যাদবপুরে পড়ুয়া মৃত্যু কাণ্ডে আরও ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। খবর, লালবাজার সূত্রে। ধৃতদের মধ্যে ৩ জন বর্তমান ও ৩ জন ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী। বাড়ি থেকে এই ৬ জনকে গ্রেফতরা করেছে হোমিসাইড শাখার অফিসাররা। ধৃত ৬ জনই ঘটনার সময় হস্টেলে ছিলেন বলে দাবি পুলিশের। পরে তাঁরা হস্টেল ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন।
নতুন গ্রেফতার ছাত্র ও প্রাক্তনীদের পরিচয় কী?
ধৃত বর্তমান পড়ুয়াদের পরিচয়-
- অঙ্কন সর্দার- সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের তৃতীয় বর্ষের পড়ুয়া (বাড়ি- রাজারহাটের নারায়ণপুরে)
- মহম্মদ আরিফ- সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের তৃতীয় বর্ষের পড়ুয়া (বাড়ি- জম্মু-কাশ্মীরে)
- আসিফ আজমল- ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের চতুর্থ বর্ষের পড়ুয়া (বাড়ি- আসানসোলে)
ধৃত প্রাক্তনীদের পরিচয়-
- অসিত সর্দার- সংস্কৃত বিভাগের চলতি বছরের পাস আউট (বাড়ি- কুলতলি)
- সুমন কাঞ্জিলাল- এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স বিভাগের প্রাক্তনী (বাড়ি- মন্দিরবাজার)
- সপ্তক ক্যামিলা- এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স বিভাগের প্রাক্তনী (বাড়ি- এগরা)
যাদবপুরের ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ধৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৯। এই ৬ জনকে জেরা করে ছাত্র মৃত্যু কাণ্ডে নতুন কোনও নাম উঠে আসে কি না, সেটাই দেখার।
গত বৃহস্পতিবারের ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর পড়ুয়ার বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী সৌরভ চৌধুরীকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। সৌরভকে জেরা করেই উঠে আসে দীপশেখর ও মনতোষের নাম। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদে বয়ানে একাধিক অসঙ্গতি মিলেছে বলে দাবি করেছিল পুলিশ। পরে ১৩ তারিখ সকালে তাঁদের গ্রেফতার করে পুলিশ।
লালবাজার মনে করছে এই মর্মান্তিক ঘটনায় একাধিক জন জড়িয়ে। এই মামলায় পুলিশের নজরে বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেল রাখা প্রাক্তনীরা। তদন্তে জানা যায় যে, বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইন হস্টেলে সব মিলিয়ে মোট ২০ জন প্রাক্তনী থাকতেন। ঘটনার পর তাঁরা চলে যান। এই মামলায় প্রাক্তনী ও বর্তমান পড়ুয়ারা পুলিশের কাছে একই বয়ান দিচ্ছিলেন। ছাত্র মৃত্যুর পর হস্টেলের জিবি বৈঠক থেকেই সেই বয়ান বলে দেওয়া হয়েছিল বলে পুলিশ জানতে পারে। এসবের মধ্যেই, পলিশ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও কথা বলেছে। এরপরই আগে ধৃত তিন পড়ুয়াকে জেরা চলে। সব মিলিয়ে মঙ্গলবার রাতে এই ৬ জনকে বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রাক্তনীরা থাকলেও কর্তৃপক্ষ কেন কোনও ব্যবস্থা এতদিন নেয়নি? বহিরাগতদের আনাগোনার ক্ষেত্রেও কেন কড়াকড়ি ছিল না তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। তদন্তের জন্য আজ, বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই আধিকারিকদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে চলেছে পুলিশ।
আরও পড়ুন- যাদবপুরে ছাত্র মৃত্যু, রাতভর জেরার পর গ্রেফতার আরও ৬
গত বুধবার রাতে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন হস্টেলের এ-২ ব্লকের নীচ থেকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার হয় বাংলা বিভাগের প্রথম বর্ষের এক ছাত্র। পরে এক বেসরকারি হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। এই ঘটনায় পড়ুয়ার বাবা র্যাগিংয়ের অভিযোগ তোলে। মৃত ছাত্রের বাবা পুলিশের কাছে লিখিতভাবে খুনের অভিযোগ করেছেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই চলছে তদন্ত।