TMC Rally Today, Martyrs Day 21 July: বৃষ্টির মধ্যেও ২১ জুলাইয়ের সমাবেশ পুরোপুরি সফল, শহিদ সমাবেশ শেষে এমনই দাবি তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। এরই পাশাপাশি স্বভাবসিদ্ধ ঢঙে এদিন পেট্রোপণ্যের দাম বৃদ্ধি থেকে শুরু করে নানা ইস্যুতে বিজেপিকে তুলোধনা করেছেন তৃণমূলনেত্রী। দলের কর্মীদের আরও নমনীয় হতে বার্তা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। দলের জনপ্রতিনিধিদের মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে যেতে পরামর্শ তৃণমূলনেত্রীর। একইসঙ্গে দলে দুর্নীতিবাজদের কখনই রেয়াত করা হবে না বলেও এদিন কড়া বার্তা তৃণমূল সুপ্রিমোর।
একুশের মঞ্চে এদিন ভাষণের শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গেরুয়া শিবিরকে বিঁধতে এদিন আবারও কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলির অপব্যবহারের অভিযোগ তৃণমূল সুপ্রিমোর। তিনি এদিন বলেন, ”আমাদের মেরুদণ্ড সোজা, মাথা উঁচু করে চলি। ওদের মেরুদণ্ডে একদিকে ইডি, অন্যদিকে সিবিআই।” বিজেপি সব রাজ্যে সরকার ভাঙতে চাইছে বলেও এদিন অভিযোগ এনেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
কর্মসংস্থানের প্রশ্নেও এদিন বিজেপিকে আক্রমণ শানিয়েছেন তৃণমূলনেত্রী। তিনি এদিন বলেন, ”আমরা চাই চাকরি হোক, বিজেপি চায় চাকরি যাক। তাজপুরে পোর্ট হচ্ছে, আরও ১২ হাজার চাকরি হবে। মামলার জন্য চাকরি দেওয়া যাচ্ছে না।” চাকরি দুর্নীতি ইস্যুতে এদিন সিপিএমকেও নিশানা করেছেন তৃণমূলনেত্রী। তাঁর কথায়, ”সিপিএমের আমলে চাকরি বিক্রি হতো। ১০-১৫ লক্ষ টাকায় চাকরি বিক্রি করেছে সিপিএম।”
এছাড়াও মুড়িতে জিএসটি ইস্যুতে এদিন কেন্দ্রীয় সরকারের তুমুল সমালোচনা করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এব্যাপারে কেন্দ্রকে বিঁধে তৃণমূল সুপ্রিমো এদিন বলেন, ”মুড়িতেও জিএসটি, মানুষ খাবে কি? বিজেপির বন্ধুরা মুড়ি খাবেন না। আমাদের মুড়ি ফেরাও, নইলে বিজেপি বিদায় নাও।” এছাড়াও পেট্রোপণ্যের লাগাতার দাম বৃদ্ধি ইস্যুতেও এদিন মোদী সরকারকে তুলোধনা করেছেন মমতা। বিভিন্ন সময়ে রাজ্যের নানা এলাকায় তৃণমূলের নেতাদের একাংশের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ সামনে এসেছে।
