Uttarakhand Disaster: উত্তরাখণ্ডে ট্রেকিংয়ে গিয়ে ধসের কবলে মৃত্যু ৫ বাঙালি অভিযাত্রীর। সেই রাজ্যে প্রাকৃতিক দুর্যোগে এখনও পর্যন্ত ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে, নিখোঁজ শতাধিক। জানা গিয়েছে ৫ বাঙালি অভিযাত্রীর সঙ্গে একজন গাইড এবং ৪ জন পোর্টার ছিলেন। সেই ৪ পোর্টার ফিরে এলেও, নিখোঁজ গাইড। মৃত ৫ জনের মধ্যে ৩ জন বাগনানের বাসিন্দা আর বাকি দুই জনের একজন ঠাকুরপুকুর এবং অপর একজন রানাঘাটের বাসিন্দা। পরিবার সূত্রে খবর, ১১ অক্টোবর শেষবার তাঁদের সঙ্গে কথা হয়েছে। তারপর যোগাযোগ করেও ফোনে পাওয়া যায়নি ওই পাঁচ জনকে।
উত্তরাখণ্ডের বাগেশ্বর কন্ট্রোল রুম থেকে বৃহস্পতিবার ফোন করে পরিবারকে দুঃসংবাদ দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় স্তরে শুরু হয়েছে মৃতদেহ ফিরিয়ে আনার কাজ। যদিও ওই পাঁচ পরিবারের আবেদন, সরকার একটু উদ্যোগ নিয়ে মৃতদেহ ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করলে, তাঁদের একটু সুরাহা হয়। নবান্ন সূত্রে খবর, মুখ্যসচিব নিজে উত্তরাখণ্ড সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। পাশাপাশি উত্তরাখণ্ড এবং হিমাচলে পর্যটনে গিয়ে আটক এই রাজ্যের বাসিন্দাদের ফেরাতে তৎপর হয়েছে দিল্লির রেসিডেন্স কমিশনার।
উত্তরাখণ্ড বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর সূত্রে খবর, ১৪ তারিখ ওরা ৯ জন মিলে উত্তরাখণ্ডের হরশিল থেকে হিমাচলের ছিটকূলের উদ্দেশে রওয়ানা দিয়েছিলেন। ১৭ তারিখ থেকে আবহাওয়া খারাপ হতে শুরু করে। সেদিন থেকে অন্যদের সঙ্গে প্রশাসনের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। আর ১৮ অক্টোবর ধসের কবলে পড়েন এই অভিযাত্রীদের দল।
এদিকে, সেই দুঃস্বপ্নের স্মৃতি নিয়ে একাধিক পর্যটক নিজ উদ্যোগে রাজ্যে ফেরা শুরু করছেন। কেউ নৈনিতাল, কেউ কাঠগুদাম হয়ে হাওড়া ফিরছেন। তাঁদের মন্তব্য, ‘ভাগ্য সহায় না থাকলে এবং স্থানীয়রা সাহায্য না করলে অনেকেই প্রাণ হারাতেন। স্থানীয় পুলিশ এবং প্রশাসন দ্রুত গতিতে বিপর্যয় মোকাবিলা না করলে, এখনও হিমাচল এবং উত্তরাখণ্ডে আটকে থাকতেন অনেক বাঙালি।‘ যদিও আটক অনেক পর্যটকের খোঁজ এখনও মেলেনি। এমনটাই জানিয়েছে রাজ্যে ফেরা পর্যটকরা।
অপরদিকে, অতিমারীর অবসাদ কাটিয়ে একটু একটু করে ছন্দে ফিরছে পাহাড়। পুজোর আগে থেকেই ভিড় জমাতে শুরু করেছেন পর্যটকরা। টেলিপাড়ার তারকা-দম্পতি পায়েল দে (Payel De) ও দ্বৈপায়ণ দাসও (Dwaipayan Das) পরিবার নিয়ে গিয়েছিলেন দিন কয়েক নিভৃতে ছুটি কাটানোর জন্য। কিন্তু প্রকৃতির কোলে দু-দণ্ড জুড়নোর খোঁজে গিয়ে যে এমন বিপদে পড়তে হবে! তা বোধহয় স্বপ্নেও ভাবতে পারেননি পায়েল-দ্বৈপায়ণরা।
সে কী ভয়ংকর অবস্থা! পায়েলের কথায়, দু-দিন পাহাড়ের সৌন্দর্য উপভোগ করার পরই তৃতীয়দিন থেকে শুরু হল ভারী বৃষ্টি। কারেন্ট নেই গোটা পাহাড়-জুড়ে। লোডশেডিং। গিয়েছিলেন কালিম্পং থেকে ২১ কিলোমিটার দূরের একটি নির্জন গ্রামে। দুর্যোগ শুরু হল একদিন পর থেকে। চারিদিকে ঘুঁটঘুঁটে অন্ধকার। ফোনে চার্জ নেই। কারও সঙ্গে যোগাযোগও করতে পারছেন না। এদিকে সঙ্গে পরিবারের সবথেকে খুদে সদস্য অর্থাৎ পায়েল-দ্বৈপায়ণের ছেলে মেরাক। আর শ্বশুর-শাশুড়ি। নিরাপদে সকলকে নিয়ে বাড়ি ফিরতে পারলেই বাঁচেন, তখন এই একটা চিন্তাই মাথায় ঘুরছিল দু’জনের।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন