নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে ধৃত পার্থ 'বান্ধবী' অর্পিতা মুখোপাধ্যায় এখন সকলের চেনা। এক বছরের আগে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গেই গ্রেফতার করা হয়েছিল অভিনেত্রী অর্পিতাকেও। তারপর 'অপা' নিয়ে নানা চর্চা হয়েছে। সেই সময়ই সামনে এসেছিলেন অর্পিতার মা মিনতি মুখোপাধ্যায়। সম্পর্কে সত্তরোর্ধ্বা এই বৃদ্ধা অর্পিতার মা। মেয়ের গ্রেফতারির এক বছরে ফের মুখ খুললেন মিনতিদেবী। মেয়ের নানা কাজ, ও পার্থর সঙ্গে 'ঘনিষ্ঠ'তা নিয়ে দিলেন সোজাসাপটা জবাব।
বারবরই বেলঘরিয়ার দেওয়ানপাড়ার বাড়িতেই থাকেন মিনতি মুখোপাধ্যায়। সেই বাড়িতেই লোহার সিঁড়ি দিয়ে উঠে যে ঘর সেখানেই বসেই নানা প্রশ্নের উত্তর দিলেন মিনতি। তাঁর কথাতেই স্পষ্ট যে, এখনও স্বপ্ন দেখেন তিনি। বললেন, 'ছাড়া পেলে তো মেয়ে এই বাড়িতেই উঠবে।' বাস্তবে অবশ্য বলছে, অর্পিতার ডায়মন্ড সিটির ফ্ল্যাট, কামারহাটির ক্লাব টাউনের ফ্ল্যাট সবই ইডির হেফাজতে। তাই জামিন হলে বেলঘোরিয়ার বাড়িতেই উঠতে হতে পারে তাঁকে।
অর্পিতা কী তদন্তে সহায়তা করছেন? জামিন পাবেন? ইডির নজরে তো দুর্নীতির 'কিং' পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও অর্পিতা 'ডিফ্যাক্টো রানি'। মিনতির প্রশ্ন, 'কিছু জানলে সবই নিশ্চই বলেছে। ও তো আর চাকরি কেনাবেচা করেনি। তা হলে জামিন পাবে না কেন?'
বয়সের ভারে বাড়িতেই থাকেন মিনতি দেবী। ওজন বিপদসীমার অনেকটাই উপরে। এক চোখে অস্ত্রোপচার হয়েছে। গ্লুকোমার চিকিৎসা চলছে। মেয়ের সঙ্গে তাঁর কথা হয়? মিনতির জবাব, 'মাঝেমাঝে ভিডিয়োকল-এ কথা হয়। জেল থেকেই ফোনর মাধ্যমে সাক্ষাৎ করিয়ে দেওয়া হয়। মিনিট খানেক তখন কথা হয়।'
সে সময় বৃদ্ধা কী কিছু পরামর্শ দেন মেয়েকে? মিনতির বলেন, 'ও কি বাচ্চা নাকি? ও যা করার বুঝেই করবে।'
পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে মেয়ের 'ঘনিষ্ঠ'তা নিয়ে নানা কথা। এসবের কিছু জানতেনই না মিনতি? তাঁর কথায়, 'ভৈরব গাঙ্গুলি কলেজে এক বার একটা অনুষ্ঠানে এসেছিলেন উনি (পার্থ)। সেই সময়ে বাড়ির সামনে এসেছিলেন। ঘরে ঢোকেননি।'
কখনও বিয়ের জন্য অর্পিতা বলেননি মিনতি? বৃদ্ধার দাবি, 'মা হয়ে কি আর বলিনি। কিন্তু পুরুষমানুষ সম্পর্কে ওর বোধহয় অন্য রকম ধারণা আছে। শুধু আমার মেয়ে কেন! অনেক মেয়েই আছে, যারা অনেক ছেলের সঙ্গে ঘোরে। তবে ওর তো এখনও বিয়ে হতে পারে।'
গ্রেফতারির পর দীর্ঘ ১০ মাস জামিনের আবেদন করেননি অর্পিতা মুখোপাধ্যায়। শেষ পর্যন্ত গত মে মাসে জামিনের আবেদন করেছেন তিনি। সেই মামলা চলছে। এসবের মধ্যেও মেয়ে-কে নিয়ে আশা ছাড়েননি মা।