এপ্রসঙ্গে একুশের শহিদ সমাবেশ থেকে দলনেত্রীর সাফ বার্তা, ”তৃণমূলের নামে টাকা তুললে থানায় যান। নিজেরাই থানায় ধরে নিয়ে যান।” এরই পাশাপাশি এদিন ফের একবার দেশের সুরক্ষা বাহিনীতে নিয়োগ নিয়েও কেন্দ্রের নয়া প্রকল্পের কড়া সমালোচনা করেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। এপ্রসঙ্গে কেন্দ্রকে দুষে তাঁর তোপ, ”লক্ষ-লক্ষ চাকরি ছাঁটাই করে এখন অগ্নিপথ প্রকল্প এনেছে। সেনাকে বঞ্চিত করে অগ্নিপথ প্রকল্প আনা হয়েছে। অগ্নিপথে না হেঁটে সেনায় লোক নাও।” আগামী বছরেই রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট। ঠিক তার পরের বছর ‘২৪-এ লোকসভা নির্বাচন। তার আগে এবারের একুশের সভা মঞ্চে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে একজোট হওয়ার ডাক মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের।
'জয় বাংলা দিচ্ছে ডাক, জয় ভারত বেঁচে থাক'
'২৪য়ে বিজেপির কারাগার ভাঙো, মানুষের সরকার আনো। ২৪য়ের ভোট হবে বিজেপিকে রিজেক্সনের (প্রত্যাখ্যানের)'।
'আমি চাই ভারতে একটাই স্বচ্ছ ও হিম্মতদার রাজনৈতিক দল থাকুক, সেটা তৃণমূল কংগ্রেস।'
'আমি চাই আমাদের নেতারা সাইকেল নিয়ে ঘুরুন, বিধায়করা রিক্সা করে ঘুরুন, চায়ের দোকানে বসুন। কিন্তু সেটা নিজের চাকায় খাবেন। আমার কাছে দু'টো ঘটনা এসেছে। একুশে জুলাইয়ের নামে চাঁদা তোলা হয়েছে। মনে রাখবেন দলের নামে চাঁদা তোলা যাবে না। কাউকে তুলতে দেখলে থানায় দেবেন।'
১ সেপ্টেম্বর ব্লকে ব্লকে দুর্গাপুজোকে হেরিটেজ সিলমোহর দেওয়ার উদযাপন হবে।
'তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবস ২৮ অগস্ট, এবার রবিবার পড়েছে। তাই মেয়ো রোডে সমাবেশ হবে ২৯ তারিখ। ৯ অগাস্ট বিশ্ব আদিবাসী দিবস। ওইদিন মহরমও পড়েছে। আদিবাসী দিবসের অনুষ্ঠান সকাল ১১টার মধ্যে মিটিয়ে দেবেন। যাতে কোনও সংঘাত না হয়। ১৪ অগস্ট মধ্যরাতে মিড নাইট ফ্রিডম পালন করুন। ১৫ অগস্ট ঘরে ঘরে তেরঙা পতাকা তুলুন।'
'বাংলাকে বঞ্চনা করছে কেন্দ্র। কেন? বাংলায় তোমরা হেরেছ বলে। ১০০ দিনের টাকা জলদি দাও। প্রাপ্য দাও। গরিবের টাকা কেন আটকে রেখেছো? না হলেও দিল্লিতে গিয়ে ঘেরাও হবে। আমাদের ভয় দেখিয়ে লাভ নেই। বাংলা ভাঙার চেষ্টা কোরো না।'
মুড়িতে GST-র প্রতিবাদ মমতার। কেন্দ্রকে তুলোধনা। মঞ্চেই মুড়ি হাতে প্রতিবাদ।বললেন, 'আমাদের মুড়ি ফিরিয়ে দাও। দই, চিঁড়েতেও GST, তাহলে নকুলদানাতে কত GST? বিজেপির বন্ধুরা মুড়ি খাবেন না? আমাদের মুড়ি ফেরাও, না হলে বিজেপি বিদায় নাও।'
'দেউচা পাঁচামিতে ১ লক্ষ লোকের চাকরি হবে। প্রকল্প হলে বিদ্যুতের দাম কমবে। তাজপুরের বন্দর হচ্ছে। ১২ হাজার চাকরি হবে। শিক্ষকদের ১৭ হাজার চাকরি প্রস্তুত, কিন্তু মামলার জন্য আটকে রয়েছে। বিজেপি বাধা দিচ্ছে। বলছে দুর্নীতি হয়েছে। আরে সিপিএম আমলে তো চাকরি বিক্রি হত। ১০-১৫ লক্ষ টাকায় বিক্রি করা হত। সব জানি। সিপিএম কর্মীদের স্ত্রীরা সবাই কী দক্ষতায় স্কুলে চাকরি পেয়েছিলেন? কাজ করলে ভুল হবে। ভুল থাকলে শুধরে নেওয়া হবে। দুর্নীতি হলে শাস্তি হবে।'
