Advertisment

সাড়ে ৮ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিক ফিরেছে রাজ্যে: মুখ্যমন্ত্রী

"যে কোনও গঠনমূলক কাজে রাজ্য যেমন কেন্দ্রকে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত, তেমনই চাইব কেন্দ্রও সহযোগিতা করুক। রাজ্য ও কেন্দ্রের মধ্যে উন্নয়নের সেতু থাকুক।"

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
নির্বাচন বিধি নিয়ে কমিশনে চিঠি তৃণমূলের-এবার "আমাদের দিলীপদা"-তৃণমূল নেতানেত্রীকে তলব ইডির-বিজেপি সাংসদকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ তৃণমূল নেতার-যাদবপুরে বন্ধ সব বিভাগ

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র

পরিযায়ী শ্রমিক নিয়ে রাজ্য়ের শাসক দল ও বিরোধীদের মধ্যে বাকবিতন্ডা চলছেই। এরইমধ্যে বুধবার নবান্নে পরিসংখ্যান তুলে ধরে বিরোধীদের তোপ দাগলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানান, ইতিমধ্যে রাজ্যে সাড়ে ৮ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিক রাজ্যো ফিরেছে। একইসঙ্গে কেন্দ্র রাজ্যের সম্পর্ক নিয়ে বুধবার নবান্নের সভাঘরে তিনি বলেন, "আমি চাই রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের মধ্যে সম্পর্ক ভাল থাকুক। সব কিছুতেই রাজনীতি, আমি এর পক্ষে নই।"

Advertisment

এরাজ্যে পরিযায়ী শ্রমিকদের ফিরিয়ে আনা নিয়ে প্রথম থেকেই সোচ্চার ছিলেন বহরমপুরের সাংসদ অধীর চৌধুরী। পরবর্তীতে বঙ্গ বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ পরিযায়ী শ্রমিকদের ফেরানো নিয়ে একাধিকবার মমতা সরকারকে বিঁধেছেন। বুধবার নবান্ন সভাঘরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "কেউ কেউ পরিযায়ী শ্রমিকদের প্ররোচিত, উত্তেজিত করছে। বলছে আমরা নাকি ঢুকতে দিচ্ছি না! ইতিমধ্যেই ট্রেনে ২.৪ লক্ষ এবং বাসে বা গাড়িতে করে বা হেঁটে আরও সাড়ে ৬ লক্ষ মানুষ ফিরেছেন। ১০ জুনের মধ্যে আসবেন আরও দেড় লক্ষ মানুষ। সবমিলিয়ে সংখ্যাটা ১০ জুন সাড়ে ১০ লক্ষ হবে।"

আরও পড়ুন, সরকারের মাধ্যমে ত্রাণ দিন, বৈষম্য থাকে না: মমতা

পরিযায়ী শ্রমিকদের সমস্যার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের অপরিকল্পিত লকডাউন পরিকল্পনাকে দায়ী করেছেন মমতা। তিনি বলেন, "আগে পরিকল্পনা করে তাঁদের পাঠানো হলে এই তিন মাস তাঁদের কষ্টে কাটাতে হতো না। ভিনরাজ্যে তাঁদের খেতে দেওয়া হয়নি, চিকিৎসা হয়নি, টেনশনে কাটিয়েছেন। যে ট্রেন চালানো হচ্ছে তাতে সোশ্যাল ডিসট্যান্সিং নেই, গাদাগাদি করে পাঠানো হচ্ছে। ফলে সংক্রমণ বাড়ার আশঙ্কা থাকছে। রেলের সামাজিক দায়বদ্ধতা থাকা উচিত, কিন্তু সেইমতো পরিষেবা দিচ্ছে না।"

পরিযায়ী শ্রমিকদের পাশে যে রাজ্য সরকার রয়েছেন তার সমর্থনে একাধিক তথ্য পেশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, ২৩৫টি ট্রেনের ভাড়া বাবদ ২৫ কোটি টাকা রেলকে দিচ্ছি। ১২ কোটি দিয়ে দিয়েছি,বাকিটাও দিয়ে দেব। পড়ুয়া, পরিযায়ী শ্রমিক ও ভিনরাজ্যে আটকে থাকা মানুষজনকে ৯ হাজারের বেশি বাসে ফেরাতে ১৫ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। 'স্নেহের পরশ' প্রকল্পের মাধ্যমে ভিনরাজ্যে থাকা ৪ লক্ষ ৫৭ হাজার পরিযায়ী শ্রমিককে অর্থসাহায্য করতে ৪৫ কোটি ৭০ লক্ষ এবং 'প্রচেষ্টা' প্রকল্পে ১ লক্ষ ৬২ হাজার ৮০৮ জনকে ১ হাজার টাকা করে ১৬ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। কোয়ারেন্টিন সেন্টারগুলিতে প্রতিদিন ৩ কোটি টাকা করে খরচ হচ্ছে। হেল্থ স্ক্রিনিংয়ে ৭-৮ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। যাঁরা বাইরের রাজ্য থেকে ফিরেছেন তাঁদের ৫ কেজি করে চাল ও ১ কেজি করে ছোলা দেওয়া হবে। সবমিলিয়ে ইতিমধ্যেই পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য ২০০ কোটি টাকা খরচ করেছে রাজ্য সরকার।

মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ, কাউকে যেন না খেয়ে থাকতে না হয়। পরিযায়ী শ্রমিকদের তালিকা তৈরি করতে হবে, জানতে হবে কে কোন কাজ করেন। স্থানীয় লোকেদের সঙ্গে তাঁদের একশো দিনের কাজে লাগাতে হবে। ম্যানপাওয়ার বাড়ালে ক্ষতি নেই। যাঁরা অলঙ্কার তৈরি, হোসিয়ারি, এমএসএমই, পরিবহণ ক্ষেত্র ইত্যাদির কাজ জানেন তাঁদের স্কিল কাজে লাগাতে হবে। আমি চাই সকলে এ রাজ্যেই থেকে কাজ করুন। লেবার এমপ্লয়মেন্ট ব্যাঙ্ক তৈরি করতে হবে।

কেন্দ্র ও রাজ্যের সম্পর্ক নিয়ে তিনি বলেন, "যে কোনও গঠনমূলক কাজে রাজ্য যেমন কেন্দ্রকে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত, তেমনই চাইব কেন্দ্রও সহযোগিতা করুক। রাজ্য ও কেন্দ্রের মধ্যে উন্নয়নের সেতু থাকুক। যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো মেনে রাজ্য রাজ্যের এবং কেন্দ্র কেন্দ্রর কাজ করুক। নির্বাচনের সময় যেমন রাজনীতি হয় তেমন হবে।"

Mamata Banerjee corona Migrant labourer
Advertisment