Advertisment

কলকাতার কাছেই সেরার সেরা চোখ ধাঁধানো অফবিট ৫ সমুদ্র সৈকত! কোনটায় যাবেন?

ভিড় এড়িয়ে কোলাহলমুক্ত পরিবেশে দিন কয়েক কাটাতে গেলে কলকাতার কাছের অনিন্দ্যসুন্দর এই ৫ সমুদ্র সৈকতের জুড়ি মেলা ভার।

author-image
Nilotpal Sil
New Update
5 Best Sea Beach Near Kolkata

অসাধারণ সমুদ্র সৈকতগুলিতে বেড়ানোর ষোলোআনা মজা উপভোগ করুন।

বাঙালির বেড়াতে যেতে কোনও বাহানা লাগে না। কর্মব্যস্ত জীবন থেকে দিন কয়েকের বিরতি নিয়ে অনেকেই ছুটে যান এদিন-ওদিক। ভ্রমণপ্রিয় বাঙালির একাংশের যেমন পছন্দ পাহাড় তেমনই অন্য অংশটির ঝোঁক সমুদ্র সৈকতে। তবে ইদানিং অনেকেই ভিড় ভাট্টা এড়িয়ে একটু নিরিবিলি এলাকা খোঁজেন। অনেকেরই লম্বা ছুটি ম্যানেজের উপায় নেই। এই বিশেষ প্রতিবেদন ভ্রমণপিপাসুদের সেই অংশটির জন্যই। শহর কলকাতার কাছাকাছি এমনই ৫টি চিত্তাকর্ষক সমুদ্র সৈকতের খোঁজ মিলবে এই প্রতিবেদনে। যে সি বিচগুলির অভূতপূর্ব সৌন্দর্য্য আপনাকে মুগ্ধ করে তুলবে। অফবিট এই টুরিস্ট স্পটগুলিতে দিন দিন পর্যটকদের আনাগোনা বাড়ছে ঠিকই, তবে এখনই সেগুলি দিঘা-পুরীর মতো অত ঘিঞ্জি হয়ে যায়নি।

Advertisment

১. জুনপুট:

কোলাহমুক্ত পরিবেশে সমুদ্র পাড়ের অনাবিল আনন্দের খোঁজ নিতে ছুটে যান জুনপুটে। নিরিবিলি এই নির্জন সমুদ্রতট আপনাকে এনে দিতে পারে দারুণ এক রিফ্রেশমেন্ট। অদ্ভুত এক রিল্যাক্স মুড আপনার ছুটির মুহূর্তগুলিকে করে তুলবে আরও রঙিন। পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথি শহরের খুব কাছেই রয়েছে এই জুনপুট। ভিড় এড়িয়ে একান্তে সময় কাটাতে জুনপুটের বেলাভূমি দিন কয়েকের বেড়ানোর জন্য একটি আদর্শ ডেস্টিনেশন হতেই পারে। কলকাতা থেকে জুনপুটের দূরত্ব ১৬০ কিলোমিটারের মতো। পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথি থেকে জুনপুট মেরেকেটে ১০ কিলোমিটার।

আরও পড়ুন- সি-বিচ যেন ঘরের মেঝে! কলকাতার কাছেই নিরিবিলি অপরূপ এই সমুদ্রতট

২. দক্ষিণ পুরুষোত্তমপুর:

অসাধারণ প্রাকৃতিক পরিবেশ এতল্লাটের। সি বিচ যেন ঘরের মেঝে। নিরিবিলিতে কাটাতে গেলে পূর্ব মেদিনীপুরের এই সমুদ্র সৈকতটির জুড়ি মেলা ভার। এখনও অনেক পর্যটকের কাছেই এই স্পটটি অজানা। তাই এখানে খুব বেশি হোটেল এখনও গড়ে ওঠেনি। তবে কয়েকটি ছোট হোটেল এবং ব্যাকপ্যাকার্স টেন্ট ক্যাম্পের ব্যবস্থা রয়েছে। ব্যাকপ্যাকার্স টেন্ট ক্যাম্পে খাওয়া-দাওয়ার বন্দোবস্ত এলাহি ঢঙে হয়ে থাকে। দুপুরেও যেমন পঞ্চব্যাঞ্জন সহযোগে খাবার পরিবেশন করা হয়, ঠিক তেমনই সন্ধেয় ক্যাম্পে থাকে বনফায়ারের ব্যবস্থা। সমুদ্রের ফুরফুরে হাওয়ায় ঝলসানো চিকেনে কামড়ের স্বাদ সত্যিই ভোলার নয়! এখানকার ব্যাকপ্যাকার্স ক্যাম্পে চারবেলা থাকা-খাওয় সমেত মাথাপিছু ১৫০০ টাকার কাছাকাছি খরচ পড়তে পারে। আগে থেকে বুকিং করে যাওয়াই ভালো।

আরও পড়ুন- দিঘা-পুরী কোন ছাড়! বাংলার চিত্তাকর্ষক এই সি-বিচই পুজোয় বেড়ানোর সেরা বাজি

৩. বাগুড়ান জলপাই:

এই সমুদ্র সৈকতটির বিশেষ একটি আকর্ষণ রয়েছে। এখানে জোয়ারের সময় যেমন তড়তড়িয়ে জল এগিয়ে আসে ঠিক তেমনই ভাঁটার সময় জল অনেকটাই যায় নেমে। সমুদ্র সৈকতে দাঁড়িয়ে থেকেই সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দেখার সুযোগ কিন্তু হারাবেন না। গোধূলি বেলায় পশ্চিম প্রান্তে সূর্য ঢলার অপরূপ ছবি চাইলে ক্যামেরাবন্দি করতেই পারেন। এই সমুদ্রতটের মায়াবী রূপ চোখে পড়ে বেলা পড়লেই। গোধূলি লগ্নে সি বিচের নজরকাড়া শোভা আপনাকে অদ্ভুত একটি রিল্যাক্স ফিল এনে দেবে। বাগুড়ান জলপাই সমুদ্র সৈকতটি খুব বিস্তৃত নয়। এটা একটা বড় খাঁড়ির মতো। সেই খাঁড়িই ঢুকে গিয়েছে গভীর সমুদ্রে। সমুদ্রতটে দাঁড়িয়েই দেখতে পাবেন ডিঙি নৌকার সারি, এছাড়াও দেখা মিলবে মাছ ধরার ট্রলারের। মুড রিফ্রেশ করতে অনেকেই নিরিবিলিতে বেড়াতে পছন্দ করেন। তাঁদের জন্য এই সমুদ্র সৈকত একেবারে পারফেক্ট।

আরও পড়ুন- কলকাতার খুব কাছে অপূর্ব এই সি বিচ, নিরিবিলি সাগরতটে লাল কাঁকড়ার লুকোচুরি

৪. বাঁকিপুট:

বিস্তৃত সাগরতটের গা ঘেঁষে সারি দিয়ে রয়েছে ঝাউগাছ। মূলত সমুদ্রের টানেই এতল্লাটে যান পর্যটকরা। ঝাউবনে দিনভর পাখির কলকাকলি গোটা পরিবেশেই একটা দারুণ মাদকতা এনে দেয়। ঘণ্টার পর কাটিয়ে দিতে পারেন সুমুদ্র ঘেঁষা ঝাউবনে। এছাড়াও উপরি পাওনা সাগরতট জুড়ে দাপিয়ে বেড়ানো লাল কাঁকড়ার দেখা পাওয়া। এককথায় বঙ্গোপসাগরের তীরে নিরিবিলিতে উইকেন্ড কাটানোর সেরার সেরা ঠিকানা হল এই বাঁকিপুট। বাঁকিপুটের গা ঘেঁষেই রয়েছে ইংরেজ আমলে তৈরি বাতিঘর। মন চাইলে সমুদ্রপাড় দিয়ে হাঁটা লাগিয়ে পৌঁছে যান দরিয়াপুরের বাতিঘরে। বাতিঘরের মাথায় উঠে গোটা বাঁকিপুটের সৌন্দর্য্য তারিয়ে তারিয়ে উপভোগের সুযোগ মিলবে। এছাড়াও এই এলাকাতেই রয়েছে সাহিত্যসম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের স্মৃতি বিজড়িত কপালকুণ্ডলার মন্দির। চাইলে সেখান থেকে একবার ঘুরে আসতে পারেন। দীঘা, মন্দারমণিও এই এলাকার খুব কাছে।

আরও পড়ুন- দিঘা-পুরী ভুলে যাবেন! অসাধারণ এই সি বিচ কলকাতার কাছেই, পুজোয় যাবেন নাকি?

৫. লক্ষ্মীপুর:

পাড়ি জমাতে পারেন কলকাতার কাছের এই কোলাহলহীন সমুদ্রতটেও। এই সমুদ্র সৈকতে এক বার গেলে মনে হবে ফিরে যাই বারবার। ঘুরে আসুন বকখালির কাছেই লক্ষ্মীপুর সমুদ্র সৈকত থেকে। কলকাতা থেকে এর দূরত্ব মেরেকেটে ১৩৬ কিলোমিটারের মতো। বঙ্গোপসাগরের নিরিবিলি এই তটের অপূর্ব শোভা মন ছুঁয়ে যাবে। ভিড় এড়িয়ে দিন কয়েকের এই সমুদ্রজাপন আপনার স্মৃতির পাতায় উজ্বল বর্ণে লেখা থাকবে। বকখালির কাছেই রয়েছে লক্ষ্মীপুর সমুদ্র সৈকত। এই সাগরতট লাগোয়া ছোট্ট গ্রামের অসাধারণ প্রাকৃতিক পরিবেশ মন কাড়বেই। বকখালি সি বিচ থেকে পায়ে হেঁটে মিনিট ২০ গেলেই পড়বে এই লক্ষ্মীপুর সমুগ্র সৈকত। অনেকে এই সি বিচকে ‘মিনি গোয়া’ বলেন। সৈকতের গা ঘেঁষে থাকা বড় বড় উইন্ড মিল নজর কাড়বে। পর্যটকদের ভিড় কমই থাকে এখানে। এটিকে ভার্জিন বিচও বলা হয়।

আরও পড়ুন- অপূর্ব-অসাধারণ! বর্ষায় কলকাতার কাছের এই সি বিচের অনিন্দ্যসুন্দর শোভা এককথায় অনবদ্য

West Bengal Sea Beach Dakshin Purusottampur Bankiput Weekend Trip less crowded sea beach near Kolkata
Advertisment