Omicorn in Bengal: রাজ্যে যখন করোনার দৈনিক সংক্রমণের হাইজাম্প, তখন নতুন করে ওমিক্রন আক্রান্ত ৫ জন। এঁদের নিয়ে এই মুহূর্তে রাজ্যে করোনার নতুন স্ট্রেনে আক্রান্ত ১১ জন। জানা গিয়েছে ৫ আক্রান্তের একজন বাদে বাকিদের বিদেশ সফররের ইতিহাস নেই। তাহলে কীভাবে তাঁরা সংক্রমিত হলেন? এই প্রশ্নই ভাবাচ্ছে চিকিৎসকদের। যদিও তাঁদের একটি অংশের দাবি, ‘গোষ্ঠী সংক্রমণের জেরেই ৪ জন ওমিক্রনে আক্রান্ত হয়েছে।‘
স্বাস্থ্য দফতর সুত্রে খবর, আক্রান্তদের মধ্যে ২ জন কলকাতা, একজন দমদম এবং একজন হাওড়ার বাসিন্দা। রাজ্যের তরফে মোট ১০৭ জনের নমুনা জিন বিন্যাসে পাঠানো হয়েছিল। তাঁদের মধ্যে থেকে ৫ জনের দেহে ওমিক্রনের হদিশ মিলেছে।
এদিকে, রাজ্যে একধাক্কায় অনেক বাড়ল দৈনিক সংক্রমণ। মঙ্গলবার পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় বাংলায় সংক্রমণ গ্রাফ সাড়ে ৭০০-র উপরে। তবে কমেছে দৈনিক মৃত্যু। ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমিত ৭৫২, মৃত ৭। একদিনে সুস্থ হয়েছেন ৭২১ জন, সুস্থতার হার ৯৮.৩৩%। খানিকটা বাড়ল রাজ্যের সক্রিয় সংক্রমণ। এই মুহূর্তে রাজ্যে অ্যাক্টিভ রোগী ৭৪৫৭, দুইয়ের উপরেই আক্রান্তের হার (২.৪৫%)।
গত ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমণ বেড়েছে কলকাতা, উত্তর ২৪ পরগনা এবং হাওড়ায়। শহরে দৈনিক কোভিড গ্রাফ সাড়ে ৩০০ ছাড়িয়ে ৩৮২। উত্তর ২৪ পরগনায় ১০২ এবং হাওড়ায় ৫৮। এদিকে, ১০ জানুয়ারি থেকে সতর্কতামূলক কোভিড টিকা বা তৃতীয় ডোজ পাবেন প্রবীণরা। ৬০ কিংবা ষাটোর্ধ্ব যারা, তাঁরাই এই টিকা গ্রহণে যোগ্যতম ব্যক্তি। তবে অবশ্যই থাকতে হবে কোমর্বিডিটি। এমনটাই স্বাস্থ্য মন্ত্রক সুত্রে খবর। তবে, এই ডোজ গ্রহণে কোনও ডক্টর সার্টিফিকেট বা চিকিৎসকের শংসাপত্র লাগবে না। মঙ্গলবার জানান কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য সচিব রাজেশ ভূষণ। এদিন তিনি জানান, ১৫-১৮ বছরের যারা নতুন বছরে টিকা পাবেন তাঁদের সংখ্যা প্রায় ৭ কোটি ৮ লক্ষ। এই টিকাদান কর্মসূচি সুষ্ঠুভাবে করতে দেশের সব জেলা শাসকদের নোট পাঠিয়েছে স্বাস্থ্যমন্ত্রক।
বাংলায় বাড়ছে সংক্রমণ! খোলা থাকবে স্কুল-কলেজ, ট্রেন? বড় ইঙ্গিত মমতার
পাশাপাশি তিনি বলেন, ‘দেশের মোট ২ কোটি ৭৫ লক্ষ মানুষ যারা ষাটোর্ধ্ব, তাঁরা সতর্কতামূলক ডোজ পাবেন। তবে এই টিকা নেওয়ার আগে তাঁদের অবশ্যই সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকদের পরামর্শ নেওয়া উচিত।‘ স্বাস্থ্যসচিব আরও জানান, ভোটমুখী পাঁচ রাজ্যে যারা নির্বাচনের দায়িত্বে থাকবে, তারাও করোনা যোদ্ধার তকমা পাবেন। তাঁদেরকেও সতর্কতামূলক ডোজের জন্য তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।
অপরদিকে, দেশজুড়ে নতুন করে আতঙ্ক বাড়াচ্ছে করোনা। ভাইরাসের নয়া প্রজাতি ঘুম কেড়েছে কেন্দ্রের। এই পরিস্থিতিতে জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োগে এবার আরও দুটি টিকা ও একটি ওষুধকে ছাড়পত্র দিল কেন্দ্রীয় সরকার। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মাণ্ড্যভিয়া টুইটে লিখেছেন, ”অভিনন্দন ভারত। করোনার বিরুদ্ধে লড়াইকে আরও শক্তিশালী করতে সেন্ট্রাল ড্রাগস স্ট্যান্ডার্ড কন্ট্রোল অর্গানাইজেশন, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রক একদিনে তিনটি অনুমোদন দিয়েছে। করবেভ্যাক্স ভ্যাকসিন, কোভোভ্যাক্স ভ্যাকসিন ও অ্যান্টি-ভাইরাল ড্রাগ মোলনুপিরাভিরের জরুরি পরিস্থিতিতে ব্যবহারের অনুমোদন দেওয়া হল।”
দেশজুড়ে আতঙ্ক বাড়াচ্ছে করোনার নয়া ভ্যারিয়েন্ট। যদিও দেশের দৈনিক সংক্রমণ পরিস্থিতি এখনও নাগালেই রয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। মঙ্গলবার সকালে স্বাস্থ্যমন্ত্রকের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৬ হাজার ৩৫৮ জন। বর্তমানে দেশে করোনা সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ৭৫ হাজার ৪৫৬। এই মুহূর্তে দেশে করোনায় সুস্থতার হার ৯৮.৯ শতাংশ।
তবে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে ওমিক্রন। দেশে মোট ওমিক্রন আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ৬৫৩। এই পরিস্থিতিতে এবার করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আরও দুটি ভ্যাকসিন ও ওষুধকে জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োগে ছাড়পত্র দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। কেন্দ্রের এই পদক্ষেপ করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে গোটা দেশকে শক্তিশালী করবে বলে মনে করেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী।