Advertisment

একই মামলায় দু'বার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, অপরাধের গুরুত্ব বিচারে বিরল নির্দেশ আদালতের

বন্ধুকে গুলি করতে গিয়ে নিজের মাকেও গুলি করেছিল রথীন।

IE Bangla Web Desk এবং Chinmoy Bhattacharjee
New Update
Chinsura Court

আসামিকে আনা হয়েছিল আদালতে।

এক দুষ্কৃতীর বিরুদ্ধে একই মামলায় দু'বার যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিল চুঁচুড়া আদালত। দৃষ্টান্তমূলক এই শাস্তির বিধানে সাধারণ মানুষ থেকে পুলিশ প্রশাসন সবাই খুশি। মামলাটি ছিল আট বছর আগেকার। ঘটনাটি ২০১৫ সালের ৬ আগস্টের। ওই দিন হুগলি স্টেশনের কাছে কৃষ্ণপুর বাজারে এক যুবক তাঁর বন্ধুর ওপর গুলি চালায়। বাধা দিতে গিয়ে আহত হন ওই দুষ্কৃতীর মা-ও।

Advertisment

ঘটনাটি ছিল এরকম। চুঁচুড়া রবীন্দ্রনগরের বাসিন্দা প্রশান্ত দত্ত এক নাবালিকা মেয়েকে ফুঁসলে পালিয়ে গিয়েছিল। পরে পুলিশের হাতে ধরাও পড়ে। আর এই ঘটনা নিয়ে তারই বন্ধু হুগলি স্টেশন সংলগ্ন কৃষ্ণপুর বাজার এলাকার রথীন সিংহের সঙ্গে চরম অশান্তি হয় প্রশান্তর। কারণ রথীন ছিল নাবালিকার ঘনিষ্ট আত্মীয়। রাস্তাঘাটে বন্ধুকে হুমকি দিতে শুরু করে রথীন। বাধ্য হয়ে ওই দিন (৬ আগস্ট) সন্ধ্যায় প্রশান্ত যান রথীনের বাড়ি। তিনি রথীনের মা-কে এই বিষয়ে নালিশ করতে গিয়েছিলেন।

প্রশান্তকে দেখেই রথীনের মাথায় আগুন জ্বলে ওঠে। সে হঠাৎই বাড়ি থেকে একটি আগ্নেয়াস্ত্র এনে প্রশান্তকে লক্ষ্য করে পরপর দুটি গুলি চালায়। একটি গুলি রথীনের মার হাত ছুঁয়ে প্রশান্তের পেটে, আর অপর গুলিটি লাগে প্রশান্তর বুকে। গুলির আওয়াজে এলাকার লোকজন ছুটে আসেন। দু'জনকেই রক্তাক্ত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রশান্তকে অবস্থার অবনতির কারণে কলকাতা মেডিকেল কলেজে স্থানান্তরিত করা হয়। আর সেই সুযোগে রথীন পালিয়ে যায়।

প্রশান্তর মা ছায়ারানি দত্ত চুঁচুড়া থানায় রথীনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। হত্যার চেষ্টা এবং গুরুতর আঘাত, এই দুই ধারায় রথীনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। প্রায় বছরখানেক পালিয়ে থাকলেও ওই মামলার তদন্তকারী অফিসার প্রবীর দত্ত গোপন ডেরা থেকে রথীনকে পাকড়াও করেন। এরপর সেই মামলা চলতে থাকে। মধ্যে কয়েক বছর কেটে গেলেও অবশেষে চুঁচুড়া ফাস্ট ট্রাক কোর্টে ডিস্ট্রিক্ট অ্যাডিশনাল এন্ড সেশন জজ শিবশংকর ঘোষ গতকাল রথীনকে দুটি সেকশনে দোষী সাব্যস্ত করে দু'টিতেই সর্বোচ্চ সাজা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেন।

আরও পড়ুন- ঝাড়গ্রামের মঞ্চ থেকে কৌশলী চাল মমতার, কীভাবে ঘুঁটি সাজাচ্ছেন কুড়মি নেতারা?

সরকারি আইনজীবী সুকান্ত চৌধুরী জানান, এই মামলায় প্রায় ১০ জন সাক্ষী দেন। মূল অভিযুক্ত রথীন জামিনে থাকাকালীন আরেকটি খুনে অভিযুক্ত হয়ে যায়। চন্দননগর কমিশনারেটের পুলিশ অত্যন্ত তৎপরতার সঙ্গে তাকে গ্রেফতার করে। এদিনই এই ঘটনা নিয়ে চুঁচুড়া পুলিশ লাইনে ডিসি চন্দননগর বিদিতরাজ বুন্দেশ একটি সাংবাদিক বৈঠক করে জানান, এই রায় আমাদের পুলিশ কর্মীদের ভালো কাজের প্রেরণা যোগাবে। পাশাপাশি জনসাধারণও এই ভেবে খুশি হবে যে অপরাধ করলে তার চরম শাস্তি হয়। পাশাপাশি অপরাধীদের কাছেও এই রায় বার্তা দেবে যে অপরাধ করে কেউ পার পাবে না। একদিন না-একদিন, সে সাজা পাবেই।

Justice Arrest Court Order
Advertisment