Abhishek Banerjee Governor CV Ananda Bose Meet: সোমবার বিকেলে দিল্লির ঘটনাকে 'গণতন্ত্রের হত্যা' বলে দাবি করলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এ দিন রাতে রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করেন অভিষেক সহ তৃণমূলের মন্ত্রী, সাংসদ, বিধায়কের ১০ প্রতিনিধি দল। সেখানেই তৃণমূল 'সেনাপতি' বলেন, 'মহিলা সাংসদদের যেভাবে টেনে হিঁচড়ে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, তাতে আমি মনে করি দিনের আলোয় গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়েছে। কমিশন গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে। আজ গণতন্ত্রের কালো দিন। দোলা সেনের পায়ে দু সপ্তাহ আগে অপারেশন হয়েছে। তিন বারের সাংসদ ডেরেক ও ব্রায়েনকে চ্যাংদোলা করে নিয়ে গিয়েছে দিল্লি পুলিশ। তাঁরা বাংলার মানুষের হয়ে কথা বলতে গিয়েছিলেন।'
এরপরই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তিওয়ারির সঙ্গে গোপনে এনআইএ-র এসপি বৈঠকের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, 'এসপি এনআইএ'র বিরুদ্ধে আমাদের অভিযোগ ছিল। জিতেন্দ্র তিওয়ারির সঙ্গে গোপনে বৈঠক হয়েছে এসপি এনআইএ-র। আপনি তো অফিসে দেখা করবেন, অ্যাপয়েন্টমেন্ট নেবেন, বাড়িতে কেন? আমরা সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ করব। সেখানে দেখা যাচ্ছে, এসপি'র ঘরে জিতেন্দ্রকে একজন নিয়ে যাচ্ছেন। বেরনোর সময় নীচ পর্যন্ত এগিয়ে দিচ্ছেন। কেন জিতেন্দ্র তিওয়ারির সঙ্গে মিটিংয়ের পরে নোটিস পাঠাবে এনআইএ?' তৃণণূলের 'সেকেন্ড-ইন-কমান্ডে'র সাফ দাবি, 'বিজেপির বিরুদ্ধে নয়, নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযোগ।'
কেন এনআইএ-র ডিরেক্টর বদল হবে না? কেন কমিশন কোনও ব্যবস্থা নেবে না? প্রশ্ন তোলেন অভিষেক। তাঁর দাবি, এনআইএ এসপি-র বাড়ির ভিজিটার্স বুকের কপি সহ সব তথ্য কমিশনে জমা দেওয়া হয়েছে। তারপরও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
এই প্রসঙ্গেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হুঁশিয়ারি, '২০২১-এর থেকেও খারাপ পরিণতি হবে বিজেপির। আমরা ফুটেজ প্রকাশ করব। হাইকোর্টে, সুপ্রিম কোর্টে ফুটেজ জমা দেব। আমার বিরুদ্ধে মামলা করতে পারলে কর। ৫২ মিনিটের হাই কোয়ালিটি ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, হাতে প্যাকেট নিয়ে ঢুকেছে আর খালি হাতে বেরোচ্ছেন জিতেন্দ্র তিওয়ারি। আমাদের হাতে তথ্য রয়েছে।'
অভিষেক জানিয়েছেন, রাজ্যপালকে তাঁর এক্তিয়ারে থেকে পুরোটায় হস্তক্ষেপ করতে অনুরোধ করেছি। রাজ্যপাল তৃণমূল প্রতিনিধিদলকে প্রয়োজনীয় সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন বলে দাবি করেছেন তৃণমূল 'সেনাপতি'।
এ দিন বিকেলে দিল্লির ঘটনার প্রেক্ষিতে রাতেই রাজ্যপাল সিভই আনন্দ বোসের সঙ্গে দেখা করার জন্য সময় চেয়েছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর আর্জি ছিল, তৃণমূলের ১১ জন প্রতিনিধির একটি দল রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করতে চান। রাজভবন সূত্রে খবর, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়দের সোমবার রাত ৯টায় সময় সাক্ষাতের সময় দিয়েছেন রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান। নির্দিষ্ট সময় মেনেই মন্ত্রী শশী পাঁজা, ব্রাত্য বসুদের নিয়ে অভিষেক রাজভবনে পৌঁছে যান।
এ দিনকার দিল্লির ঘটনা নিয়ে সোশাল মিডিয়া পোস্ট করেন তৃণমূলের 'সেনাপতি'। তিনি লেখেন, '২০২৩ সালের অক্টোবরে দিল্লির কৃষি ভবনের ভিতরে গণতন্ত্রের মুখ বন্ধ করা হয়েছিল। সোমবার প্রকাশ্য দিবালোকে গণতন্ত্রের উপর হামলা চালানো হল। প্রতিদিন বাংলা-বিরোধী জমিদারেরা ক্ষমতার জন্য আরও হিংসাত্মক এবং মরিয়া হয়ে উঠছে। বাংলা এর জবাব দেব। বিজেপি তৈরি থাকো।'
কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলির অপব্যবহারের অভিযোগ তুলে সোমবার দিল্লিতে নির্বাচন কমিশনের ফুল বেঞ্চের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিল তৃণমূলের ১০ সদস্যের প্রতিনিধি দল। নির্বাচন কমিশনে চার কেন্দ্রীয় সংস্থা ইডি, সিবিআই, এনআইএ এবং আয়কর দফতরের প্রধানদের সরিয়ে দেওয়ারও দাবি ছিল তাঁদের। সেই সাক্ষাতের পরই তাঁরা কমিশনের দফতরের বাইরে ধর্নায় বসে। ২৪ ঘণ্টা সেই ধর্না হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ধর্না শুরুর কিছুক্ষণের মধ্যে তাঁদের আটক করে প্রিজন ভ্যানে তোলে দিল্লি পুলিশ। দেখা যায়, ডেরেক ও ব্রায়েনকে টেনে হিঁচড়ে পুলিশ প্রিজন ভ্যানে তোলে।
যা নিয়েই সরব তৃণমূল কংগ্রেস।
আরও পড়ুন- Shantanu Thakur: চরম বিপদে সাংসদ শান্তনু! মতুয়াদের মন্দির উড়িয়ে দেওয়া-প্রাণনাশের হুমকি দিল কারা?