এ যেন মাছ ধরার গ্রামীণ অলিম্পিক। উত্তর দিনাজপুরের কর্ণজোড়ায় কর্ণ রাজার দিঘিতে বরশিতে বিঁধল ৩০ কেজি ওজনের রুই। ১৬ অগাস্ট থেকে কর্ণজোড়ায় শুরু হয়েছে একমাসব্যাপী মাছ ধরার এই প্রতিযোগিতা৷ এদিন মালদহ থেকে আসা দুই মাছ শিকারীর কপালেই ছিঁড়ল শিকে৷ বিশালকায় রুই বরশি গেঁথে আনন্দে ডগমগ দুই তরুণ৷
ভোজনরসিক বাঙালির পাতে এক টুকরো মাছ থাকলে আর কোনও কথাই নেই। আর সেই মাছ যদি নিজের হাতে কেউ পুকুর থেকে ধরে নিয়ে আসেন তাহলে তো সোনায় সোহাগা। সেই আনন্দ যে ঠিক কী, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। বাঙালিকে আনন্দ দিতে বহু বছর ধরে উত্তর দিনাজপুরের কর্ণজোড়ায় কর্ণ রাজার দিঘিতে আয়োজিত হয়ে আসছে মাছ ধরার প্রতিযোগিতা। অন্য যে কোনও উৎসব-পার্বণের চেয়ে এই উন্মাদনা এ তল্লাটে কোনও অংশে কম নয়৷ মৎস্য শিকারীদের সেই উন্মাদনাকে পুরষ্কৃতও করেন দিঘী কর্তৃপক্ষ। এক মাস ধরে চলা এই প্রতিযোগিতায় সব থেকে বেশি ওজনের মাছ যিনি শিকার করতে পারবেন তাঁকে পুরষ্কৃত এবং সম্মানিত করেন দিঘী কর্তৃপক্ষ।
এই প্রতিযোগিতায় বরশিতে ৩০ কেজি ওজনের রুই ধরে তাক লাগিয়ে দিলেন মালদহ থেকে আসা দুই যুবক। টিকিট কেটে সেই মাছ ধরতে বহু মানুষ দূর-দূরান্ত থেকে আসছেন। মাছ ধরার গ্রামীণ অলিম্পিক বললেও হয়তো খুব একটা ভুল হবে না এই প্রতিযোগিতাকে। করোনার জেরে বহু বছর ধরে চলে আসা এই মাছ ধরার প্রতিযোগিতা গত বছর বন্ধ ছিল। এবার করোনার বিধি-নিষেধ কিছুটা শিথিল হওয়ায় আবারও মাছ ধরতে আসা উৎসুক মানুষের ভিড় উপচে পড়েছে কর্ণ রাজার দিঘিতে।
আরও পড়ুন- তালিবানদের ভয়ে দেশ ছাড়তে হুড়োহুড়ি, কাবুল বিমানবন্দরে পদপিষ্ট ৭ আফগান
সাবেকি প্রথা মেনে বহু বছর ধরে এই দিঘিতে একমাস ব্যাপী চলে মাছ ধরার প্রতিযোগিতা। এই দিঘিতে ছোট-বড় ওজনের বিভিন্ন ধরনের মাছ রয়েছে। যে ব্যক্তি সবচেয়ে বড় মাছ ধরতে পারবেন তাঁকে পুরষ্কৃত করবে কর্ণ রাজার দিঘি কর্তৃপক্ষ। এবারও কয়েকদিন পেরিয়েছে এই প্রতিযোগিতা। এবছরই ১৬ কেজি ওজনের কাতলা মাছ বরশিতে উঠেছে এক মৎস্য শিকারীর। তবে এবার সব রেকর্ড ব্রেক।
মালদহ থেকে মাছ ধরতে আসা দুই ব্যক্তির বরশিতে উঠে এল ৩০ কেজি ওজনের একটি রুই মাছ। আর এই মাছ দেখতে প্রচুর মানুষ ভিড় জমালেন কর্ণ রাজার দিঘিতে। ৩০ কেজি ওজনের রুই মাছকে বরশিতে জব্দ করে যারপরনাই খুশি মহম্মদ মণির এবং আসলাম। মাছ ধরার নেশায় দুই ভাই প্রতি বছরই কর্ণ রাজার দিঘিতে আসেন। তবে, এত বড় মাছ এই প্রথম তাঁদের বরশিতে উঠেছে। এখনও পর্যন্ত এই প্রতিযোগিতায় তাঁরাই প্রথম। তাতেও আশ্বস্ত নন দুই ভাই। কারণ, জলের এই প্রতিযোগিতায় কখন কি হয় তা বলা মুস্কিল। কখন কার বরশিতে কত বড় মাছ ধরা পড়ে তা কেউ বলতে পারেন না।
আর তাই, তাঁরাই যে শেষ পর্যন্ত প্রতিযোগিতায় প্রথম থাকবেন তা হলফ করে বলতে পারছেন না৷ তাতেও বিন্দুমাত্র বিচলিত নন তাঁরা। এখন বিশালকার এই মাছ ধরার আনন্দেই বুঁদ হয়ে থাকতে চান মালদহের এই দুই তরুণ৷
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন