বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা, তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার নিরপেক্ষতা নিয়ে আগেই মুখ খুলেছিলেন তৃণমূলের রাজ্য মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। কেন বিরোধী দলনেতাকে রক্ষাকবচ দেওয়া হল তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন ওই তৃণমূল নেতা। এবার বেনজিরভাবে সেই প্রশ্নই শোনা গেল তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখে।
Advertisment
শুক্রবার এসএসকেএম হাসপাতালে গিয়েছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। পঞ্চায়েত ভোটে নন্দীগ্রামে আহত তৃণমূল কর্মীদের দেখতে এদিন এসএসকেএমে যান ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ। সেখান থেকে বেরিয়ে বিস্ফোরক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। আক্রমণ শানান কলকাতা হাইকোর্টের এক বিচাপতিকে। অভিষেক বলেন, 'যাদের জেলে থাকার কথা, তাদেরকে সুরক্ষা দিয়ে পুলিশের হাত, পা বেঁধে দেওয়া হচ্ছে। কলকাতা হাইকোর্টের একজন বিচারপতি যেভাবে একটা রাজনৈতিক দলকে মদত দিচ্ছেন, তা অত্যন্ত বেদনাদায়ক। স্বাধীনতার পর এমন ঘটনা ঘটেনি।'
এরপরই সরাসরি বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার নাম বলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। অভিষেক বলেন, 'বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা এমন নির্দেশ দিচ্ছেন যে, শুভেন্দু আগামীদিনে কোনও অপকর্ম করলেও পুলিশ তার বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করতে পারবে না। শুভেন্দু একা নন, পবিত্র কর, মেঘনাথ পাল, অশোক করণ- নন্দীগ্রামে অশান্তি সৃষ্টিকারী প্রত্যেকের আগাম জামিনের সুরক্ষা দিয়ে রেখেছেন এই বিচারপতি।'
Advertisment
বিজেপির সঙ্গে বিচারপতি মান্থার যোগাযোগ নিয়ে প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, 'বিজেপির প্রতি এই বিচারপতির কি বাধ্যবাধকতা? কেন বেছে বেছে বিজেপির নেতাদের সুরক্ষার ব্যবস্থা করছেন তিনি?'
পঞ্চায়েত ভোটে নন্দীগ্রামে তাঁদের কর্মীদের উপর বিজেপি আক্রমণ চালিয়েছেন বলে অভিযোগ তৃণমূলের। ওই অবস্থার জন্য বিচারপতি মান্থাকে দায়ী করেছেন অভিষেক। চাঁচাছোলা ভাষায় বলেছেন, 'আমার বিরুদ্ধেও তো ইডি, সিবিআই লাগিয়ে রেখেছে। আমি প্রোটেকশন চাইলে দেবেন? দেবেন না! বিজেপি নেতারা না চাইতেই পেয়ে যাচ্ছে! এসএসকেএমে ভর্তি থাকা নন্দীগ্রামের ১৪ জন আক্রান্তের এমন পরিস্থিতির জন্যও এই বিচারপতি দায়ী।'
এর আগে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে 'টার্গেট' করলেও এবার সরাসরি বিচারপতি মান্থাকে অভিষেকের আক্রমণ অভিনব। এর জন্যে যদি তাঁকে শাস্তির মুখে পড়তে হয়? এ প্রসঙ্গে অভিষেকের জবাব, 'আমি সাদাকে সাদা, কালোকে কালো বলব। আজ বলতে বাধ্য হলাম। কারণ, শুধুমাত্র একজন বিচারপতির জন্য সমগ্র বিচারব্যবস্থা কলুষিত হচ্ছে। সত্যি কথা বলার জন্য আমার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা তিনি নিতেই পারেন।'