পঞ্চায়েত ভোটের আগেই দলের ৫৬ জন নেতা, কর্মীকে সাসপেন্ড করল তৃণমূল কংগ্রেস। তৃণমূল সূত্রে খবর, দল বিরোধী কাজের অভিযোগে এঁদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করেছে রাজ্যের শাসক দল। জেলাভিত্তিক রিপোর্ট পাওয়ার পর এই সংখ্যাটা আরও বাড়বে বলেই মনে করা হচ্ছে।
দু'মাসব্যাপী 'নবজোয়ার' কর্মসূচিতে গোঁজ প্রার্থীদের নিয়ে আগেই কড়া বার্তা দিয়েছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বারংবার তাঁর বার্তা ছিল, টিকিট না পেয়ে যাঁরা নির্দলে দাঁড়াবেন তাঁদের কোনও ভাবেই বরদাস্ত করবে না দল। অভিষেক বলেছিলেন, 'মানুষ যাঁকে মান্যতা দিয়েছে তাঁকেই আমরা প্রার্থী করেছি। জোড়া ফুলের চিহ্ন যাঁর কাছে থাকবে সেই প্রার্থী। কোথাও কোথাও যদি কেউ নির্দল হয়ে দাঁড়ায়,পার্টির সঙ্গে বেইমানি করে,তাহলে সেই বেইমানগুলোকে দলে আর নেওয়া হবে না। পার্টির শৃঙ্খলার ঊর্ধ্বে কেউ নন। আমিও নই।'
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও বার্তা দিয়েছিলেন যে, এবারের প্রার্থী বাছাইয়ের কাজ অনেক কিছু দেখেশুনে করা হয়েছে। মানুষের কাজ করার ক্ষেত্রে যাঁদের অনীহা রয়েছে তাঁদের বাদ দিয়েছে দল। স্বচ্ছ ভাবমূর্তিতে জোর দিয়েছিল তৃণমূল।
যদিও সুপ্রিমো ও তৃণমূলের 'সেকেন্ড-ইন-কমান্ড'-এর সেই হুঁশিয়ারি দলের সর্বস্তরে যে মান্যতা পেয়েছিল তা বলা যাবে না। ভোটের মনোনয়নের সময়ে বিভিন্ন জেলায় জোড়-ফুলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের খবর সামনে আসতে থাকে। কোচবিহারে গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রার্থী নিয়ে দুই গোষ্ঠীর ঝামেলায় গুলি পর্যন্ত চলেছিল। একাধিক জেলায় অশান্তি ছড়ায়।
মনোনয়ন পর্ব প্রত্যাহেরর শেষ দিন কাটতেই সামনে আসে যে, অনেক গ্রাম পঞ্চায়েতে দলের প্রার্থী হতে না পেরে নির্দল হয়ে ভোটের লড়াইয়ে সামিল হয়েছেন তৃণমূল কর্মী। এরপরই এই ধরণের নেতা, কর্মীদের বিরুদ্ধে দল বিরোধী কাজের অভিযোগ তীব্র হয়। পাল্টা কড়া পদক্ষেপ করল তৃণমূল। দল বিরোধী কাজের অভিযোগে সাসপেন্ড করা হল ৫৬ জন নেতা, কর্মীকে। সাসপেন্ড হওয়াদের তালিকায় নদিয়ার ২১, দক্ষিণ দিনাজপুরের ১৭ ও মুর্শিদাবাদের ১০ জন রয়েছেন। বাকিরা অন্যন্য জেলার। অর্থাৎ, অভিষেকের হুঁশিয়ারি যে শুধুই কথার কথা ছিল না, তা প্রমাণ করল রাজ্যের শাশক শিবির।