নিয়োগ চেয়ে টানা চারদিন পথেই পড়েছিলেন ২০১৪ টেট উত্তীর্ণ নন-ইনক্লুডেড চাকরিপ্রার্থীরা। তবে নিয়োগ তো দূর অস্ত, চাকরির আশ্বাস পর্যন্ত মেলেনি। উল্টে গতরাতে হঠাৎ পুলিশি তৎপরতায় বাধ্য হয়েই আন্দোলস্থল ছেড়ে চলে যেতে হয়েছে। অনেককে পুলিশ গ্রেফতার পর্যন্ত করেছে।

গত সোমবার দুপুর থেকে আন্দোলনের শুরু। হঠাৎ সল্টলেকের করুণাময়ী মোড় চত্বরে শ’য়ে-শ’য়ে তরুণ-তরুণীর দল ভিড় বাড়াতে শুরু করে। পুলিশ কিছু বুঝে ওঠার আগেই সেখানে জড়ো হয়ে যান হাজারখানেক বিক্ষোভকারী। মুহূর্তে জনপ্লাবন নেমে আসে করুণাময়ী মোড়ে।



করুণাময়ীতেই রয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অফিস। আন্দোলনকারীরা সেই অফিসের সামনেই রাস্তায় বসে পড়েন। শুরু হয় স্লোগানিং। ‘চাকরি চাই’, এই স্লোগানে ঝড় ওঠে করুণাময়ী মোড়ে। পুলিশ বারবার আন্দোলনকারীদের সরে যেতে অনুরোধ করে। তবে এতে কোনও ফল হয়নি। বরং সময় যত এগিয়েছে ততই পোক্ত হয়েছে আন্দোলন।


এরই মধ্যে টেট আন্দোলনকারীদের সঙ্গে গিয়ে দেখা করতে শুরু করেন বেশ কিছু শিক্ষক। তাঁরাও আন্দোলকারীদের পক্ষে রয়েছেন বলে জানান। চোয়াল শক্ত করে দাঁতে দাঁত চেপে চাকরির জন্য লড়াইয়ের স্বর আরও চড়া করেন বিক্ষোভকারীরা। অনেক বিক্ষোভকারীই নিজের বাচ্চাদেরও নিয়ে যান আন্দোলনস্থলে। বাচ্চা কোলেই তাঁদের প্রতিবাদ জারি রাখতে দেখা গিয়েছে।



গত চার দিনে বিরোধী প্রায় সব দলের নেতারাই পৌঁছে গিয়েছিলেন করুণাময়ীতে। টেট আন্দোলনকারীদের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন তাঁরা। তবে টানা এই আন্দোলনের জেরে সমস্যা বাড়ছিল। করুণাময়ীতে চাকরির জন্য চলা এই ধর্নার জেরে পাশে থাকা প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের কর্মীদের কাজে যাতে কোনও সমস্যা না হয় তা নিশ্চিত করতে ওই এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করায় পুলিশকে ছাড়পত্র দেয় কলকাতা হাইকোর্ট।

হাইকোর্টের এই নির্দেশের পরেই বাড়ে পুলিশি তৎপরতা। বৃহস্পতিবার সন্ধে থেকে মাইকিং করে আন্দোলনকারীদের সরে যেতে বলে পুলিশ। শেষমেশ মাঝরাতে শুরু হয় পুলিশি অপারেশন। গভীর রাতে আন্দোলকারীদের টেনে হিঁচড়ে সরিয়ে দিতে শুরু করে পুলিশ। অল্প সময়ের মধ্যেই গোটা করুণাময়ীর আন্দোলস্থল ফাঁকা করে দেয় পুলিশ।