'বিজেপি রাজ্যে সরকার ভাঙতে চাইছে। বাংলাতেও চেষ্টা করেছিল। কিন্তু একুশ ওদের জবাব দিয়েছে। মনে রাখবেন তৃণমূল থাকলেই স্বাস্থ্যসাথী, পেনশন, ভাতা সহ সরকারু উন্নয়নমূলক প্রকল্পের সব সুযোগ, সুবিধা পাবেন।'
'এত বৃষ্টি যখন আপনাদের সরাতে পারেনি, তখন মানুষের বৃষ্টি ২৪য়ে ওদের ভাসাবে। আমাদের লড়বার ক্ষমতা আছে। ওদের নেই। ওদের মেরুদণ্ড ব্যাঁকা। আর বিজেপির মেরুদণ্ড ইডি, সিবিআই।'
২১য়ের মঞ্চে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
'বাংলা থেকে লোকসভায় তৃণমূল জিতবেই। আর জোর গলায় বলছি অন্য রাজ্য থেকেই এবার তৃণমূলের সাংসদরা জয় পাবেন।'
'পদাধিকারীরা প্রাক্তন হয়। কিন্তু কর্মীরা প্রাক্তন হয় না। এটাই কর্মীদের বড় পাওনা। তাই দলের পদ নিয়ে রেষারেষি করবেন না। আগামিতে পঞ্চায়েত ও লোকসভাকে পাখির চোখ করে কাজ করুন। মনে রাখবেন বিজেপির কাছে তৃণমূল মাথা নত করবে না।' বললেন অভিষেক
'প্রকল্প হবে, বাংলার নামে হবে। না হলে কেন্দ্রের টাকা আমাদের দরকার নেই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যদি দেড় কোটি মহিলাকে লক্ষ্ণীর ভাণ্ডর দিতে পারে, রাস্তার উন্নয়ন করতে পারে, তাহলে উনিই সব দেবেন আপনাদের। এই মডেলই অব্যাহত রাখতে অনুরোধ করব।'
''নিজের করে খাওয়ার জায়গা তৃণমূল নয়। তৃণমূল নির্লোভ, নির্ভয়ে করতে হবে। ঠিকাদারি করতে হলে ওটাই করন, তৃণমূল করবেন না। এই তৃণমূলে গদ্দার, মীরজাফর, ধান্দাবাজ নেই। এই তৃণমূল লোহার মত শক্ত।''
কালীঘাট থেকে ধর্মতলার সভাস্থলের উদ্দেশ্যে রওনা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের।
'এবারের ২১যের সমাবেশের ভিড় অতীতে সব রেকর্ড ছাপিয়ে গিয়েছে। বৃষ্টি যখনই হয়েছে তখনই বিরোধী দলগুলো ধরাশায়ী হয়েছে। এবারের ২১শেও সেই ইঙ্গিত দিচ্ছে।' বললেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারম সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
'ওরা বলছে আদিবাসী মহিলাকে রাষ্ট্রপতি করলেই আদিবাসী, দলিতদের উন্নয়ন। আরে পরিবারের একজনকে পায়েস দিয়ে অন্যদের মেরে ফেলে কীসের উন্নয়ন। আদিবাসী উন্নয়ন বুঝতে গেলে আপনাকে জঙ্গলমহলে যেতে হবে। আমারা শুধু বলব মমতা তুমি এগিয়ে চল, আমরা তোমার সঙ্গে আছি।' বললেন কলকাতার মেয়র তথা রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম।
জনসমুদ্র ধর্মতলা। বক্তব্য রাখছেন নেতা, মন্ত্রীরা। তার মধ্যেই শুরু তুমুল বৃষ্টি।
ছবি: শশী ঘোষ।


'বাংলায় খেলা শুরু হয়ে গিয়েছে, দেশের মধ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই সফল নেত্রী', একুশের সভামঞ্চে তৃণমূল সুপ্রিমোকে দরাজ সার্টিফিকেট তৃণমূলের তারকা সাংসদ শত্রুঘ্ন সিনহার। 'হুইলচেয়ারে বসেই বিজেপিকে হারিয়েছেন মমতা', বললেন বিহারীবাবু।
