Advertisment

রাজ্যে ফের গণপ্রহার, সিঙ্গুরে 'মোবাইল চোর সন্দেহে' মৃত কিশোর

পুলিশ সূত্রে খবর, মৃত কিশোরের নাম দীপক মাহাতো (১৭), বাড়ি নদিয়ায়। জানা যাচ্ছে, হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই মৃত্যু হয় ওই প্রহৃত কিশোরের।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
lynching at singur,

ঘটনার তদন্ত করছে সিঙ্গুর থানার পুলিশ। ছবি- উত্তম দত্ত

নদিয়া, আলিপুরদুয়ারের পর এবার ঘটনাস্থল হুগলির কামারকুণ্ডু। চার দিনে এ রাজ্যে তিনটি গণপিটুনির ঘটনা ঘটল। মঙ্গলবার গভীর রাতে মোবাইল চোর সন্দেহে এক কিশোরকে পিটিয়ে খুন করা হল কামারকুণ্ডুতে। পুলিশ সূত্রে খবর, মৃত কিশোরের নাম দীপক মাহাতো (১৭), বাড়ি নদিয়ায়। জানা যাচ্ছে, হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই মৃত্যু হয় ওই প্রহৃত কিশোরের।

Advertisment

গণপ্রহার-সহ অসহিষ্ণুতা ইস্যুতে সম্প্রতি বিদ্বজ্জনেরা উদ্বেগ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি পাঠিয়েছিলেন। সেই চিঠির এক সপ্তাহের মধ্যেই এ রাজ্যে তিনটে গণপিটুনির ঘটনা ঘটে গেল। নদিয়ায় শনিবার, আলিপুরদুয়ারে রবিবার এবং মঙ্গলবার গভীর রাতে হুগলির কামারকুন্ডুতে গণপ্রহারে মৃত্যু ঘটল। ছেলেধরা সন্দেহ বা দুষ্কৃতী নয়, এবার মোবাইল চুরির অভিযোগে চলল বেদম প্রহার। এই ঘটনায় বুধবার ৭ জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে সিঙ্গুর থানার পুলিশ।

lynching at singur অভিযোগ, এই গাছে বেঁধেই পেটানো হয়েছে দীপক মাহতকে। ছবি- উত্তম দত্ত

পুলিশ সূত্রে খবর, পেশায় ঠিকা শ্রমিক দীপকের বাড়ি নদিয়ার সীমান্ত এলাকায়। কামারকুন্ডু জংশন এর আপ ও ডাউন রেল লাইনে বেশ কয়েকদিন ধরে কাজ চলছে। সেখানেই এক ঠিকাদারের অধীনে দীপক শ্রমিকের কাজে যুক্ত ছিল। তাঁদের যে তাঁবুর অদূরেই ছিল আরেক ঠিকাদারের তাঁবুও। অভিযোগ, মঙ্গলবার গভীর রাতে ওই অপর ঠিকাদারের সুপারভাইজারের তাঁবুতে ঢুকেছিল দীপক। কিন্তু দীপক সেখানে ঢুকতেই তাকে ধরে ফেলে জনা কয়েক যুবক। সকলেরই সন্দেহ হয় সে মোবাইল চুরি করতে এসেছে। জানা যাচ্ছে, ওই সুপারভাইজার এরপর অন্যান্য শ্রমিকদের সাহায্যে দীপককে একটি গাছের সঙ্গে বেঁধে ফেলেন। এরপর শুরু হয় চরম মারধর। মারধরের ফলে দীপক একসময় সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়ে। ঘটনাটি জানাজানি হতেই স্থানীয়রা দীপককে উদ্ধার করে সিঙ্গুর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু, হাসপাতালের যাওয়ার পথেই তার মৃত্যু হয়।

স্থানীয় সূত্রে খবর, মুর্শিদাবাদ, বীরভূমের বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রায় ৫০ জন শ্রমিক দীপকের সঙ্গে কাজ করছিলেন। মঙ্গলবারের রাতের এই ঘটনার পর থেকে বেশ কয়েকজন শ্রমিক ওই এলাকা থেকে চম্পট দিয়েছেন। দীপকের মৃত্যুর খবর পেয়ে তার পরিবারের লোকজন সিঙ্গুর থানায় আসেন। দীপককে খুন করা হয়েছে বলে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন তার এক আত্মীয় সুরেশ। এরপরই নড়েচড়ে বসে পুলিস।

এই ঘটনার জেরে পুলিশ এলকায় দফায় দফায় তল্লাশিতে নামে। ইতিমধ্যে ৭ জনকে সিঙ্গুর থানার পুলিশ আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে। পুলিশের দাবি, এর মধ্যে ৩ জন ঘটনায় সরাসরি যুক্ত। তবে, একজন নাবালক কী করে ঠিকা শ্রমিক হিসাবে কাজে যোগ দিয়েছিল, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে নানা মহলে। জানা যাচ্ছে, সেদিকটাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ। দীপকের দেহ আপাতত ময়না তদন্তে পাঠানো হয়েছে।

police singur West Bengal
Advertisment