শঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। রাজ্যে ৩৫৬ ধারা প্রয়োগের কোনও পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। এ আশ্বাস দিলেন আইনজীবী অরুণাভ ঘোষ। তবে নগরপাল রাজীব কুমারকে নিয়ে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তা নেহাৎই অবাঞ্ছিত বলে মনে করেন তিনি।
আরও পড়ুন, Mamata Banerjee Dharna Live: ৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মিটিং-মিছিল চলবে, ঘোষণা মমতার
এদিকে রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসনের সম্ভাবনা এখনই না থাকলেও, তা একেবারে অসম্ভব নয় বলে মনে করেন আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। তাঁর মতে, পরিস্থিতি যাতে সেদিকে যায়, তারই চেষ্টা চলছে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে।
রবিবার যেভাবে রাজীব কুমারের বাড়িতে হানা দেওয়ার সময়ে সিবিআই আধিকারিকদের হেনস্থা করা হয়েছে, তা একেবারেই ঠিক নয় বলে মনে করেন কংগ্রেস এবং সিপিএম, দুই রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত এই দুই বর্ষীয়ান ও অভিজ্ঞ আইনজীবী। বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের মতে, "রাজ্য সরকারের পুলিশ যেভাবে সিবিআই আধিকারিকদের আটক করে রেখেছে, তাতে তারা মুখোমুখি সংঘর্ষ চায় এ কথা স্পষ্ট। ৩৫৬ ধারা যদি এখনই প্রয়োগ না করা হয়, তাহলে ৩৫৫ ধারা প্রযুক্ত হতেই পারে।"
তবে অরুণাভ ঘোষ মনে করেন, ৩৫৫ বা ৩৫৬, কোনও ধারাই এখনই প্রয়োগ করা হবে না। রাজ্য সরকার যে হাইকোর্টের নির্দেশের কথা বলছে, সে সম্পর্কে অরুণাভবাবু বললেন, "একটা মামলায় কেউ যদি আগাম জামিন নেয়, তাহলে পরবর্তী আরেকটা মামলাতেও সেই আগাম জামিন লাগু হতে পারে না। রাজীব কুমারের কাছে যদি নথি না থাকে, তাহলে সেটাই তিনি জানাতে পারেন। যদি নথি থাকে সে কথাই তিনি বলতে পারেন। ওঁর বাড়িতে সিবিআই হানা দিয়েছিল দুর্নীতি বিরোধী মামলায়, কোনও সাধারাণ মামলায় নয়।"
কিন্তু কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী যে এ ইস্যুতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে দাঁড়িয়েছেন! সে প্রসঙ্গে অরুণাভ ঘোষের বক্তব্য, "আইন কিন্তু অন্য কথা বলে। আমি আইনের কথা বলছি।"
রবিবার বিকেলে লাউডন স্ট্রিটে নগরপাল রাজীব কুমারের বাড়িতে আচমকাই হানা দেয় সিবিআইয়ের একটি দল। এই নিয়েই সংঘর্ষের সূ্ত্রপাত। পুলিশ কমিশনারের বাড়িতে সিবিআইয়ের ঢোকার রাস্তা আটকাতে হাজির হন কলকাতা পুলিশের শীর্ষ কর্তারা। রাস্তার মধ্যেই পুলিশের সঙ্গে সিবিআই আধিকারিকদের বাদানুবাদ চলে। এরপর কয়েকজন সিবিআই আধিকারিককে জোর করে গাড়িতে তুলে শেক্সপিয়র সরণি থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। পরে অবশ্য তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন, সারদা কাণ্ডের গোপন তথ্য জানা যাবে রাজীব কুমার গ্রেফতার হলে? কী বলছে সিবিআই?
এ ঘটনার জেরে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রবিবার রাত থেকেই ধর্নায় বসেছেন। আইনজীবী তথা সিপিআইএম নেতা বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্যের আশঙ্কা, এই ধরনের প্রদর্শন সংঘর্ষের মাত্রা আরও বাড়িয়ে ফেলবে, যার পরিণতি হতে পারে ৩৫৫ ধারা। সাদা বাংলায়, এই ধারা জারি হলে রাজ্যকে "বাহ্যিক আগ্রাসন" এবং "আভ্যন্তরীণ ঝামেলা" থেকে রক্ষা করার দায়িত্ব বর্তায় কেন্দ্রের ওপর। আরও সাদা বাংলায়, এর পরের ধাপই হলো ৩৫৬ ধারা - রাষ্ট্রপতি শাসন।