প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের আবেদনের ভিত্তিতে শুক্রবার রায় শোনাল কলকাতা হাইকোর্ট। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের আর্জিতে সাড়া না দিলেও তাঁর জন্য স্বস্তির খবরও এদিন শুনিয়েছেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ।
কী জানাল হাইকোর্ট?
কলকাতা হাইকোর্টে এদিন স্বস্তিই মিলেছে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ স্পষ্ট করে তাঁর রায়ে জানিয়েছেন, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে এখনই গ্রেফতারির মতো কোনও কড়া পদক্ষেপ করা যাবে না। ইডির আইনজীবীর উদ্দেশ্যে বিচারপতি জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে প্রমাণ হিসেবে শুধুমাত্র সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের বয়ানের কিছু তথ্য জমা দিয়েছে ইডি। সেই প্রমাণ পর্যাপ্ত নয় বলেই মনে করে আদালত। আরও গ্রহণযোগ্য কিছু তথ্য ইডি জমা দিতে পারেনি বলে মনে করে আদালত।
উল্লেখ্য, প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় ইডি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে ইসিআইআর দায়ের করেছিল। সেই ইসিআইআর খারিজের আবেদন জানিয়েছিলেন তৃণমূল সাংসদ। গ্রেফতারির আশঙ্কা করেই ইসিআইআর খারিজের আবেদন জানিয়েছিলেন তৃণমূলের সেকেন্ড ইন কম্যান্ড। যদিও বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ তৃণমূল নেতার সেই আবেদনে সাড়া দেননি। এই মুহূর্তে ইডির দায়ের করা ইসিআইআর খারিজ করা হবে না বলে জানিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন- রাতে হানা পুলিশের, খাঁচা খুলতেই এরা কারা বেরিয়ে এল? দেখেই চোখ ছানাবড়া!
তবে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে আইনি রক্ষাকবচ দিয়েছে আদালত। ইসিআইআর খারিজ না হলেও তদন্তের নামে ডেকে পাঠিয়ে তাঁকে গ্রেফতারির মতো কড়া পদক্ষেপ করা যাবে না বলে জানিয়েছেন বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ।
এদিকে, হাইকোর্টে ইডি জানিয়েছে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় যে গ্রেফতারির আশঙ্কা করছেন তা অমূলক। রাজনৈতিক কারণে নয়, তদন্তের স্বার্থেই তাঁকে তলব করা হয়েছে। নিয়োগ দুর্নীতি সম্পর্কে কিছু তথ্য পেতেই তাঁকে তলব করা হয়। যদিও অভিষেকের আইনজীবীর পাল্টা বক্তব্য ছিল, ইডির আচরণ বদলে যেতেই পারে। মামলার সঙ্গে যোগ না থাকলেও অভিষেককে বারবার ডেকে পাঠানো হচ্ছে। সেই কারণেই ইসিআইআর খারিজের আবেদন জানানো হয়।
আরও পড়ুন- ভারতে ইলিশ পাঠানো বন্ধ করছে বাংলাদেশ, পুজোর আগেই বন্ধ রফতানি, কেন?
এদিন আদালতের এই রায় প্রসঙ্গে সংবাদমাধ্যমে বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা বলেন, "যদি আদালত ইসিআইআর খারিজ করে দিত তাহলে বিষয়টা গুরুত্বহীন হয়ে যেত। তার মানে বিষয়বস্তুকে আদালত গুরুত্ব দিয়েছে। আপাপত তাঁকে রিলিফ দিয়েছে। অভিষেক ব্যানার্জি রিলিফ নিয়েই তো ঘুরে বেড়াচ্ছেন। একটা সময় রিলিফ শেষ হয়ে আসবে, তখন যা হওয়ার তাই হবে। আদালত বলেছে আরও তথ্য জোগাড় করা দরকার। এজেন্সি তাহলে সেটাই করুক।"
আরও পড়ুন- এবার ‘খেলা’ ঘোরাবে বর্ষা? আরও তুমুল বৃষ্টির পূর্বাভাস! তালিকায় কোন কোন জেলা?
অন্যদিকে বাম নেতা সুজন চক্রবর্তী সংবাদমাধ্যমে বলেন, "বিচারপতি বলেছেন এখনই গ্রেফতার কর যাবে না। রক্ষাকবচ চাইতে হচ্ছে কেন? অপরাধী না হলে কাউকে এতবার রক্ষাকবচ চাইতে হয় না। ভয়ে ভয়ে আছেন। শেষমেশ রক্ষাকবচ পেলেও অপরাধ কী তাতে কমে গেল? অপরাধী বলেই তো হাইকোর্ট, সুপ্রিম কোর্টে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। রক্ষাকবচ নিয়ে নিয়ে চলতে হবে। অপরাধীর অপরাধ ধরা পড়ে গেলে তাঁকে রক্ষাকচ নিয়েই চলতে হবে।"