পেটে থেকে উদ্ধার হওয়া পেরেক, কয়েন। ছবি- প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়
আজব কাহিনী। পেট কেটে বার করা হল ২৫০টি পেরেক ও ৩৫টা কয়েন। তাজ্জব ডাক্তারবাবুরা। এই অস্ত্রপচার ঘিরে শোরগোল পড়ে গিয়েছে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।
Advertisment
মঙ্গলকোটের কৃষ্ণবাটি গ্রামের বাসিন্দা শেখ মইনুদ্দিনরা পাঁচ ভাই।বছর ৩৮ বয়সী মইনুদ্দিন পরিবারের সেজ ছেলে। প্রায় ১৫-১৬ বছর ধরে তিনি মানসিক রোগে ভুগছেন। বর্ধমান হাসপাতালের মানসিক বিভাগে নিয়মিত মইনুদ্দিনের চিকিৎসা হয়। গত শনিবার সকাল থেকে মইনুদ্দিন কিছু খাওয়া দাওয়া করছিলেন না। মাঝে শুধু একগ্লাস দুধ পান করেছিল সে। কেন খিদে নেই? জবাবে মইনুদ্দিন পরিবারের লোকজনকে হাবে ভাবে বোঝায় যে তাঁর পেটে ব্যথা হচ্ছে।
এরপর চিকিৎসার জন্য পরিবার সদস্যরা মঙ্গলবার মইনুদ্দিনকে বর্ধমান শহর সংলগ্ন একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে নিয়ে যান। পেট টিপে দেখে ডাক্তারবাবু মইনুদ্দিনের পেটের এক্সরে করার পরামর্শ দেন। সেই মতো পরিবারের লোকজন এক্সেরে করার।
এক্সেরে প্লেট দেখে ওই ডাক্তার বাবু একপ্রকার নিশ্চিৎ হন মইনুদ্দিনের পেটে পেরেক আছে। যা বার করার খরচ একলক্ষ টাকা। কিন্তু বিশাল খরচ করার সামর্থ না থাকায় পরিবারের লোকজন বুধবার সকালে মইনুদ্দিনকে বর্ধমান হাসপাতালে নিয়ে যায়। সঙ্গে সঙ্গেই তাঁকে ভর্তি করায় হয় হাসপাতালে। রাতেই হয় অস্ত্রপচার। মইনুদ্দিনের পেট থেকে উদ্ধার হয়েছে ২৫০টি পেরেক, ৩৫টি কয়েন ও বেশ কিছু পাথর কুচি। আপাতত সুস্থ আছেন মইনুদ্দিন।
Advertisment
অস্ত্রপচারের পর হাসপাতালের বিছানায় শেখ মইনুদ্দিন
মইনুদ্দিনের দাদা সেখ মসলিনউদ্দিন জানিয়েছেন, তাঁর ভাই মইনুদ্দিন মানসিক রোগী হওয়ায় এমন কাণ্ড ঘটিয়ে বসেছে। আমরা ভাবতে পারিনি বর্ধমান হাসপাতালের চিকিৎসকরা এত সহজ ভাবে ভাইয়ের পেট থেকে এত পেরেক, কয়েন সব অপারেশন করে বার করে ফেলবেন। ভাইকে প্রাণে বাঁচানোর জন্য বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকদের আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন মইনুদ্দিনের পরিবার।
বর্ধমান হাসপাতালের সুপার ডা: তাপস ঘোষ বলেছেন, 'মইনুদ্দিন আপাতত সুস্থ আছেন। এই অপারেশন বর্ধমান হাসপাতালের এক অভুতপূর্ব সাফল্য।'