'বাংলায় খেলা শুরু হয়ে গিয়েছে, দেশের মধ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই সফল নেত্রী', একুশের সভামঞ্চে তৃণমূল সুপ্রিমোকে দরাজ সার্টিফিকেট তৃণমূলের তারকা সাংসদ শত্রুঘ্ন সিনহার।
অপেক্ষায় জনজোয়ার, কিছুক্ষণেই কালীঘাটের বাড়ি থেকে ধর্মতলায় ২১শের সভাস্থলের উদ্দেশ্যে রওনা দেবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
যতদিন রাজনীতি করবেন তৃণমূলনেত্রীর পাশে থাকার আশ্বাস জিটিএ চেয়ারম্যান অনীত থাপার। 'গোটা পাহাড় দিদির সঙ্গে আছে', ধর্মতলায় একুশের সভায় বললেন মোর্চা নেতা।
২১ জুলাইয়ের কর্মসূচি বানচালের চেষ্টার শেষ নেই, অভিযোগ তৃণমূল সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তৃণমূলের শহিদ সভার দিনেই সোনিয়া গান্ধীকে ইডির ডেকে পাঠানোর পিছনে ষড়যন্ত্র রয়েছে বলে দাবি সুদীপের। আজই রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ফল প্রকাশ। বেছে-বেছে এই দিনটিতেই অন্য বড় পদক্ষেপের পিছনে আসলে ২১ জুলাইয়ের সভা থেকে নজর ঘোরানোর চেষ্টা বলে সোচ্চার সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়।
সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তৃতা চলাকালীন ধর্মতলায় একুশের সভামঞ্চে হাজির তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
কেন্দ্রের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ডাক বর্ষীয়ান তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়ের। 'রাজ্যের বকেয়া টাকা কিছুতেই মেটাচ্ছে না কেন্দ্রীয় সরকার', বারবার দিল্লিতে দরবার করেও লাভ হচ্ছে না বলে অভিযোগ সাংসদের। একইসঙ্গে দেশের সুরক্ষা বাহিনীতে নিয়োগে কেন্দ্রের অগ্নিপথ প্রকল্পেরও সমালোচনায় সৌগত।
বিগত বছরগুলিতে ২১য়ের মঞ্চে নানা চমক দেখা গিয়েছে। বাম, কংগ্রেস থেকে একাধিক হেভিওয়েট যোগ দিয়েছিলেন জোড়া-ফুলে। দু’বছর পর হওয়া তৃণমূলের শহিদ দিবসের মঞ্চে কী এবারও সেই চমকের সম্ভাবনা রয়েছে? অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বুধবার ধর্মতলায় প্রস্তুচি দেখতে এসে বলেছিলেন ‘২১ মানেই চমক।’ আর এ দিনই কলকাতায় পৌঁছেছেন বিজেপির উত্তরপ্রদেশের দুই সাংসদ মানেকা ও বরুণ গান্ধী। গান্ধী পরিবারের এই দুই পদ্ম সাংসদকে ঘিরেই আপাত নানা জল্পনা চলছে। পড়ুন বিস্তারিত
উত্তরবঙ্গের পাহাড় থেকে ধর্মতলার একুশের সভায় যোগ দিতে তৃণমূলের বহু কর্মী-সমর্থকরা এসেছেন। ধামসা, মাদল সঙ্গে নিয়ে ধর্মতলার সভায় জোড়াফুলের কর্মী-সমর্থকরা।