এ যেন বলিউড (Bollywood) অভিনেতা অজয় দেবগনের (Ajay Devgan) সাম্প্রতিক হিন্দি ছবি 'শয়তান'-এর (Shaitaan) গল্প। এবার তন্ত্র সাধনার খপ্পরে পরে বাড়ি থেকে চুপিসারে চম্পট দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রীর? বিষয়টি এখনও স্পষ্ট না হলেও কানাঘুঁষো চলছে। পুলিশও কোমর বেঁধে তদন্তে নেমেছে। যদিও এখনও পর্যন্ত নাবালিকার কোনও হদিশ মেলেনি। কান্নায় ভেঙে পড়েছে পরিবার।
পুরাতন মালদার এক প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ীর বাড়ির এই ঘটনা। নিখোঁজ ছাত্রীর পরিবারের অভিযোগ, তন্ত্রসাধক অথবা নারী পাচার চক্করের খপ্পরে পরতে পারেন তাঁদের মেয়ে। পুরাতন মালদা পুরসভার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের মঙ্গলবাড়ি মহানন্দা কলোনিতে থাকতেন ওই তরুণী। ওই স্কুলছাত্রীর রহস্যজনকভাবে নিখোঁজের ঘটনায় তদন্তে নেমেছে পুলিশ। ঠিক কী কারণে ওই ছাত্রী নিজের বাড়ি থেকে উধাও হয়ে গেলেন, তা নিয়ে চর্চা বেড়েই চলেছে এলাকাজুড়ে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নিখোঁজ ছাত্রীর বয়স সাড়ে ১৭ বছর। তাঁর বাবা পেশায় ব্যবসায়ী। মা গৃহবধূ। মেয়েটি মালদা শহরের একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুল থেকে এবার উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছে।
পুলিশ ও পরিবার সূত্রে খবর, সম্প্রতি অত্যাধিক ঈশ্বরভক্ত হয়ে উঠেছিলেন ওই তরুণী। নিজের আলাদা ঘরে বিভিন্ন দেব-দেবীর মূর্তি নিয়ে দিন কাটাতেন তিনি। বাড়ির সবাইকে নিরামিষ খাবার খেতেও বলেছিল মেয়েটি।
আরও পড়ুন- Kolkata Metro: গঙ্গার বুক চিরে ছুটছে মেট্রো, দুরন্ত সফরের অবাক করা নয়া তথ্যে তাজ্জব হবেন!
পরিবারের সদস্যরা অবশ্য তাঁর কথা মানেননি। তবে মেয়েটি নিজে বাইরে থেকে নিরামিষ খাবার কিনে খেত। রবিবার রাত ৩টা নাগাদ মেয়েটি নিজের বাড়ির দোতলা থেকে কাপড় বেয়ে নীচে নেমে উধাও হয়ে গিয়েছে বলে দাবি পরিবারের।
ওই ছাত্রীর বাবা বলেন, "রবিবার রাত তিনটে নাগাদ ও বাড়ি থেকে চলে গেলেও বিষয়টি পরের দিন সাকালে আমার নজরে আসে। মেয়ে একা আলাদা ঘরে ঘুমোতো। কিছুদিন ধরে ও নিরামিষ খাবার খাচ্ছিল। বাড়ির সবাইকে নিরামিষ খেতে বলছিল। এমনকী বাড়িতে রান্নার সব জিনিস পালটে দিতেও বলেছিল। এত কিছু একসঙ্গে পালটাতে গেলে বড় খরচের বিষয়। মেয়েকে বলেছিলাম, এই মুহূর্তে অত খরচ করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। সেকথা শুনে ও বাইরে থেকে খাবার কিনে খাচ্ছিল।"
তিনি আরও বলেন, "প্রথমে ভেবেছিলাম ও নিজের টাকা দিয়েই খাবার কিনে আনছে। কিন্তু সন্দেহ হওয়ায় আমি খাবারের দোকানে যাই। জানতে পারি, বাইরের কেউ UPI করে মেয়ের খাবারের বিল মেটাচ্ছে। মেয়ের কাছে কোনও UPI আইডি নেই। আমি ওই ID নম্বর নিয়ে আসি। আমার সন্দেহ, আমার মেয়ে কোনও চক্রের পাল্লায় পড়েছে। সম্প্রতি মালদার আরও একটি মেয়ে অর্থাৎ আমার মেয়ের বান্ধবী নিখোঁজ হয়ে গিয়েছে। মেয়েকে সুস্থ অবস্থায় ফেরত পেতে চাই। পুলিশের কাছে সেই আবেদন রাখছি।"
আরও পড়ুন- PM Modi On Ram Navami: বুধে রামনবমী, ভোট আবহে বাংলার পদ্ম কর্মীদের চাগাতে কী বললেন মোদী?
এদিকে, গত ১৪ এপ্রিল স্থানীয় মঙ্গলবাড়ি পুলিশ ফাঁড়িতে মেয়ের নামে মিসিং ডায়েরি করেছেন ওই ব্যক্তি। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুরাতন মালদা থানার পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, নিখোঁজ কিশোরীকে উদ্ধারে সব ধরনের পদক্ষেপ করা হচ্ছে। যোগাযোগ করা হচ্ছে জেলা ও রাজ্যের অন্যান্য থানার সঙ্গেও। বিভিন্ন জায়গায় শুরু হয়েছে তল্লাশিও।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, যে UPI ID নম্বরটি অভিযোগপত্রে দেওয়া হয়েছে, সেটি উত্তর ২৪ পরগনার বারাসত এলাকার একটি ব্যাঙ্কের। ১৯৮৮ সালে ওই অ্যাকাউন্টটি খোলা হয়েছে। নিখোঁজ ওই ছাত্রীর পরিবার যে দাবি করেছে সেটাও গুরুত্ব দিয়ে দেখছে পুলিশ।