Advertisment

মুরগি ভেবে ছোট্ট ছানার প্রতিপালন, বড় হতেই তার রূপ দেখে চক্ষু চড়কগাছ!

মুরগি ভেবে মাসের পর মাস ধরে বাড়িতে আদরে তাকে প্রতিপালন করেছিল পরিবারটি।

author-image
Nilotpal Sil
New Update
a family keep shelter a peacock at home thinking it is a hen

বন দফতরের কর্মীদের প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে পরিবারটিকে।

মুরগির ছানা বলে আত্মীয় যে আসলে ময়ূর পুষতে দিয়ে গিয়েছিলেন তা টের পাননি কিস্কু পরিবার। পাখিটি একটু বড় হতেই যখন বোঝা গেল সেটি ময়ূর ততদিনে অনেকটা সময় পেরিয়ে গিয়েছিল। শুধুমাত্র মায়ায় পড়ে গিয়ে ময়ূরটিকে আর বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিতে পারেননি পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরের আঝাপুর পঞ্চায়েতের মীরেপাড়া গ্রামের বাসিন্দা পূর্ণচন্দ্র কিস্কু। তবে বাড়িতে ময়ূরটিকে রাখতে গিয়ে এখন চূড়ান্ত বিপাকে পড়ে গিয়েছেন কিস্কু পরিবারের সদস্যরা। বাড়িতে ময়ূর পোষার কারণ নিয়ে বন দফতরের কর্মীদের কাছে তাঁদের ফি দিন জবাবদিহি করতে হচ্ছে। যদিও বন দফতরের লোকজন ময়ূয়টিকে জঙ্গলে নিয়ে গিয়ে ছেড়ে দেওয়ার কথা জানালে তাতে কিস্কু পরিবারের সদস্যরা সম্মতি দিয়েছেন।

Advertisment

ময়ূরটিকে খাঁচা বন্দি করতে শনিবার আঝাপুরের মীরেপাড়া গ্রামে পৌছোঁন বন দফতরের কর্মীরা। তাঁদের সঙ্গে গিয়েছিলেন বর্ধমানের সোসাইটি ফর অ্যানিম্যাল ওয়েলফেয়ার সংস্থার সদস্যরাও। তাঁরা পূর্ণচন্দ্র কিস্কুর বাড়িতে পৌঁছে ময়ূরটিকে তাঁদের বাড়ির চালায় ও আশেপাশের গাছ গাছারি ঘেরা জায়গায় ঘোরাঘুরি করতে দেখেন। কিন্তু সারাদিন ধরে অনেক চেষ্টা চালিয়েও বন দফতরের কর্মীরা কিছুতেই ময়ূয়টিকে খাঁচা বন্দি করতে পারেননি। তবে হাল ছাড়েননি বন দফতরের কর্মীরা। দিন গড়িয়ে রাত হয়ে যাওয়ার পরেও বন দফতরের কর্মীরা ময়ূরটিকে ধরার প্রচেষ্টা চালিয়ে গিয়েছেন।

publive-image
বাড়ির টালির চালে চড়ে বসেছে সেই ময়ূর।

এদিকে, বাড়িতে ময়ূর পোষা নিয়ে পূর্ণচন্দ্র কিস্কু বা তাঁর পরিবারের কেউ সংবাদমাধ্যমের কাছে মুখ খুলতে চাননি। তবে কিস্কু পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলার পর সোসাইটি ফর অ্যানিম্যাল ওয়েলফেয়ার সংস্থার পক্ষে অর্ণব দাস বলেন, “পূর্ণচন্দ্র কিস্কু চাকুরিজীবী। তিনি আমাদের বলেছেন প্রায় ন'মাস আগে পুরুলিয়ায় তাঁদের এক আত্মীয় খেপা কিস্কু তাঁদের বাড়িতে আসে। খেপা কিস্কু দুটি মুরগির ছানা এনেছেন বলে তাঁদের জানিয়েছিলেন।' পূর্ণচন্দ্রর কথা অনুযায়ী, তাঁদের আত্মীয় খেপা কিস্কুও জানতেন না যে মুরগির ছানা ভেবে যে দুটি ময়ূর পুষতে দিয়েছেন তিনি।

আরও পড়ুন- ‘মহিলার হাতের অর্ধেক কেটে দিয়েছে, গরু-ছাগলের লেজও ছাড়েনি’, মারাত্মক অভিযোগ অধীরের

মুরগির ছানা ভেবে প্রতিপালন করার পর একসময় তাঁরা বুঝতে পারেন তাঁরা একটি ময়ূর প্রতিপালন করছেন। বাড়ির অন্য মুরগিদের সঙ্গেই ময়ূরটি থাকতে শুরু করে। সারাদিন গ্রামের বিভিন্ন জায়গা ঘুরে ময়ূরটি সন্ধ্যায় পূর্ণচন্দ্রর বাড়িতে ফিরে আসে। ময়ূরটির প্রতি মায়া জন্মে যায় বাড়ির লোকজনের। তাই ময়ূরটিকে আর বাড়ি থেকে হঠিয়ে দিতে পারেননি তাঁরা।

আরও পড়ুন- দুয়ারে দাঁড়িয়ে বর্ষা, আজ ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা একাধিক জেলায়

অর্ণব দাস বলেন, 'পূর্ণচন্দ্র কিস্কু হয়তো মিথ্যা বলছেন না। তবে জাতীয় পাখি ময়ূর কোনওভাবেই বাড়িতে পোষা যায় না। সেটা শাস্তিযোগ্য অপরাধ । পূর্ণচন্দ্র কিস্কু ও তাঁর পরিবারের লোকজনকে ময়ূরটি বনদফতরের হাতে তুলে দিতেই হবে।'

Purba Bardhaman peacock West Bengal
Advertisment