'এই সমাবেশের পরেই হয়তো কাউকে গ্রেফতার করবে। তবে গ্রেফতার করেও তৃণমূলকে দমিয়ে রাখা যাবে না।' দলের ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিসের সভায় বিজেপিকে অলআউট আক্রমণে সর্বভারতীয় তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
বিরোধীদের আক্রমণে ঝাঁঝ বাড়াচ্ছে তৃণমূল। একের এক দুর্নীতিতে শাসকদলের নেতা-মন্ত্রীদের নাম জড়াচ্ছে, তারই সুযোগ নিয়ে তৃণমূলকে তুলোধনা করে সুর চড়াচ্ছে বিরোধীরা। রাজ্যজুড়ে শাসকদলের নেতা-মন্ত্রীদের দুষে ময়দানে বাম-বিজেপি-কংগ্রেস। উঠছে 'চোর ধরো-জেল ভরো' স্লোগান। বিরোধীদের উপর্যুপরি এই টিপ্পনিতে এবার পাল্টা 'হুমকি-হুঁশিয়ারি'র পথ নিয়েছে জোড়াফুল। গত কয়েকদিন ধরেই রাজ্যজুড়ে তৃণমূলের ছোট-বড় নেতাদের মুখে বিরোধীদের কড়া 'জবাব' দেওয়ার পাঠ।
এবার সেই একই মেজাজ ধরা পড়ল অভিষেকের গলাতেও। ষড়যন্ত্র করে তৃণমূলকে ফাঁসানোর ছক বিজেপির, অভিযোগ তৃণমূলের সেকেন্ড-ইন-কম্যান্ডের। এর আগে একুশে জুলাইয়ের সভার পরের দিনই দলের তৎকালীন মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে হানা দেয় ইডি। দিনভর জিজ্ঞাসাবাদের পর শেষমেশ এসএসসি দুর্নীতিতে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করে ইডি। যদিও পার্থর গ্রেফতারিতে বিজেপির ষড়যন্ত্র রয়েছে বলে মনে করেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
একুশে জুলাইয়ের সভার পর যেমন পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করা হয়েছিল, তেমনই তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসের সভার পর দলের আরও কাউকে গ্রেফার করা হতে পারে বলে আশঙ্কা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। এদিন টিএমসিপি-র প্রতিষ্ঠা দিবসের সভা-মঞ্চ থেকে অভিষেক বলেন, ''একুশের সমাবেশের পরেই পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করে। আজ এই সভার চার-পাঁচদিন পর কিছু না কিছু করবে। এই সমাবেশের পরেও কাউকে গ্রেফতার করবে। কী ভাবছে দু'জনকে অ্যারেস্ট করেই তৃণমূল কংগ্রেস শেষ? গ্রেফতার করেও তৃণমূলকে দমাতে পারবে না।''
আরও পড়ুন- ‘বদনাম করলেই জিভ টেনে ছিঁড়ে নেব’, হুঙ্কার মমতার
এছাড়াও এদিন অভিষেকের বক্তৃতায় কয়লা, গরু পাচারের মতো বিষয় উঠে এসেছে। যদিও গরু, কয়লা পাচারে কেন্দ্রকেই দুষেছেন তৃণমূল নেতা। এপ্রসঙ্গে অভিষেক বলেন, ''বিএসএফের নাকের ডগা দিয়ে গরু, কয়লা চুরি হয়। আর তৃণমূল নেতাদের দিকে আঙুল তোলে। পাচারের টাকা দিল্লি পৌঁছে যাচ্ছে।''
এরই পাশাপাশি এদিন অভিষেকের রোষের মুখে পড়েছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী থেকে শুরু করে দিলীপ ঘোষ, সুকান্ত মজুমদারেরা। বিজেপির 'ত্রয়ী'-কে তুলোধনা সর্বভারতীয় তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদকের। বঙ্গ বিজেপির নেতাদের কথা শুনেই কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যের পাওনা টাকা আটকে দিচ্ছে বলেও অভিযোগ অভিষেকের।
তিনি বলেন, ''রাজ্যের বকেয়া টাকা বঙ্গ বিজেপিই বন্ধ করে দিয়েছে। দিলীপ ঘোষ, সুকান্ত মজুমদারেরা বলছেন আর গদ্দার শুভেন্দু অধিকারী বলছেন। আমি নাম নিয়ে বলছি বেইমান, গদ্দার, ঘুষখোর শুভেন্দু অধিকারী। তোমার বুকের পাটা থাকলে আমার নামে মামলা করো। আমি নাম নিয়ে বলছি দিলীপ ঘোষ গুণ্ডা। নাম নিয়ে বলছি সুকান্ত মজুমদার গদ্দার।''