প্রায় ১৮ ঘণ্টা করোনায় মৃত বাবার দেহ আগলে রাখল ছেলে। সিঙ্গুরের মির্জাপুর-বাঁকিপুর এলাকায় মঙ্গলবার রাত থেকে বাড়ির উঠোনেই পড়ে রইল মৃত ভোলানাথ পালের দেহ। বুধবার বিকেলে এসে দেহ উদ্ধার করেন জেলা প্রশাসনের কর্মীরা। জানা গিয়েছে, ওই বৃদ্ধ করোনা আক্রান্ত হয়ে মঙ্গলবার রাত দশটা নাগাদ মারা যান৷ মৃতের পরিবারের দাবি, ‘বেশ কয়েকদিন অসুস্থ থাকার পর গত ১৭ এপ্রিল ভোলনাথ বাবুর করোনা রিপোর্ট পজিটিভ আসে৷’ ভোলানাথবাবুর পরিবারেতাঁর স্ত্রী এবং ছেলে রয়েছেন৷ শারীরিক অবস্থা খুব গুরুতর না হওয়ায়, ভোলানাথবাবুকে বাড়িতেই হোম আইসোলেশনে রাখা হয় বলে দাবি তাঁর ছেলে বাবিন পালের৷
কিন্তু মঙ্গলবার ভোলানাথবাবুর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়৷ তাঁর ছেলের অভিযোগ, বহুবার যোগাযোগ করেও অ্যাম্বুল্যান্স আসেনি৷ এর পর রাত দশটা নাগাদ অ্যাম্বুল্যান্স এসে পৌঁছলেও ততক্ষণে ভোলানাথবাবুর মৃত্যু হয়৷ এরপর অ্যাম্বুল্যান্স ফিরে যায়৷ তার পর থেকে বাড়ির উঠোনেই পড়ে বৃদ্ধের দেহ৷ অভিযোগ, ‘একাধিকবার জেলা প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও মরদেহ নিয়ে যাওয়ার জন্য কেউ আসেনি৷ সকাল গড়িয়ে দুপুর হয়ে যায়৷’ তারপরেও দেহ উদ্ধারে এগিয়ে আসেনি প্রশাসনের কেউ।
ভোলানাথবাবুর ছেলে বাবিন পাল বলেন, 'আমি কী করব৷ প্রশাসনকে অনেক বার জানিয়েছি৷ অপেক্ষা করা ছাড়া তো আমাদের কোনও উপায় নেই৷ ' এরপর বিভিন্ন বৈদ্যুতিন সংবাদমাধ্যমে এই খবর দেখানোর পরই শেষ পর্যন্ত বিকেল চারটে নাগাদ চুঁচুড়া থেকে প্রশাসনের কর্মীরা শববাহী গাড়ি নিয়ে এসে ভোলানাথবাবুর দেহ সৎকারের জন্য নিয়ে যায়৷
প্রায় ১৮ ঘণ্টা ধরে করোনা আক্রান্তের দেহ এভাবে উন্মুক্ত অবস্থায় পড়ে থাকায় এলাকাবাসীর মধ্যেও প্রবল আতঙ্ক ছড়ায়৷ দেহ নিয়ে যেতে এত সময় কেন লাগল, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন স্থানীয়রা৷ দেহ নিতে আসা সরকারি এক কর্মী জানান, করোনা আক্রান্তদের দেহ নিয়ে যাওয়ার জন্য কর্মী পাওয়া যাচ্ছে না৷ এর আগে চুক্তির ভিত্তিতে যাঁরা এই কাজ করছিলেন, তাঁরা নিজেরাই আক্রান্ত৷ নতুন করে কর্মী খুঁজে নিয়ে আসতে গিয়ে এতখানি সময় লেগেছে।