পঞ্চায়েত ভোট মিটে যাওয়ার পর থেকে একমাস কাটতে চলল। তবুও বিরাম পড়ছে না রাজনৈতিক সংঘর্ষ ও বোমাবাজির ঘটনায়। যার থেকে রক্ষা পাচ্ছে না শিশুরাও। এবার যেমনটা ঘটল মুর্শিদাবাদের সালারের ধনডাঙা গ্রামে। সিপিএম ও তৃণমূলের রাজনৈতিক সংঘর্ষ ও বোমাবাজিতে মারাত্মক জখম হয়েছে পঞ্চম ও ষষ্ঠ শ্রেণিতে পাঠরত দুই ছাত্র। বোমার আঘাতে জখম ষষ্ঠ শ্রেণিতে এক পড়ুয়া এখন পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। সালার প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে তাকে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। অপারেশনের পর ওই পড়ুয়ার অবস্থা স্থিতিশীল বলেই চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। অপর ছাত্র আবার সালার প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসাধীন।
কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছাত্র আল্লারাখা শেখের কাছে শনিবার ছিলেন তাঁর দিদি পানু বেগম। তিনি জানিয়েছেন, তাঁদের পরিবার সিপিএম পার্টির সমর্থক। পঞ্চায়েত নির্বাচনে মুর্শিদাবাদের সালারের ধনডাঙায় সিপিএম জিতেছে। সেটা তৃণমূলের লোকজন মেনে নিতে পারেনি। সিপিএম প্রার্থীরা জেতার পর থেকেই তৃণমূলের এলাকায় সন্ত্রাস কায়েম করেছিল। এমনকী সিপিএমের কর্মী ও সমর্থক পরিবারের লোকজনের গ্রামের রাস্তা দিয়ে যাতায়াত পর্যন্ত বন্ধ করে দিয়েছে তৃণমূল-আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। এসব নিয়ে গ্রামে অশান্তি লেগেই আছে।
বোমার আঘাতে ভাই আল্লারাখার জখম হওয়া প্রসঙ্গে পানু বেগম বলেন, 'গত শনিবার সকালে আমার ভাই আল্লারাখা এলাকার দোকানে জলখাবার কিনতে যাচ্ছিল। সেই সময় গ্রামে দুই পার্টির মধ্যে মারপিট লেগে যায়। বোমাবাজিও হচ্ছিল। ওই সময় আল্লারাখা দেখে, তাঁর বন্ধু রিয়াজ শেখ ওই এলাকার মসজিদে আটকে রয়েছে। আল্লারাখা তাঁর বন্ধুকে সেখান থেকে বের করে আনতে গিয়ে দুষ্কৃতীদের ছোড়া বোমার আঘাতে জখম হয়।'
আরও পড়ুন- হার মানবে সিনেমাও! নার্স সেজে হাসপাতালে বন্ধুর স্ত্রীকে হত্যার চেষ্টা, ধৃত ফার্মাসিস্ট
পানু বেগম জানান, তাঁর পরিবারের লোকজন রক্তাক্ত অবস্থায় আল্লারাখাকে উদ্ধার করে তড়িঘড়ি সালার প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যান। সেখান থেকে আল্লারাখাকে স্থানান্তরিত করা হয় কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে। কাটোয়া হাসপাতালে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে গিয়ে ডাক্তারবাবুরা আল্লারাখার পা থেকে বোমার স্প্লিন্টার বের করেন। শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল থাকলেও ডাক্তারবাবুদের কথামতো আল্লারাখাকে এখনও কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালেই থাকতে হচ্ছে বলে পানু বেগম জানিয়েছেন। পঞ্চায়েত ভোট মিটে গেলেও কবে মুর্শিদাবাদের রাজনৈতিক হিংসা, হানাহানির ঘটনায় বিরাম পড়বে তার কিছুই জানে না আল্লারাখার মত শিশুরা। তাঁরাও চাইছে, বন্ধ হোক রাজনৈতিক হিংসা। কাটুক আতঙ্ক, শান্তি ফিরুক সালারে। রক্ষা পাক শৈশব।