। একটি সকালে এবং অন্যটি সন্ধ্যায়। প্রতিটি ব্যাচে ১৫ জন করে সদস্য রয়েছেন।’

ট্রাম কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত, সংস্থার ট্রাফিক ক্লিয়ারেন্স ইউনিটের ইচ্ছুক কর্মীদেরই ট্রাম চালানোর প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। ট্রাফিক ক্লিয়ারেন্স ইউনিট ট্রামের ট্র্যাক পরিবর্তন করে ট্রাম চলতে সাহায্য করে থাকে।

চালক প্রশিক্ষণের সময় ট্রামের অন্দরের ছবি।

চালকের প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন ট্র্যাফিক ক্লিয়ারেন্স ইউনিটের কর্মচারী আশিস সাহা বলেন, ‘আমরা যখন কলকাতা ট্রামওয়েতে যোগ দিয়েছিলাম তখন ভেবেছিলাম যে আমরাও একদিন ট্রাম চালাব। আজ আমাদের সেই স্বপ্নপূরণ হচ্ছে।’ আশিস সাহার মতো পঞ্চাশ পেরনো সাবির আলী গাজী এবং ভোলা প্রসাদ প্রশিক্ষণ নেওয়ার সুযোগ পেয়ে অত্যন্ত খুশি।

ট্রাম কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, চালক তৈরির জন্য কয়েক মাস আগে ট্র্যাফিক ক্লিয়ারেন্স ইউনিটের ইচ্ছুক ও যোগ্য কর্মচারী বাছাই করা হয়েছে। ৪২ জন কর্মচারীকে প্রাথমিকভাবে ট্রামচালক হিসাবে প্রশিক্ষণের জন্য নির্বাচিত করা হয়। এদের মধ্যে থেকে চূড়ান্তপর্বে ১২ জনকে বেচে নেওয়া হবে।

ক্যালকাটা ট্রামওয়েজ ইউজার অ্যাসোসিয়েশনের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে। সংগঠনের তরফে ইন্দ্রনীল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘চালক না থাকলে ট্রাম চলতে পারে না। বেশিরভাগ চালক আগামী দুই থেকে তিন বছরের মধ্যে অবসর নেবেন। বিগত কয়েক বছরে নতুন চালকদের নিয়োগ হয়নি। একদম চালাকবিহীন অবস্থার থেকে ট্র্যাফিক ক্লিয়ারেন্স ইউনিটের কর্মীদের চালকের প্রশিক্ষণ দেওয়ার উদ্যোগ ভাল।’

বর্তমানে কলকাতার বুকে তিনটি রুটে ট্রাম চলছে। আগেই টালিগঞ্জ থেকে বালিগঞ্জ এবং এসপ্ল্যানেড থেকে গড়িয়াহাট পর্যন্ত ট্রাম চলছিল। কিছুদিন আগে ধর্মতলা-শ্যামবাজার রুটে ফের ট্রাম চালাচল শুরু হয়েছে। আগামিতে এসপ্ল্যানেড থেকে খিদিরপুর সহ আরও চারটি রুটে ট্রাম চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ১৮৭৩ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি কলকাতায় প্রথম ট্রাম পরিষেবা চালু করা হয়। তারপরে ১৯০০ সালে ঘোড়াচালিত ট্রাম বদলে হয় বিদ্যুৎ চালিত। যা চলেছিল শিয়ালদহ থেকে আর্মেনিয়ান স্ট্রিট পর্যন্ত। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি, কলকাতার সংস্কৃতির অবিচ্ছিন্ন অংশ ট্রাম ১৫০ বছর পূর্ণ করেছে।

Stay updated with the latest news headlines and all the latest Westbengal news download Indian Express Bengali App.

Web Title: %e0%a6%9a%e0%a6%be%e0%a6%b2%e0%a6%95 %e0%a6%98%e0%a6%be%e0%a6%9f%e0%a6%a4%e0%a6%bf%e0%a6%a4%e0%a7%87 %e0%a6%a7%e0%a7%81%e0%a6%81%e0%a6%95%e0%a6%9b%e0%a7%87 %e0%a6%9f%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a6%be