তাঁকে উপমুখ্যমন্ত্রী হওয়ার প্রস্তাব পর্যন্ত দেওয়া হয়েছিল। তারপরও তিনি তৃণমূল ছেড়ে এসেছেন। শুভেন্দু অধিকারীর এই মন্তব্য নিয়ে বৃহস্পতিবার তীব্র কটাক্ষ করলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। গত ৫ জুলাই এগরার সভা থেকে শুভেন্দু অধিকারী দাবি করেছিলেন যে তৃণমূল কংগ্রেস তাঁকে উপমুখ্যমন্ত্রী হওয়ারও প্রস্তাব দিয়েছিল। ২০২০ সালের ১ ডিসেম্বর তাঁকে এই প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল বলেই দাবি করেছিলেন শুভেন্দু।
এগরার সভায় শুভেন্দু বলেছিলেন, 'তৃণমূল কংগ্রেস আমাকে উপমুখ্যমন্ত্রী হওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল। তৃণমূল আমার কোনও পদ কাড়েনি। মন্ত্রিত্ব, চেয়ারম্যানশিপ সব ছিল। তা-ও ছেড়ে এসেছি। আর, পারছিলাম না।' সভায় শুভেন্দু বোঝাতে চেষ্টা করেছিলেন যে তৃণমূল কংগ্রেস এত দুর্নীতিগ্রস্ত দল যে সেখানে তিনি আর কিছুতেই থাকতে পারছিলেন না। তার প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার পালটা কটাক্ষ করলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। নারদার প্রকাশিত ফুটেজে শুভেন্দু অধিকারীকে কাগজে মুড়ে পাঁচ লক্ষ টাকা নিতে দেখা গিয়েছিল। অতীতের মত সেই প্রসঙ্গ টেনে এনে বৃহস্পতিবার অভিষেক বলেন, 'শুভেন্দু ৫ লক্ষ টাকায় বিক্রি হন। তাঁর কথার কোনও প্রতিক্রিয়া জানাব না। নারদা থেকে সারদা, যত কেলেঙ্কারি রয়েছে, বাংলার সেই সব কেলেঙ্কারিতেই শুভেন্দু অধিকারী যুক্ত।'
শুভেন্দু অধিকারীর পাশাপাশি রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে নিয়েও কটাক্ষ করেছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। বাংলার পঞ্চায়েত ভোটে লাগামছাড়া হিংসার অভিযোগ করে বৃহস্পতিবার গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। তিনি বলেছেন, 'চিত্ত যেথা ভয়শূন্যর বাংলায় এসে আমি আনন্দিত হয়েছি। কিন্তু, এত হিংসা দেখে আমার সেই আনন্দ উবে গিয়েছে। আমার মোহভঙ্গ হয়েছে। বাংলার চিত্ত এখন ভয়ে পূর্ণ। আর, মাথা হেঁট হয়ে আছে। গুরুদেব (রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর) ভূমিতে জীবন নিয়ে খেলা হচ্ছে। আমি শিশুদের কান্না শুনেছি। মানুষের হতাশার কথা শুনেছি। মানুষের রক্ত নিয়ে হোলি খেলা বন্ধ হোক। রাজ্য নির্বাচন কমিশনের হাতে রক্ত লেগে আছে।'
আরও পড়ুন- নিজের গড়েই ‘চোর-চোর’ শুনলেন শুভেন্দু, নন্দীগ্রামে চলন্ত গাড়ি থেকেই রণংদেহী বিরোধী দলনেতা
বৃহস্পতিবার রাজ্যপালের সেই সব বক্তব্যের কঠোর নিন্দা করেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেছেন, 'করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনা তো ঘটেছে। এই বাংলার মানুষ মারা গিয়েছেন। কারও বাড়ি রাজ্যপাল গিয়েছেন কখনও? উনি বলছেন, রাজ্য নির্বাচন কমিশনের হাতে রক্ত লেগে আছে। মণিপুরে এতবড় জাতিগত দাঙ্গা হল। সেখানে তাহলে কার হাতে রক্ত লেগে আছে। উনি আসলে দিল্লির (কেন্দ্রীয় সরকারের) আদেশ পালন করছেন। তাদের আদেশেই যা কিছু, বলছেন।'