জলের তোড়ে ভাঙল বাঁধ, প্লাবিত খানাকুল-আরামবাগের বিস্তীর্ণ প্রান্ত, নামল সেনা

টানা বৃষ্টিতে ফুঁসছে অজয়, দামোদর, দ্বারকেশ্বর। ইতিমধ্যেই প্লাবিত হুগলির বিস্তীর্ণ প্রান্ত। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রশাসন।

টানা বৃষ্টিতে ফুঁসছে অজয়, দামোদর, দ্বারকেশ্বর। ইতিমধ্যেই প্লাবিত হুগলির বিস্তীর্ণ প্রান্ত। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রশাসন।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
A part of Arambag,Khanakul, Pursura is flooded due to river dam broken

জলমগ্ন অণ্ডাল। ছবি: অনির্বাণ কর্মকার

চলতি বর্ষায় দফায়-দফায় একটানা বৃষ্টির সাক্ষী থেকেছে গোটা দক্ষিণবঙ্গ। বৃষ্টি বাড়তেই জল ছাড়ার পরিমাণও বাড়িয়েছে দুর্গাপুর ব্যারেজ। তাতেই বিপত্তি। হুগলির আরামবাগ, খানাকুল, পুরশুড়ার বিস্তীর্ণ অঞ্চল প্লাবিত। হাজার-হাজার পরিবার জলবন্দি। খানাকুল-আরামবাগে মোট ৬টি বাঁধ পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় সেনা নামানো হয়েছে। কাজ করছে বিপর্যয় মোকাবিলা দল। দুর্গতদের উদ্ধার করে ত্রাণ শিবিরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

Advertisment

গত কয়েকদিনে দফায়-দফায় ভারী বৃষ্টি হয়েছে গোটা দক্ষিণবঙ্গে। তারই জেরে জল ছাড়ার পরিমাণ বাড়িয়েছে দুর্গাপুর ব্যারেজ। জলের তোড়ে হুগলির খানাকুলে দামোদরের ২টি বাঁধ পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে। উল্টোদিকে, আরামবাগেও দ্বারকেশ্বর নদের আরও ৪টি বাঁধ ভেঙেছে। বাঁধ ভেঙে আরামবাগ, খানাকুল, পুরশুড়ার বিস্তীর্ণ এলাকা জলের তলায়। জলবন্দি হাজার-হাজার পরিবার। পরিস্থিতি মোকাবিলায় যুদ্ধকালীন তৎপরতা প্রশাসনের। আরামবাগ, খানাকুলে সেনা নামানো হয়েছে। কাজ করছে বিপর্যয় মোকাবিলা দল। এলাকার সব স্কুলগুলি খুলে দেওয়া হয়েছে। সেখানেই রাখা হচ্ছে দুর্গতদের। আপাতত দুটি কন্ট্রোলরুম খোলা হয়েছে আরামবাগ ও পুরশুড়ায়। নজরদারির দায়িত্বে রয়েছেন খোদ জেলাশাসক, জেলা সভাধিপতি।

publive-image
খানাকুলের জলমগ্ন এলাকা পরিদর্শনে জেলা পরিষদের সভাধিপতি। ছবি: উত্তম দত্ত

অন্যদিকে, গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে ফের জল জমে যায় অণ্ডালের বিস্তীর্ণ এলাকায়। জলমগ্ন হয়ে পড়ে ইস্পাতনগরী দুর্গাপুরেরও বেশ কিছু এলাকা। শ'য়ে-শ'য়ে পরিবার জলবন্দি। এলাকায় ত্রাণ শিবির চালু প্রশাসনের। দফায়-দফায় বৃষ্টিতে শিল্পশহর আসানসোলেও জারি জল-যন্ত্রণা। নীচু এলাকাগুলিতে জল জমে দুর্ভোগ বাড়ে বাসিন্দাদের। টানা বৃষ্টির জেরে জল ছাড়ার পরিমাণ বাড়িয়েছে দুর্গাপুর ব্যারেজ। তাতেই আশঙ্কার মেঘ আরও গাঢ় হয়েছে। নতুন করে বৃষ্টি শুরু হলে পূর্ব বর্ধমান, হুগলি-সহ বাঁকুড়ার বিস্তীর্ণ অংশ প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

Advertisment
publive-image
আসানসোলে জলবন্দি বৃদ্ধাকে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ত্রাণ শিবিরে। ছবি: অনির্বাণ কর্মকার

অন্যদিকে, গত কয়েকদিনের বৃষ্টির জেরে জল বেড়েছে অজয় নদে। অজয়ের জল ঢুকে পড়েছে পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রামের ভেদিয়া অঞ্চলে। জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার বিকেল থেকেই অজয় নদের জল বাড়তে শুরু করে। রাতে ভেদিয়ার সাঁতলা গ্রামের অজয় নদের বাঁধে ফাটল দেখা দেয়। দুর্বল হতেই জলের তোড়ে আচমকা ভেঙে পড়ে যায় এলাকার বাঁধ। হু হু করে অজয় নদের জল ঢুকে সাঁতলা-সহ পার্শ্ববর্তী বেশ কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বাঁধ মেরামতির জোরদার চেষ্টা চালাচ্ছে প্রশাসন। নদীর নোনা জল ঢুকে পড়েছে এলাকার বিঘের পর বিঘে চাষের জমিতেও। যা নিয়ে ঘোর দুশ্চিন্তায় কৃষকরা।

publive-image
খানাকুলের জলমগ্ন এলাকা। ছবি: উত্তম দত্ত

আরও পড়ুন- বাবার অসুখেই স্বপ্ন ভেঙে চুরমার, সংসার চালাতে ‘মাঠের ঘোঁড়া’ আজ চপ-বিক্রেতা

অন্যদিকে, বৃষ্টির জেরে অণ্ডালের উত্তর বাজার সংলগ্ন খুদিরাম পল্লি এবং অণ্ডাল হাই স্কুল পাড়ার একাংশে জল জমে যায়। এলাকার শ'চারেক পরিবার জলবন্দি হয়ে পড়ে। টানা বৃষ্টির জেরে দুর্গাপুর কাদারোড রিভার্স সাইড এলাকাতেও জল জমে যায়। জলবন্দি হয়ে পড়ে শতাধিক পরিবার। এলাকায় ত্রাণ শিবির চালু করেছে প্রশাসন। টানা বৃষ্টির জেরে তামলা নালার জল ঢুকেই বিপত্তি বাড়ে ইস্পাতনগরীতে। গত কয়েকদিনের ভারী বৃষ্টির জেরে দুর্গাপুরের ৪১ নম্বর ওয়ার্ডের দামোদর কলোনিতে আচমকা ধ্বস নামে। বৃহস্পতিবার এই ধ্বস নিয়ে প্রবল আতঙ্ক তৈরি হয় গোটা এলাকায়।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

Flood Like Situation Durgapur Barrage Hooghly Heavy Rainfall