রাতারাতি মণ্ডল সভাপতির পদ চলে গিয়েছে ২২ জনের। আর তা জানতে পেরেই ক্ষোভে ফেটে পড়লেন মণ্ডল সভাপতিরা। এদিন দুপুরে চুঁচুড়া কারবালা মোড়ে হুগলি জেলা বিজেপি কার্যালয়ে তুমুল বিক্ষোভ দেখালেন একদল বিজেপি কর্মী। তাঁদের অভিযোগ হুগলি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি তুষার মজুমদার ও স্থানীয় সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় এর বিরুদ্ধে। অভিযোগ, আগামী লোকসভায় যাতে বিজেপির ফল খারাপ হয় সেই জন্য সেটিং করে এইভাবে সংগঠনে গণ-বদল করে দেওয়া হয়েছে।
বিজেপির হুগলি সাংগঠনিক জেলার অধীনে ৩০টি মণ্ডল শাখা আছে। মাত্র ৯ মাস আগে রীতিমতো ভোটাভুটি করে মণ্ডল সভাপতি নির্বাচিত করেন বিজেপি জেলা ও রাজ্য নেতৃত্ব। এবং এই মণ্ডল সভাপতিদের নেতৃত্বেই এবারে পঞ্চায়েত নির্বাচনে গ্রামে গঞ্জে শাসকদলের সঙ্গে লড়াই করে গিয়েছেন বিজেপি কর্মীরা। এদিন ৩০ কিলোমিটার দূরে সুদূর ধনেখালি থেকে চুঁচুড়াতে সদলবলে এসেছিলেন ধনেখালি ১ নম্বর মণ্ডলের বিদায়ী সভানেত্রী তনুশ্রী দাস। সঙ্গে ছিলেন চুঁচুড়া ৫ নম্বর মণ্ডলের বিদায়ী সভাপতি মনতোষ দাস সহ আরও কিছু বিদায়ী মণ্ডল সভাপতি। এদিন জেলা কার্যালয় তাঁরা হুগলি জেলা সভাপতি তুষার মজুমদারের কাছে কৈফিয়ত দাবি করেন। তবে জেলা সভাপতি এদিন অফিসে আসেননি। যা জানতে পেরেই ক্ষোভ উগড়ে দেন তাঁরা।
দলীয় পতাকা কাঁধে নিয়েই তাঁরা জেলা নেতৃত্বের বিরুদ্ধে স্লোগান তোলেন। তনুশ্রী দাস বলেন, 'গত ২৪ জুলাই আমাদের জেলা থেকে প্রোগ্রাম দেওয়া হলো থানা ঘেরাও করার জন্য। আমরা করলাম। দুপুরের পর দেখি মণ্ডল প্রেডিডেন্টের পদ থেকে আমায় সরিয়ে দেওয়া হলো। আমরা জানতে পারলাম না আমাদের কী কারণে সরানো হলো? দলীয় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সাংগঠনিক পদে মোটামুটি ৩ বছর থাকা যায়। আর আমাদের ৯ মাসেই মেয়াদ শেষ! অথচ যতবার রাজ্য নেতৃত্ব এসেছে ততবার বলা হয়েছে এই কমিটি লোকসভা অবধি থাকবে।'
পদ খোয়ানো তনুশ্রীদেবীর প্রশ্ন, 'আমার ধনেখালিতে তৃণমূলের সঙ্গে চোখে চোখ রেখে লড়াই করেছি। ৬৫টা প্রার্থী দিয়েছি এই বাজারে। তার মধ্যে গ্রামসভায় ৬টি আসন জিতেছি। তাহলে কেন সরিয়ে দেওয়া হলো?'
এরপরই 'সেটিং' তত্ত্ব আওড়ান তনুশ্রী। বলেন, 'আসলে লোকসভায় বিজেপিকে হারিয়ে দেওয়ার চক্রান্ত করছে দলের কিছু নেতৃত্ব। তারাই সেটিং করে আমাদের সরিয়ে নিষ্ক্রিয়দের দায়িত্ব দিয়েছে। আমরা পদ্মকে চিনি, মোদিজিকে ভালবাসি। তাই বিজেপিকেই ভোট দেব। ৫ তারিখ হয়তো আমরা মার খাবো, পথেঘাটে শারীরিক নিগ্রহের শিকার হবো। যা কপালে আছে তাই হবে।'
সব শুনে জেলা সভাপতি তুষার মজুমদার জানিয়েছেন, এটা স্বাভাবিক এই মণ্ডল সভাপতিদের আমিই নির্বাচিত করেছিলাম। তাঁদের রাগ, অভিমান, ক্ষোভ থাকতেই পারে। এটা একটা সাংগঠনিক প্রক্রিয়া। দলের সিদ্ধান্ত। ওনাদেরকে পাশে রেখেই আমরা আগামী দিনে লড়াই চালাবো। কোন সেটিং এর প্রশ্নই নেই।