Advertisment

হাসপাতালে বিরিয়ানির বিল ৩ লক্ষ! কোটি টাকার বেশি ভুয়ো বিলে হুলুস্থুল

সুপারের কাছে বকেয়া অনুমোদনের জন্য বিলগুলি জমা পড়ে। যা খতিয়ে দেখতে গিয়েই ভয়ঙ্কর গড়মিল নজরে পড়েছে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
3 lakhs biryani bill at katwa hospital

হাসপাতালে বিরিয়ানি কেলেঙ্কারি। ছবি- প্রজীপ চট্টোপাধ্যায়

ভোজন রসিক বাঙালির বিরিয়ানির নাম শুনলেই জিভে জল আসে। দাম সেখানে নেহাতই তুচ্ছ বিষয়। কিন্তু, তা বলে বিরিয়ানির বিল ৩ লক্ষ টাকা। তাও আবার সেই বিরিয়ানি খেয়েছেন কাটোয়া মহকুমা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

Advertisment

চমকের আরও বাকি আছে। আসবাব, গাড়ি, ফার্মেসির জিনিস সহ নানা কেনাকাটায় হাসপাতালের বিল প্রায় কোটি টাকা ছাড়িয়ে গিয়েছে। যা দেখে চোখ ছানাবড়া হাসপাতাল সুপারের৷ এই ধরনের প্রায় ৮১টি ভুয়ো বিল সুপারের কাছে জমা পড়েছে বলে খবর। যা নিয়েই জোর চর্চা শুরু হয়েছে।

দিন কয়েক আগেই কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে সুপার পদে দায়িত্ব নিয়েছেন সৌভিক আলম। তাঁর কাছে বকেয়া অনুমোদনের জন্য বিলগুলি জমা পড়ে। যা খতিয়ে দেখতে গিয়েই ভয়ঙ্কর গড়মিল নজরে পড়েছে। তারপরই হুলুস্থুলকাণ্ড।

কাটোয়া হাসপাতাল সূত্রে খবর, যেসমস্ত বিলগুলি নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে সেই সময় কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালের সুপার ছিলেন ডাঃ রতন সাশমল। তিনি ২০১৫ এপ্রিল মাসে কাটোয়া হাসপাতালের সুপার পদে যোগ দিয়েছিলেন। ২০২০ সালে সেপ্টেম্বর মাসে তিনি বদলি হয়ে অন্যত্র চলে যান। তাঁর কার্যকালে দাখিল করা বিলগুলির মধ্যেই রয়েছে, হাসপাতালের স্টাফেদের বিরিয়ানি খাওয়া, গাড়ি ভাড়া, সবুজায়নের জন্য বৃক্ষচারা কেনা, আসবাবপত্র, ওষুধ ও ইলেকট্রনিক্স যন্ত্রপাতির কেনার খরচ। উল্লেখ্যযোগ্য যে, ২০১৯ -২০২০ আর্থিক বছরের শেষ দিক এইসবকিছুই সরবরাহ করেছেন একজন ঠিকাদার। তাঁর নাম কিংশুক ঘোষ।

publive-image
কাটোয়া হাসপাতাল

যদিও বিলগুলির নথিপত্রের অসঙ্গতি দেখে পেমেন্ট আটকে দেয় স্বাস্থ্য দফতর। এযাবৎ ওই ৮১টি বিল মিলে এক কোটি টাকার উপর পেমেন্ট আটকে রয়েছে। নতুন করে গড়মিল দেখায় হাসপাতাল সুপার রোগী কল্যাণ সমিতির বৈঠক ডাকেছিলেন।

ভূয়ো বিলের বিষয়টি তদন্তে ধরা পড়ার পর অভিযুক্ত ঠিকাদারদের কিংশুক মণ্ডল মুখ খুলতে চাননি। তবে হাসপাতালে বিরিয়ানি সরবরাহকারী ইজারাদার পুষ্পেন্দু মাঝি বলেন, 'বিল ভুয়ো যদি দেওয়া হবে তাহলে তখন কাটোয়া হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কেন ওয়ার্ক ডান বলে ছাড়পত্র দিয়েছিল?'

কাটোয়া হাসপাতালের রোগী কল্যান সমিতির অন্যতম সদস্য তথা কাটোয়ার বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়

শনিবার বলেন, 'ভুয়ো নথি দিয়ে কোটি টাকার বিল তুলে নেওয়ার চেষ্টা চলছিল। বিল যাচাই কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে আমরা তা জানতে পেরেছি। ভুয়ো বিল জমা দেওয়ার ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ জানানো হবে।'

জানা যায় যে, ২০২১ সালের নভেম্বর মাসে তৎকালীন সুপারের নেতৃত্ব রোগী কল্যান সমিতির বৈঠকে যাচাই কমিটি গঠন করা হয় বিলগুলি পরীক্ষার জন্য। তখন ৩ ঠিকাদারের বকেয়া বিলের নথিপত্রে অসঙ্গতি ধরা পড়েছিল। বর্তমানে ঘটনার তদন্ত করছেন পূর্ব বর্ধমান জেলা উপ স্বাস্থ্য আধিকারিক(২) সূবর্ণ গোস্বামী। তিনি এদিন বলেন, 'কাটোয়া হাসপাতালে বিল সংক্রান্ত অভিযোগের সত্যতার প্রমাণ পাওয়া গেছে। যদিও ওই বিলগুলির এখনও টাকা মেটানো হয়নি। তদন্ত প্রক্রিয়া শেষ হলে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে বিস্তারিত রিপোর্ট পাঠিয়ে দেওয়া হবে।'

East Burdwan West Bengal Katwa
Advertisment