Advertisment

হস্টেল সুপারের ব্যাপক মারে ৪ ছাত্রীর হাত ভাঙল-কানের পর্দা ফাটল, তুমুল উত্তেজনা

বিষয়টি নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ারও কথা জানিয়েছেন ওই স্কুল কর্তৃপক্ষ।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
4 students hands are broken due to hostel super in malda, হস্টেল সুপারের ব্যাপক মারে ৪ ছাত্রীর হাত ভাঙল-কানের পর্দা ফাটল, তুমুল উত্তেজনা

পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদের মুখে চার ছাত্রী।

মহিলা হোস্টেল সুপারের নির্যাতনের শিকার হলেন চার নাবালিকা ছাত্রী। হোস্টেলে থাকা চার নাবালিকা ছাত্রীকে ঘর বন্ধ করে চড় মেরে কানের পর্দা ফাটিয়ে দেওয়া এবং হাত ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ উঠলো হোস্টেল সুপারের বিরুদ্ধে। আর এই ঘটনার চারদিন কেটে গেল স্কুল কর্তৃপক্ষ কোনও ব্যবস্থা না নেওয়ায় শুক্রবার অভিভাবকেরা ব্যাপক বিক্ষোভ দেখান। ঘটনাটি ঘটেছে পুরাতন মালদা থানার ভাবুক গ্রাম পঞ্চায়েতের রামমারডি হাইস্কুলে।

Advertisment

এদিন সকাল থেকেই ওই স্কুলের সামনে প্রায় একশ জন অভিভাবক বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। এরপর সংশ্লিষ্ট স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখান। হোস্টেল সুপারের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিও জানানো হয়। যদিও এই ঘটনার পর চার দিন কেটে গেল ওই স্কুলে হোস্টেল সুপার আসছেন না বলে জানিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দীপকচন্দ্র মুর্মু । বিষয়টি নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ারও কথা জানিয়েছেন ওই স্কুল কর্তৃপক্ষ।

শুক্রবার বিক্ষোভকারী অভিভাবকেরা জানিয়েছেন, গত রবিবার রামমারডি হাই স্কুলের ছাত্রীনিবাসের চারজন পড়ুয়া শৌচাগারে গিয়েছিল। সেই সময় তাদের শৌচাক্রিয়া করতে বাধা দেয় হোস্টেল সুপার। ষষ্ঠ এবং সপ্তম শ্রেণির চার ছাত্রী নিজেদের সমস্যার কথা জানালে আচমকাই ওই হোস্টেল সুপার তাদের ঘরের দরজা বন্ধ করে বেধড়ক মারধর করে। দুই ছাত্রীর কানে থাপ্পড় মেরে পর্দা ফাটিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাদের কান দিয়ে রক্ত বেরিয়েছে। আরও দুই ছাত্রীর হাত এবং কব্জি ভেঙ্গে দেওয়া হয়েছে। রবিবারের এই ঘটনার পর ওই ছাত্রীদের বাড়ির লোকেদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে দেওয়া হয়নি। কিন্তু গত তিনদিন ধরে ওই চার ছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাদের প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য নিকটবর্তী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। আর তারপর থেকেই শোরগোল শুরু হয়। বিষয়টি জানতে পেরেই শুক্রবার স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে ঘেরাও করেই বিক্ষোভ দেখান শতাধিক অভিভাব।

আক্রান্ত এক নাবালিকা ছাত্রী বলেছে, 'হোস্টেল সুপার বাথরুম পরিষ্কার করার কথা বলেছিল। নিয়মিত বাথরুম পরিষ্কার না করার জন্যই আমাদেরকে নির্যাতন চালাচ্ছিল। সেদিন ব্যাপক মারধর করে। আমার বাঁ হাতের কব্জি ভেঙে গিয়েছে। আর ও তিনজন ছাত্রী অসুস্থ রয়েছে। পরে আমরা অসুস্থ হলেই বাড়ির লোকরা জানতে পারে।'

এদিন বিক্ষোভকারী এক অভিভাবক চুমকি মুসহার বলেন, 'এই স্কুলের হোস্টেলে আমাদের মেয়েরা পড়ে। তাদের সেখানে থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু হোস্টেল সুপারের নির্যাতনের কথা এর আগেও শুনেছি। হোস্টেলের অধিকাংশ ছাত্রীদের দিয়ে সব সময় কাজ করায়। নিয়মিত খাবার দেওয়া হয় না। এদিন অন্যায় ভাবে ওই ছাত্রীদের মারধর করা হয়েছে। তারই প্রতিবাদ জানিয়ে এদিন প্রধান শিক্ষককে ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখিয়েছি। হোস্টেল সুপারের দৃষ্টান্তমূলক দাবি জানানো হয়েছে।'

রামমারডি হাই স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দীপকচন্দ্র মুর্মু জানিয়েছেন, হোস্টেল ও স্কুল চত্বরে সিসি ক্যামেরা রয়েছে। কিন্তু যে ঘরে ওই ছাত্রীদের মারধর করার অভিযোগ উঠেছে সেখানে কোনও সিসি ক্যামেরা নেই। ছাত্রীরা হোস্টেল সুপারের বিরুদ্ধে নালিশ জানিয়েছেন। এই ঘটনাটা যে ঘটেছে তা সত্যি। কিন্তু হোস্টেল সুপার এই ঘটনার পর থেকে এখনো পর্যন্ত স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে নি। এদিন অভিভাবকদের আশ্বস্ত করেছি এই ঘটনার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Malda Maldah
Advertisment