গন্তব্যের দিকেই ছুটছিল আপ তিরুঅনন্তপুরম-শিলচর আরোনাই এক্সপ্রেস। তবে সেই ট্রেনে থাকা এক প্রসূতির তখন খুবই সঙ্গীন পরিস্থিতি। তা জানতে পেরেই বর্ধমান স্টেশনে ট্রেনটিকে দাঁড় করিয়ে দেন চালক। ট্রেনটি দাঁড়াতেই রেলের চিকিৎসক ও নার্সরা এস ১২ নম্বর কামরায় পৌঁছে যান। তাঁদেরই সহাতায় ট্রেনের কামরায় পুত্র সন্তানের জন্ম দেন টেরেসা হাঁসদা।
ট্রেনের কামরায় স্ত্রীর সন্তান প্রসব প্রক্রিয়া নির্বিঘ্নে হওয়ায় রেল কর্তৃপক্ষকে সাধুবাদ জানিয়েছেন স্বামী রুবিন মাণ্ডি। পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র জানিয়েছেন, প্রসূতির সন্তান প্রসবের বিষয়টি নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করতে রেলের পক্ষ থেকেও সব রকম ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল।
পেশায় শ্রমিক রুবিন মাণ্ডি জানান, তাঁর বাড়ি উত্তর দিনাজপুরের কানাইয়াবাড়ির মারিয়া গ্রামে। শ্রমিকের কাজে মাস ছ'য়েক আগে তিনি ও তাঁর স্ত্রী টেরেসা এক শিশু পুত্রকে সঙ্গে নিয়ে কেরলে গিয়েছিলেন। আর এক শিশু পুত্র বাড়িতে রয়েছে। কেরলে তাঁরা রাজমিস্ত্রীর জোগাড়ের কাজ করতেন বলে রুবিন জানান।
আরও পড়ুন- না জানিয়েই বড় পদক্ষেপ রাজ্যপালের, ক্ষুব্ধ ব্রাত্য বসু, আইনি পথে হাঁটছে রাজ্য
পাশাপাশি তিনি আরও জানান, স্ত্রী গর্ভবতী হওয়ায় গত মাসের তৃতীয় সপ্তাহে তাঁরা বাড়ি ফেরার জন্য নির্দিষ্ট ট্রেনে টিকিট পাওয়ার অনেক চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু টিকিট জোগাড় করতে পারেননি। তাই বাধ্য হয়ে তাঁরা ১২৫০৭ আপ তিরুঅনন্তপুরম -শিলচর আরোনাই এক্সপ্রেসের টিকিট কাটেন।
তাঁদের নামার কথা কিষাণগঞ্জ স্টেশনে। কিন্তু গন্তব্যে পৌঁছনোর আগে ট্রেনের মধ্যেই তাঁর স্ত্রীর প্রসব যন্ত্রনা শুরু হয়ে যায় । সেই খবর রেল কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছোতেই তাঁরাও তৎপরতা শুরু করেন। বর্ধমান স্টেশনে ট্রেন দাঁড় করিয়ে রেখে রেলের চিকিৎসক ও নার্সরা ট্রেনের কামরাতেই নির্বিঘ্নে তাঁর স্ত্রীর সন্তান প্রসব করান।
এমন সুষ্ঠুভাবে ট্রেনের কামরায় স্ত্রীর সন্তান প্রসব প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়ে যাবে তা কল্পনাও করতে পারেননি রুবিন মাণ্ডি। শিশু সন্তানকে কোলে নিয়ে টেরেসা হাঁসদাও রেলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।