২০২২ সালে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্থগিতাদেশ দিল সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি হিমা কুহেলি ও বিচারপতি রাজেশ বিন্দলের ডিভিশন বেঞ্চ। পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত এই নির্দেশই বহাল থাকবে। ফলে ধাক্কা খেল প্রায় সাড়ে ১২ হাজার শিক্ষকের নিয়োগ প্রক্রিয়া।
২০২২ সালের টেট পরীক্ষায় যাঁরা উত্তীর্ণ হয়েলেন, তাঁদের নিয়োগ প্রক্রিয়া ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছিল। প্রায় সাড়ে ১২ হাজার শিক্ষকের নিয়োগ প্রক্রিয়া চলছিল। এরই মধ্যেই ২০২০-২২ সালের ডিএলএড প্রশিক্ষণরতরাও নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নেওয়ার জন্য কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সিঙ্গল বেঞ্চে আবেদন করেছিলেন। আবেদনকারীদের যুক্তি ছিল, প্রশিক্ষণের কোর্স যে শেষ হয়নি বোর্ডের দোষে। এর জন্য তাঁরা দায়ী নন। তাই তাঁরাও ওই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে চান।
এই আবেদন শুনে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় নির্দেশ দেন, ২০২২ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় আবেদনকারীদেরও অংশ নিতে দিতে হবে। অর্থাৎ প্রশিক্ষণরত শিক্ষকরাও নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারবেন। সেই নির্দেশ পেয়েই ২০২২ সালের টেট উত্তীর্ণ প্রশিক্ষণরত শিক্ষকদের তথ্য জমা দিতে বলে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। পর্ষদের তরফে বলা হয়, টেট উত্তীর্ণরা স্নাতকোত্তরে কত নম্বর পেয়েছেন, তাঁরা বিএড প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কিনা, সেসব তথ্য জমা দিতে হবে। স্নাতকোত্তরে ৫০ শতাংশ নম্বর থাকতেই হবে।
২০২০ সালের প্রশিক্ষিতরা বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশের বিরোধিতা করে ফের কলকাতা হাইকোর্টে আবেদন করেন। তাঁদের দাবি ছিল, ২০২২ সালের প্রশিক্ষণরত শিক্ষকরা কোর্স শেষ না হলে কীভাবে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নেবেন? এই মামলা তখন বিচারপতি সুব্রত তালুকদারের ডিভিশন বেঞ্চে যায়। আবেদন শুনে ডিভিশন বেঞ্চ রায় দেয়, প্রশিক্ষণপর্ব পুরোপুরি শেষ না হওয়া অবধি নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নেওয়া যাবে না। তাই সেইসময় ২০২০-২২ সালের প্রশিক্ষণরত শিক্ষকদের নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিত হয়ে যায়।
এবার বিচারপতি তালুকদারের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জকে করে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করেন ২০২২ সালের উত্তীর্ণরা। এবার সেই মামলায় শীর্ষ আদালতের বক্তব্য, প্রশিক্ষণরত শিক্ষকরা আদৌ নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নেবেন কিনা সেটা আগে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। যতদিন এই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া না হচ্ছে, ততদিন নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিত থাকবে।